ফাইল চিত্র।
১৯৯৭ সালে তৈরি হয়েছিল রিকশা ভাড়ার তালিকা। তার পরে আর নতুন করে তালিকা তৈরি হয়নি। সঙ্গে যোগ হয়েছে টোটো-র চলাচলও। টোটো বা রিকশা চালকদের ইচ্ছেমতো ভাড়া দাবি করা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কাটোয়াবাসী। কিন্তু তাঁদের এবং চালকদের, উভয় পক্ষেরই অভিযোগ, কাটোয়া পুরসভার ভাড়া তালিকা তৈরি না করাটাই সমস্যার মূল কারণ।
যদিও পুরসভা জানায়, ভাড়া সমস্যা-সহ নানা বিষয়ে আলোচনা করতে রিকশা ও টোটো ইউনিয়ন এবং ট্র্যাফিক পুলিশের সঙ্গে বৈঠক করা হবে দ্রুত। তবে, এই বৈঠকেও আখেরে কোনও লাভ দেখছেন না চালকেরা। কাটোয়া টোটো ইউনিয়নের সম্পাদক শ্যামল মণ্ডলের ক্ষোভ, ‘‘সমাধান সূত্র বৈঠকেই আটকে থাকে। শহরের ছ’জায়গায় টোটো রাখা হয়। আজ পর্যন্ত নির্দিষ্ট রুট বা ভাড়ার তালিকা তৈরি করতে পারেনি পুরসভা।’’
একই রকম ক্ষুব্ধ রিকশা চালকেরাও। তাঁরা জানান, কাটোয়া পুরসভা এলাকায় রিকশা চলে ৭৫৬টি। এ ছাড়া খাজুরডিহি ও গোয়াই পঞ্চায়েত থেকে যথাক্রমে ৩০২টি ও তিনশোটি রিকশা প্রতি দিন শহরে আসে। রিকশা চালকদের অভিযোগ, পুরসভার রিকশা বা টোটো চলাচল নিয়ে নির্দিষ্ট কোনও নীতি না থাকায় আখেরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাঁরাই। কারণ তাঁরা টোটো-র কম ভাড়ার সঙ্গে এঁটে উঠতে পারছেন না। এই পরিস্থিতিতে শহর থেকে ১১টি মোড়ে রিকশা স্ট্যান্ড উঠে গিয়েছে বলেও জানান রিকশা চালকেরা। রিকশা চালক কুদ্দুস শেখ, রাজকুমার চক্রবর্তীদের ক্ষোভ, ‘‘নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও এসটিকেকে রোড ও বর্ধমান-কাটোয়া রাজ্য সড়ক ধরে টোটো ছুটছে। পুলিশ, পুরসভা নজরদারি চালাচ্ছে না বলেই এমনটা হচ্ছে।’’
রিকশা চালকদের আরও অভিযোগ, মালগুদাম মো়ড়ে পুরসভার বিজ্ঞপ্তি রয়েছে, স্ট্যান্ডে ১০টি রিকশা দাঁড়াতে পারবে। এই মুহূর্তে বিজ্ঞপ্তিটি রয়েছে ঠিকই, কিন্তু অবৈধ দোকানদারদের দাপটে স্ট্যান্ড উঠে গিয়েছে। কিন্তু পুরসভা কোনও পদক্ষেপ করেনি। যদিও পুরসভার কর্তাদের দাবি, ওই জায়গাটি রেলের।
পুরসভা জানায়, ১৯৯৭-এ তৎকালীন ১৪টি ওয়ার্ডের জন্য রিকশা ভাড়ার তালিকা তৈরি করা হয়। তাতে ভাড়া ছিল, ন্যূনতম সাড়ে তিন টাকা থেকে সর্বোচ্চ সাত টাকা। তবে এই তালিকা কিলোমিটারের ভিত্তিতে নয়। তার পরে সময়ের সঙ্গে বেড়েছে শহরের বহরও। বদল হয়েছে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি। কিন্তু সঙ্গত রেখে ভাড়া-তালিকা তৈরি হয়নি।
গত বছর মহকুমাশাসকের (কাটোয়া), কাটোয়ার পুরপ্রধান এবং টোটো ও রিকশা ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি বৈঠক হয়। সেখানে শহরে টোটো চালানোর জন্য প্রাথমিক ভাবে ন’টি রুটের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। সেই রুটচার্ট টোটোর গায়ে লেখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ১৯৯৭ সালের ভাড়ার তালিকায় নির্ধারিত রিকশা ভাড়া পাঁচ গুণ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কোনও সিদ্ধান্তই বাস্তবায়িত হয়নি।
যদিও কাটোয়ার পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রিকশার ভাড়া তালিকা দ্রুত ঠিক হবে। অবৈধ টোটো রুখতেও টিন (টেম্পোরারি আইডেন্টিফিকেশন নম্বর) যাচাই চলছে। অবৈধ টোটো চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হওয়ার পরেই টোটো-র রুট ও ভাড়া তালিকা তৈরি সম্ভব হবে।’’
(শেষ)