দুর্গাপুর ব্র্যাঞ্চ ক্যানাল। নিজস্ব চিত্র
এ বারও বোরো চাষের জন্য সেচের জল মিলবে না কাঁকসার অধিকাংশ এলাকায়। কাঁকসার দুর্গাপুর ব্র্যাঞ্চ ক্যানাল ও পানাগড় ব্র্যাঞ্চ ক্যানাল সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে। এর ফলে কাঁকসার আমলাজোড়া পঞ্চায়েত ছাড়া অন্য পঞ্চায়েত এলাকায় জল মিলবে না, জানা গিয়েছে সেচ দফতর সূত্রে। দফতর সূত্রে দাবি, এই দু’টি সেচখাল সংস্কারের কাজ চলছে। সে জন্য গত বারের মতো এবারও বোরো চাষে জল দেওয়া সম্ভব হবে না। কৃষি দফতরের আশঙ্কা, এর ফলে কাঁকসার বোরো ধানের এলাকা অনেকটাই কমে যাবে।
পশ্চিম বর্ধমান জেলার সেচযোগ্য জমির পরিমাণ বেশি রয়েছে কাঁকসা ব্লকে। সেচ-নির্ভর বোরো ধানের চাষও হয় কাঁকসা ব্লকেই। মূলত ডিভিসি-র সেচখালের মাধ্যমে, দুর্গাপুর ও পানাগড় ব্র্যাঞ্চ ক্যানাল থেকে এই এলাকায় সেচের জল মেলে। তা ছাড়া সাবমার্সিবল, নদী সেচ প্রকল্পও রয়েছে ব্লকে। কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্লকে ডিভিসি-র সেচ খাল থেকে প্রায় সাড়ে তিন হাজার হেক্টর জমিতে জল পাওয়া যায়। আমন ধান চাষে প্রতিটি সেচখালে জল মিললেও, বোরো ধানের সময় প্রতিটি সেচখালে জল মেলে না। গত বছরও পানাগড় ব্র্যাঞ্চ ক্যানাল ও দুর্গাপুর ব্র্যাঞ্চ ক্যানালে বোরো চাষে জল মেলেনি। তবে সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, দামোদর মেন ক্যানালে বোরোর জল মিলবে। ফলে, পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসার আমলাজোড়া পঞ্চায়েত এবং গলসি-সহ পূর্ব বর্ধমানের বিভিন্ন এলাকার চাষিরা উপকৃত হবেন।
এ দিকে, কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর দুর্গাপুর ও পানাগড় ব্র্যাঞ্চ ক্যানালে জল না থাকায় কাঁকসা ব্লকে মাত্র এক হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়। জল পাওয়া গেলে, তা হত, প্রায় ২,৫০০ হেক্টর জমিতে। পাশাপাশি, সেচ দফতরের এসডিও (ব্যারাজ) গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমানে কোন-কোন সেচখালে জল মিলবে এবং কোন-কোন সেচখালে তা পাওয়া যাবে না, সেটা ইতিমধ্যেইজানানো হয়েছে।”
সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর থেকে বিশ্বব্যাঙ্কের টাকায় ওই দু’টি ক্যানালের সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। তা তিন বছরের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। তবে এ বারেও চাষের জন্য জল না পেয়ে হতাশ চাষিরা। তাপস মাজি, দেবদাস মণ্ডল-সহ কয়েক জন চাষির বক্তব্য, “ভেবেছিলাম এ বার সেচের জল পাব। বর্ষায় শোষক পোকার আক্রমণে আমন ধানের চাষ অনেকটাই মার খেয়েছে। ভেবেছিলাম বোরো ধানের চাষ করে ক্ষতি কিছুটা সামলে নেব, তা আর হল না।” এই পরিস্থিতিতে ব্লক কৃষি আধিকারিক (কাঁকসা) অনির্বাণ বিশ্বাসের পরামর্শ, “যে সব জায়গায় সামান্য জলের ব্যবস্থা করা যাবে, সে সব এলাকায় ডালশস্য, যেমন মুসুর, ছোলা চাষ করা যেতে পারে। তৈলবীজের চাষও করতেপারেন চাষিরা।”