অচেনা নম্বর থেকে ফোন করে ডেবিট কার্ড ব্লক হয়ে গিয়েছে জানিয়ে পিন নম্বর চাওয়া, তারপরে মোবাইলে আসা ‘ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড’টিও জেনে নিয়ে অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়া—কোনওটাই নতুন নয়। এ বার একই রকম প্রতারণার ফাঁদে পা দিলেন কাটোয়ার মুলটি গ্রামের এক বাসিন্দা। ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের মেঝিয়ারি শাখায় দায়ের করা অভিযোগে তাঁর দাবি, দশ হাজার টাকা খোওয়া গিয়েছে।
মুলটির এক মিষ্টির দোকানের কর্মচারী বাণেশ্বর ভদ্রের দাবি, গত রবিবার দুপুর সাড়ে তিনটে নাগাদ একটি অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন পান তিনি। ‘এটিএম অফিস থেকে বলছি’ পরিচয় দিয়ে ফোনের ও পার থেকে জানানো হয়, বাণেশ্বরবাবুর ডেবিট কার্ডটি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কার্ডটি ফের চালু করার জন্য কার্ডের ওপরে লেখা ১৬ অঙ্কের নম্বরটি জানতে চাওয়া হয়। জানতে চাওয়া হয় পিন নম্বরটিও। বাণেশ্বরবাবু বলেন, ‘‘আমি ওই ব্যক্তির কথামতো নম্বরগুলো দিয়ে দিই। তারপরে উনি বলেন ফোনে একটি ছয় অঙ্কের ‘ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড’ আসবে। একটি নম্বর দিয়ে সেকানে তা এসএমএস করে জানাতে বলা হয়।’’ এর দশ মিনিট পরেই ব্যাঙ্কের এসএমএসে তিনি জানতে পারেন, ১৩ হাজার ৪৬৫ টাকার মধ্যে ১০, ৩৯৫ টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে।
কিন্তু বারবার এ ধরনের প্রতারণা সামনে আসে, ব্যাঙ্কের তরফে বারবার নিজের পিন নম্বর বা কার্ডের অন্য কোনও তথ্য না জানানোর কথা বলা হয়। তারপরেও অচেনা ফোনে কোন ভরসায় সব জানিয়ে দেন গ্রাহকেরা, সে প্রশ্ন রয়েই যায়। ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের তরফেও জানানো হয়, সাধারণত এ ধরনের প্রতারণার ক্ষেত্রে যে পরিমাণ টাকা সরানো হয় তা দিয়ে অনলাইনে লেনদেন করা হয়। তাই প্রতারক ফোনে বারবার কোড যাচাই করে নেয় বা ওটিপি জানতে চায়। এক ব্যাঙ্ক কর্তার দাবি, গ্রাহকের অভিযোগ পেলে ফ্লিপকার্ট, শপক্লুস, পেটিএমের মতো কোনো অনলাইন সাইট থেকে টাকা লেনদেন হয়েছে কি না, তা দেখে নিয়ে ওই টাকা যাতে ব্যবহার না করা যায় বা ওই কার্ডের লেনদেন বন্ধ করে দেওয়া যেতে পারে। পরে ওই সাইটটিকেও ই-মেলের মাধ্যমে বিষয়টি জানানো হয়। এ ক্ষেত্রেও কী ঘটেছে, দেখা হবে বলে মেঝিয়ারির ওই শাখার দাবি। কাটোয়ার মহকুমাশাসক শচিন মাঁকড়ও এ রকম ঘটনা আর কী ঘটেছে, কারা এর শিকার তা খতিয়ে দেখা ও বাসিন্দাদের সচেতন করার আশ্বাস দিয়েছেন।