এমন দৃশ্যই দেখা যাচ্ছে কাঁকসার কিছু এলাকায়। নিজস্ব চিত্র
আমন ধানের মরসুমে ধান কাটার পরে জমিতে নাড়া ও খড় পড়ানোর দৃশ্য নতুন নয়। এর ফলে, জমি ও পরিবেশের ক্ষতি হয়, এই মর্মে প্রচারও করে কৃষি দফতর। কিন্তু তার পরেও কাঁকসার নানা প্রান্তে একই ছবি ধরা পড়েছে। তা-ও বোরো মরসুমের শেষ দিকে।
কৃষি দফতর সূত্রে জানা যায়, প্রায় দু’হাজার হেক্টর জমিতে এ বার বোরো ধানের চাষ হয়েছে। মূলত সেচ নির্ভর জমিগুলিতেই বোরো চাষ হয়। মে’র মাঝামাঝি সময় থেকে বোরো ধান কাটতে শুরু করেন চাষিরা। এই পরিস্থিতিতে কাঁকসা ব্লকের রাজকুসুম, দোমড়া, ত্রিলোকচন্দ্রপুরের মতো এলাকায় বিভিন্ন জমিতে দেখা গিয়েছে, নাড়া ও খড় পোড়ানোর দৃশ্য।
কিন্তু কেন এমনটা? চাষিরা মূলত তিনটি কারণ সামনে আনছেন। কাঁকসার বিভিন্ন এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চাষিরা জানান, বৃষ্টির জেরে বহু জমিতেই খড় খুব একটা ভাল অবস্থায় নেই। এ ছাড়া ‘কম্বাইনড হার্ভেস্টার’-এ ধান কাটার ফলে খড়ের প্রয়োজন থাকে না। আবার, খড়ের দাম না থাকায় অনেকেই জমি থেকে তা তোলার খরচ বাঁচাতে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছেন।
কিন্তু কৃষি দফতর জানায়, এই কাজের ফলে, বাতাসে কার্বন-ডাই-অক্সাইড ও কার্বন মনোক্সাইড মেশে। চাষের উপকারী পোকা, জীবাণু, অণুখাদ্য পুড়ে নষ্ট হয়ে যায়। জমির উপরি ভাগ আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ সব কারণে জমির উর্বরতা নষ্ট হয়ে যায়। এ ছাড়া গাছের প্রয়োজনীয় নাইট্রোজেন, ফসফরাস, পটাসিয়াম, সালফার গাছের মধ্যেই থাকে। আগুনের ফলে সেগুলি বিষাক্ত গ্যাসে পরিণত হয়ে জমি, গাছ ও পরিবেশের ক্ষতি করে।
যদিও কৃষি দফতরের দাবি, দু’-তিনটি এলাকা বাদে নাড়া ও খড় পোড়ানোর প্রবণতা সে ভাবে দেখা যাচ্ছে না। পাশাপাশি, ব্লকের সহ কৃষি আধিকারিক অনির্বাণ বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমরা বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে চাষিদের সঙ্গে কথা বলছি। কোনও চাষি খড়, নাড়া পোড়ালে তা বন্ধ করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট চাষিদের সচেতনও করা হচ্ছে।’’