দুর্গাপুরের বাসস্ট্যান্ড চত্বরে সোমবার। ছবি: বিশ্বনাথ মশান
দুর্গা পুজোর অন্যতম উপকরণ পদ্মফুল। প্রতি বার শারদ মরসুমে এই ফুলের চাহিদা থাকে তুঙ্গে। কিন্তু এ বছর লাগাতার বৃষ্টিতে সমস্যায় পড়েছেন চাষিরা। তবে, এই পরিস্থিতিতে বাজারে পদ্মের জোগান বেশ কম থাকায় দাম কিছুটা বেশি মিলছে বলে দাবি দুর্গাপুর-সহ নানা এলাকার পদ্মফুল চাষিদের।
দুর্গাপুরের নন্দ মার্কেট মূলত ফুলের বাজার হিসেবেই পরিচিত। পশ্চিম বর্ধমানের পাশাপাশি, পড়শি বীরভূম, বাঁকুড়া থেকে প্রতিদিন বহু ফুল চাষি এখানে ফুল নিয়ে আসেন। এই সময়ে বেশির ভাগ চাষিই নিয়ে আসেন পদ্মের পসরা। ফুল বিক্রেতা এবং চাষিরা জানান, এ বছর ২৫টি সাদা পদ্মের ‘বান্ডিলের’ দাম মিলছে, ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। গত বছর ওই দাম ছিল, ২০০ টাকার মধ্যে। দুর্গাপুরের পদ্মফুল চাষি কালু ঘোষ জানান, বাঁকুড়ার বড়জোড়ায় দু’টি পুকুরে পদ্ম চাষ করছেন। তিনি বলেন, “গত বারের তুলনায় এ বার পদ্মের দাম অনেকটাই বেশি মিলছে। ফলে, কিছুটা হলেও বৃষ্টির জেরে ক্ষতি পুষিয়ে যাচ্ছে।” চাষিরা জানিয়েছেন, গত বছর ১০৮টি সাদা পদ্মফুলের দাম ছিল, ৪০০-৫০০ টাকার মতো। এ বার এখনই তার দাম, ৫৫০ টাকার আশপাশে। চাষিদের আশা, পুজোর সময়ে দাম এক হাজার টাকা পেরিয়ে যেতে পারে। গত বছর ১০৮টি লাল পদ্ম বিক্রি হয়েছে এক হাজার থেকে ১,২০০ টাকার মধ্যে। এ বার তার দাম প্রায় দু’হাজার টাকা।
কেন এই দাম বৃদ্ধি? চাষিরা জানান, লাগাতার বৃষ্টির ফলে বহু পুকুরে জল উপচে পড়েছে। ফলে, পদ্ম গাছের চারা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ফলে, বাজারে জোগান কম রয়েছে। ফলে, চাহিদা বেশি থাকায় দাম ভাল মিলছে। বীরভূমের জয়দেব থেকে দুর্গাপুরে পদ্ম নিয়ে আসেন খোকন বিশ্বাস। তিনি বলেন, “এ বছর জোগান বেশ কম। তাই এখনই বাজারে ভাল দাম মিলছে। পুজোর সময়ে এই বাজারদর থাকলে আমাদের সুবিধা হবে। দেবীপক্ষে মায়ের কাছে প্রার্থনা, পদ্মের দরটা যেন আরও বাড়ে।”
তবে পশ্চিম বর্ধমানে ফুল সংরক্ষণের ব্যবস্থা হলে তাঁরা উপকৃত হবেন বলে চাষিরা জানিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে পশ্চিম বর্ধমান জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি সমীর বিশ্বাস বলেন, “সমস্যার কথা শুনেছি। আমরা দেখছি, কী ভাবে সমস্যা মেটানো যায়।”