আলুর জমি পরিচর্যা, কালনার আঙ্গারসনে। ছবি: জাভেদ আরফিন মণ্ডল
গত কয়েকদিন ধরে শীতের আমেজ টের পাওয়া যাচ্ছে জেলায়। তাপমাত্রাও পৌঁছে গিয়েছিল ১২ ডিগ্রির কাছাকাছি। হঠাৎ মেঘলা আকাশ, তাপমাত্রাও বেড়েছে কয়েক ডিগ্রি। এই পরিস্থিতিতে মাঠের ফসল নিয়ে চিন্তিত জেলার চাষিরা। তাঁদের দাবি, আচমকা তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় সদ্য পোঁতা আলু বীজ পচে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এ বছরই সব থেকে বেশি দামে আলু বীজ কিনতে হয়েছে চাষিদের। ভিন্ রাজ্যের ৫০ কেজি আলু বীজের দাম পড়েছে পাঁচ থেকে ছ’হাজার টাকা। অন্য বার যা থাকে দু’হাজার টাকার আশপাশে। চাষিরা জানিয়েছেন, ভাল ঠান্ডা পড়ে যাওয়ায় আলু চাষ জোরকদমে শুরু করে দিয়েছিলেন তাঁরা। কৃষি দফতরের হিসেবে, কালনা, মেমারি, পূর্বস্থলী, জামালপুর-সহ বহু এলাকাতেই অনেক চাষি জমিতে আলু বীজ পোঁতার কাজ শেষ করে ফেলেছেন। কালনার রংপাড়া এলাকার আলু চাষি আনসার আলি শেখ বলেন, ‘‘এ বার চড়া দামে আলু বীজ কিনতে হয়েছে। আচমকা গরম পড়ে যাওয়ায় চিন্তায় রয়েছি। কারণ, তাপমাত্রা বেড়ে গেলে মাটির তলায় থাকা আলু বীজ পচে নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।’’ মেমারির আলু চাষি অরুণ চক্রবর্তীও বলেন, ‘‘চাষের শুরুতে এত খরচ আগে কখনও হয়নি। বীজ গরমে নষ্ট হয়ে গেলে চাষ করা মুশকিল হয়ে পড়বে।’’
কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রি থেকে এক ধাক্কায় ১৭ ডিগ্রির আশপাশে ঘোরাফেরা করছে। মেঘলা আকাশের জন্য আর্দ্রতাও বেশি। শুধু আলু নয়, মাঠে থাকা পাকা আমন ধান নিয়েও বহু চাষি চিন্তিত। মন্তেশ্বরের ধান চাষি নব ঘোষের দাবি, ‘‘নিম্নচাপের জেরে মেঘলা আকাশ থাকছে। বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলে কাদামাখা জমি থেকে ধান তোলা সম্ভব হবে না। আবার ভারী বৃষ্টি হলে ধানের রং নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’’ জেলার অন্যতম সহ কৃষি অধিকর্তা পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘তাপমাত্রা বাড়লে, আলু বীজে ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। আশা করছি, মেঘ কেটে গেলেই ফের ভাল শীত ফিরবে।’’ চাষিদের বারবার মাঠে গিয়ে পরিস্থিতির দিকে নজর রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।