সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী এবং মহম্মদ ইসমাইল।
দলের শীর্ষ নেতৃত্বের হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও রাশ টানা যাচ্ছে না গোষ্ঠী কোন্দলে। ‘কাটমানি’ নিয়ে রাজ্যের গ্রন্থাগারমন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর মন্তব্যের পরেই পাল্টা আক্রমণ শানালেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারি-২ ব্লকের প্রাক্তন তৃণমূল সভাপতি তথা জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ মহম্মদ ইসমাইল। মন্তেশ্বরের বিধায়ককে নিশানা করে তাঁর কটাক্ষ, ‘‘চোরের মায়ের বড় গলা।’’
মঙ্গলবার মেমারি-২ ব্লকে তৃণমূলের একটি মিছিল থেকে ‘কাটমানি’ নিয়ে কড়া বার্তা দেন সিদ্দিকুল্লা। বলেন, ‘‘দলের নেতারা কাটমানি খাবে না। এটা কিন্তু আমি আপনাদের বললাম। আমরা চাঁদা তুলব, বলে তুলব। আলু-পেঁয়াজ নিয়ে খিচুড়ি ভাত খাব। কিন্তু কাটমানি কাউকে খেতে আমি দেব না।’’ শাসক দলের একটা অংশের দাবি, কারও নাম না করলেও রাজ্যের মন্ত্রীর নিশানায় আদতে ইসমাইলই ছিলেন। বুধবার ইসমাইলের প্রতিক্রিয়াতেই তা আরও স্পষ্ট হল।
দলের অনেকেই জানাচ্ছেন, সিদ্দিকুল্লার সঙ্গে ইসমাইলের সম্পর্ক কখনওই মসৃণ ছিল না। সম্প্রতি ইসমাইলকে ব্লক সভাপতি পদ থেকে সরানো হয়। তার পর থেকে সেই সম্পর্ক আরও ‘অবনতি’ হয়। মন্ত্রীকে আক্রমণ করে ইসমাইল বলেন, ‘‘যাঁরা দুর্দিনে মার খেয়ে পার্টি করেছিলেন, তাঁদের সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্যই ময়দানে নেমেছেন উনি (সিদ্দিকুল্লা)।’’
এই আক্রমণ পাল্টা-আক্রমণের কারণে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে বলেই মনে করছেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ। তৃণমূল মুখপাত্র দেবু টুডু বলেন, ‘‘দলের কথা বাইরে বলা উচিত নয়। এটা দল বিরোধী কাজ। দল এ সব বরদাস্ত করবে না।’’
ইসমাইলের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে সিদ্দিকুল্লার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘ঠাকুর ঘরে কে, আমি তো কলা খাইনি। কাটমানি নিয়ে তো আমি কারও নাম করে কিছু বলিনি। তা হলে ওঁর এত গায়ে লাগছে কেন? আমার কাছে অনেক তথ্য আছে। আমি যদি সব ফাঁস করি, উনি বাজারে মুখ দেখাতে পারবেন না।’’
সিদ্দিকুল্লার দাবি, ইসমাইলের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার ভাবনা চিন্তা করছেন শীর্ষ নেতৃত্ব। তাঁর কথায়, ‘‘দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছেও ওঁর বিরুদ্ধে অনেক তথ্য আছে। আমার কাছে যা খবর, দল ওঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে। আমি সিপিএমের ত্রাস ছিলাম। সুতরাং, আমি বিজেপি বা সিপিএমের সঙ্গে সম্পর্ক রাখি না।