পান্নালাল মুদিরায়। নিজস্ব চিত্র।
নিম্নচাপের বৃষ্টিতে আলু চাষে ক্ষতি হওয়ার ধাক্কা সামলাতে না পেরে ফের পূর্ব বর্ধমানের এক চাষি আত্মঘাতী হয়েছেন বলে দাবি করলেন তাঁর পরিজনেরা। কালনা ২ ব্লকের বৈদ্যপুর পঞ্চায়েতের ওসমানপুরের ওই আলু চাষির নাম পান্নালাল মুদিরায় (৫৬)। বৃহস্পতিবার সকালে গোয়ালঘর থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। মৃত চাষির পরিবার এবং প্রতিবেশীদের দাবি, সম্প্রতি দুর্যোগে জমিতে আলু বীজ পচে যাওয়ার পর থেকে তাঁর মানসিক অবস্থা ঠিক ছিল না। সে কারণে তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন। যদিও ময়না-তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার আগে, মৃত্যুর কারণ নিয়ে মুখ খোলেনি পুলিশ। সপ্তাহ দুয়েক আগে কালনা ২ ব্লকের বিরুহা এবং রায়না ১ ব্লকের দেবীবরপুর ও বনতির গ্রামের মোট তিন চাষি চাষে ক্ষতির কারণে আত্মঘাতী হন বলে পরিজনেরা দাবি করেছিলেন।
পান্নালালের ছেলে প্রশান্ত মুদিরায় ভিন্ রাজ্যে শ্রমিকের কাজ করেন। স্ত্রীকে নিয়ে পান্নালাল বাড়িতে থাকতেন। তাঁর স্ত্রী কথা বলার অবস্থায় ছিলেন না। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, এ বার ওই চাষি প্রায় ১০ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছিলেন। তার মধ্যে চার বিঘা জমি চুক্তিতে চাষ করেছিলেন। সমস্ত জমির আলু পচে যাওয়ার পরেও তিনি ফের চাষ শুরু করেছিলেন বলে তাঁদের দাবি।
মৃতের ভাই মোহনলাল মুদিরায়ের দাবি, ‘‘১০ বিঘা জমিতে আলু চাষের খরচ অনেক। মনে হয়, দাদাকে ধার করতে হয়েছিল। আলু চাষে ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় দাদা দুশ্চিন্তায় ছিলেন। বাড়িতেও লোকসানের কথা বার বার বলতেন। মনে হয়, ধাক্কা সামলাতে না পেরে দাদা আত্মঘাতী হয়েছেন।’’ পান্নালালের পড়শি বাপন শেখ বলেন, ‘‘হতাশায় উনি বার বার বলতেন ‘কী খাব’, ‘কী করে চাষ করব’। অনুমান করা যায়, লোকসানের ধাক্কা সামালাতে না পেরেই তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন।’’ কৃষি দফতর সূত্রে খবর, সাম্প্রতিক দুর্যোগে কালনা ২ ব্লকের যে তিনটি পঞ্চায়েত এলাকায় আলু চাষ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তার মধ্যে বৈদ্যপুর পঞ্চায়েত রয়েছে। জেলার এক সহ কৃষি অধিকর্তা পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে কালনা ২ ব্লক কৃষি আধিকারিককে খোঁজ
নিতে বলা হয়েছে।’’