বৃষ্টির কারণে ফুলকপি নষ্ট। পূর্বস্থলীর বিশ্বরম্ভায়৷ নিজস্ব চিত্র javedarafin@gmail.com
সদ্য জমি থেকে ওঠা ফুলকপি, বাঁধাকপি, গাজরের চাহিদা থাকে দুর্গাপুজোয়। ভোগের জন্যও নানা আনাজ কিনে নিয়ে যান অনেকে। কিন্তু দুর্যোগের কারণে এ বার আনাজের জোগানে টান থাকবে বলেও মনে করছেন জেলার চাষিরা।
পূর্বস্থলীর দু’টি ব্লকে বহু চাষি এই সময় জলদি আনাজের চাষ করেন। খরচ কিছুটা বেশি হলেও দামও মেলে ভাল। চাষিদের দাবি, মাস দুয়েক আগে থেকে শুরু হয়ে যায় প্রস্তুতি। কিন্ত দিন সাতেক ধরে ঝড়বৃষ্টি চলায় ভালই ক্ষতি হয়েছে চাষে। নিচু জমিগুলিতে জল জমে গিয়েছে। বিশ্বরম্ভা, সিহিপাড়া, ধিতপুর, দুবরাজপুর, দোঘরিয়া, সরডাঙার মতো বহু এলাকাতেই ছোট ছোট ফুলকপি, বাঁধাকপি পচতে শুরু করেছে। চাষিদের দাবি, মেঘ কেটে রোদের দেখা মিললেই জমিতে ছত্রাক ঘটিত রোগের হামলা দেখা দেবে। ফলে বাধ্য হয়েই ছোট ফুলকপি তুলে বিক্রি করে দিচ্ছেন তাঁরাা। গুণগত মান কম হওয়ায় দরও মিলছে কম।
বিশ্বরম্ভা এলাকার ফুলকপি চাষি রণ দাস বলেন, ‘‘পুজোর সময় যে ফুলকপি জমি থেকে তুলে ভাল দরে বিক্রি করার কথা ছিল, তা জমিতে পচে নষ্ট হতে বসেছে। খড়েরাও কিনতে চাইছেন না। যাঁরা কিনছেন, তাঁরা প্রতি কপির দাম দিচ্ছেন সাত থেকে আট টাকা। এতে খুবই লোকসান হচ্ছে।’’ দামপাল এলাকার আনাজ চাষি মন্টুপদ বিশ্বাসও জানান, বিঘে খানেকের বেশি জমিতে গাজর, শাঁকালু, পটলের চাষ করেছিলেন তিনি। বুধবার থেকে নদীর জল ঢুকতে শুরু করেছে চাষের জমিতে। যা পরিস্থিতি সব আনাজ চারা নষ্ট হয়ে যাবে, দাবি তাঁর। চাষিদের দাবি বরবটি, ঝিঙে, বেগুন, ঢেঁড়সের বহু জমিতে জমে রয়েছে জল। গাছের পাতা হলুদ হয়ে শুকিয়ে যাচ্ছে।
পূর্বস্থলী ২ ব্লকের কালেখাঁতলা পাইকারি বাজারের এক আড়ৎদার ক্ষুদিরাম মাহাত বলেন, ‘‘এর আগে গরমে ধসা রোগে বহু ফুলকপি নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। এখন বৃষ্টিতেও আনাদ নষ্ট হচ্ছে। উৎসবে ভাল আনাজ মেলা কঠিন হবে।’’ কালনা ২ ব্লকে প্রচুর শসার চাষ হয়। হিজুলি এলাকার চাষি সুকুমার পালের দাবি, বৃষ্টি এবং বেহুলা নদীর জল জমিতে পৌঁছে যাওয়ায় গাছ ঝিমিয়ে পড়েছে। কমেছে ফলন। লাভ তো দূর, চাষের খরচই উঠবে না, দাবি তাঁর। মহকুমা কৃষি আধিকারিক পার্থ ঘোষের দাবি, ‘‘দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় আনাজ চাষে ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। চাষিদের সতর্ক থাকতে হবে। রোদ উঠলেই জমিতে ছত্রাকনাশক দিতে হবে।’’