ভেঙেছে শৌচাগারের দেওয়াল, উড়েছে চাল। ছবি: কাজল মির্জা
শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের গা ঘেঁষেই রয়েছে পরিত্যক্ত শৌচাগারটি। শনিবার দুপুরে বিস্ফোরণে দেওয়াল ও টিনের চালা উড়ে গিয়েছে ওই শৌচাগারের। গলসি ১ ব্লকের আটপাড়া গ্রামের বাসিন্দাদের দাবি, আশপাশে বিশেষ বসতি নেই। শিশুশিক্ষা কেন্দ্রটিও বন্ধ। ফলে, তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। পুলিশের অনুমান, বোমাগুলি সেখানে মজুত করা হয়েছিল। প্রায় ১৫টি বোমা ফেটেছে এ দিন।
গলসির দিক থেকে রণডিহা মেন ক্যানালের বাঁধ ধরে রাইপুরের পুল পেরিয়ে আটপাড়া গ্রামে ঢোকার মুখে রাস্তার পাশে রয়েছে ধর্মপুর আটপাড়া হাজরাপাড়া শিশুশিক্ষা কেন্দ্র। একতলা ভবনটির সীমানা পাঁচিল নেই। মূল ভবনের পাশে সার দিয়ে রয়েছে কয়েকটি শৌচাগার ও মিড-ডে মিলের রান্নাঘর। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ওই শৌচাগারটি বেশ কয়েক বছর ধরেই পরিত্যক্ত। গ্রা
মবাসী রামিজ চৌধুরী, আলিয়া বেগম, সুরজ শেখরা বলেন, ‘‘বৃষ্টি হচ্ছিল। বাড়ির মধ্যেই ছিলাম। দুপুর ৩টে নাগাদ বিকট শব্দ শুনে বাইরে বেরিয়ে দেখি, স্কুলটা পুরো ধোঁয়ায় ভরে গিয়েছে।’’ তাঁদের দাবি, এক সঙ্গে বেশ কয়েকটা বোমা না ফাটলে এত ধোঁয়া হত না। বিস্ফোরণের তীব্রতায় শৌচাগারের দেওয়াল ও টিনের চালাটি কার্যত ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছে, জানান তাঁরা। বোমাগুলি ওখানে কেন মজুত করা হয়েছিল, তা এ দিন নির্দিষ্ট ভাবে জানাতে পারেনি পুলিশ। তবে গলসি থানার এক আধিকারিকের দাবি, এলাকায় অশান্তি বাধাতেই কোনও গোষ্ঠী এমনটা করেছে, তাঁদের অনুমান।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আটাপাড়ার পাশে রাইপুর গ্রামের বাসিন্দা তথা তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেলের ব্লক সভাপতি শেখ জাহির আব্বাস (সিপাই) ও পাশের গ্রাম জাগুলিপাড়ার বাসিন্দা দলের জেলা যুব সম্পাদক রহমত মোল্লার ও তাঁর বাবা প্রাক্তন ব্লক কার্যকারী সভাপতি মহম্মদ মোল্লার ‘দ্বন্দ্ব’ এলাকায় পুরনো। এলাকা দখল, কখনও বালিঘাটের বখরা নিয়ে রাইপুর, আটপাড়া, ঢোলা এলাকা বেশ কয়েকবার উত্তপ্ত হয়েছে। ঢোলা গ্রামেও ওই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে লাগাতার বোমাবাজি হয়েছে, দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের। পুলিশের অনুমান, ওই দুই গোষ্ঠীর অনুগামীদের মধ্যেই কে বা কারা বোমাগুলি ওখানে মজুত করেছিল। কোনও কারণে তা ফেটে গিয়েছে।
শেখ জাহির আব্বাসের অভিযোগ, “এলাকায় অশান্তি বাধাতেই বোমাগুলি মজুত করেছিল রহমত ও মহম্মদেরা।” পাল্টা অভিযোগ রহমত মোল্লার। তাঁর দাবি, “সিপাইয়ের লোকজনই বোমাগুলি ওই বাথরুমে রেখেছিল। আমাদের আক্রমণ করার জন্য।” দলের ব্লক সভাপতি জর্নাদন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বিস্ফোরণের খবর পেয়েই পুলিশকে তদন্ত করতে বলেছি। দলের যদি কারও যোগ থাকে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” বিজেপির বর্ধমান সদর জেলা সহ-সভাপতি রমেন শর্মার অভিযোগ, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ বারুদের স্তূপে দাঁড়িয়ে রয়েছে। ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের স্কুলেও বোমা মজুত করছে তৃণমূল। এটা লজ্জার। দুষ্কৃতীদের সাজা চাই।”