এই অবস্থায় আটকে রয়েছে বাড়ির কাজ । নিজস্ব চিত্র
আবাস যোজনায় বাড়ি তৈরির কাজ শেষ হয়নি। মাঝেমধ্যেই হচ্ছে ঝড়বৃষ্টি। বিপাকে পড়েছেন ‘সকলের জন্য বাড়ি’ প্রকল্পের গুসকরা শহরের উপভোক্তাদের একাংশ। ওই প্রকল্পে পাকা বাড়ি তৈরির জন্য নিজেদের একচিলতে বাড়ি ভেঙেছিলেন তাঁরা। সেই থেকেই তাঁদের কেউ অন্যের জায়গায় ত্রিপল খাটিয়ে বাস করছেন। কেউ থাকছেন ভাড়াবাড়িতে। তাঁদের অভিযোগ, তিন-চার মাসের মধ্যেই বাড়ি তৈরির কাজ সম্পূর্ণ হবে বলে পুরসভা আশ্বাস দিয়েছিল। কিন্তু তা না হওয়ায় এখন সমস্যায় পড়তে হয়েছে।
গুসকরা শহরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা রুনা বেগম বলেন, “প্রায় দশ মাস আগে বাড়ি ভেঙে পাকা বাড়ি তৈরির কাজ শুরু হয়। কিন্তু ডিসেম্বর মাসের পরে কাজ থমকে যায়। ত্রিপল খাটিয়ে কোনওরকমে থাকতে হচ্ছে। ঝড়ে ত্রিপল উড়িয়ে নিয়ে চলে যাচ্ছে। ত্রিপল ভেদ করে জল ঢুকছে। সমস্যার কথা পুরসভাকে জানিয়েছি। তাঁরা বলেছেন টাকা ঢুকুক, তার পরে কাজ হবে।” ওই পাড়ারই তনুজা শেখ, খাইরুন বিবি-দের দাবি, “প্রায় দশ মাস ধরে ভাড়াবাড়িতে থাকছি। মাসে ১০০০–১৫০০ টাকা ভাড়া দিচ্ছি। বিদ্যুতের বিলও মেটাতে হচ্ছে।’’
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৮-২০১৯ এবং ২০২০-২০২১ অর্থবর্ষে ওই প্রকল্পে শহরে প্রায় ১,১০০টি বাড়ি নির্মাণের অনুমোদন মিলেছিল। গত ৩১ মার্চ পর্যন্ত ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে বরাদ্দ ৩৯৫টি বাড়ির মধ্যে ২৭৫টি বাড়ি তৈরির কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। ২০২০-২০২১ অর্থবর্ষে বরাদ্দ ৭০০টির মধ্যে ১০০টি বাড়ির ছাদ পর্যন্ত ঢালাই হয়েছে। বাকিগুলির কাজ চলছে। পুরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলর সিপিএমের মনোজ সাউয়ের অভিযোগ, “বাড়ি তৈরির প্রকল্পে অনিয়ম হয়েছে। পুরসভা থেকে অলিখিত ভাবে ঠিকাদার লাগিয়ে বাড়ি তৈরি করানো হচ্ছে। প্রত্যেক ঠিকাদার অনেক বাড়ির বরাত নিয়েছেন। ফলে কাজ সময়ে শেষ করতে পারছেন না। এর ফল ভুগতে হচ্ছে গরিব উপভোক্তাদের।”
পুরপ্রধান, তৃণমূলের কুশল মুখোপাধ্যায় বলেন, “পুরসভা থেকে উপভোক্তাদের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো হয়। সম্প্রতি কিছু টাকা পুরসভায় ঢুকেছে। খুব তাড়াতাড়ি তা উপভোক্তাদের অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। আশা করছি বর্ষার আগে সব বাড়ির কাজ সম্পূর্ণ হয়ে যাবে। অনিয়মের অভিযোগ ভিত্তিহীন।”