ধর্মঘটে খনি স্বাভাবিক রাখার আর্জি

দীর্ঘ দিনের চেষ্টায় সদ্য বিআইএফআর থেকে বেরিয়ে এসেছে সংস্থা। এই পরিস্থিতিতে আরও এক দিন শিল্প ধর্মঘটে ক্ষতি হয়ে যেতে পারে অনেকটা। তাই ৩০ এপ্রিল ডাকা ধর্মঘটের দিনেও শ্রমিক-কর্মীদের কাছে খনির উৎপাদন ও পরিবহণ স্বাভাবিক রাখার আর্জি জানিয়েছেন ইসিএল কর্তৃপক্ষ। এ দিনই আবার দুর্গাপুরে একটি সাংবাদিক বৈঠক করে সিটুর জেলা সম্পাদক বংশগোপাল চৌধুরী বলেন, ‘‘গণতন্ত্র বাঁচাতে আমরা রাস্তায় নামছি।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল ও দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০১৫ ০১:৩২
Share:

দীর্ঘ দিনের চেষ্টায় সদ্য বিআইএফআর থেকে বেরিয়ে এসেছে সংস্থা। এই পরিস্থিতিতে আরও এক দিন শিল্প ধর্মঘটে ক্ষতি হয়ে যেতে পারে অনেকটা। তাই ৩০ এপ্রিল ডাকা ধর্মঘটের দিনেও শ্রমিক-কর্মীদের কাছে খনির উৎপাদন ও পরিবহণ স্বাভাবিক রাখার আর্জি জানিয়েছেন ইসিএল কর্তৃপক্ষ। এ দিনই আবার দুর্গাপুরে একটি সাংবাদিক বৈঠক করে সিটুর জেলা সম্পাদক বংশগোপাল চৌধুরী বলেন, ‘‘গণতন্ত্র বাঁচাতে আমরা রাস্তায় নামছি। দুর্ভোগ এড়াতে সাধারণ মানুষকে সে দিন বাইরে না বেরোনোর অনুরোধ করছি।’’

Advertisement

সিটু, এআইটিইউসি, ইউটিইউসি এবং এইচএমএসের তরফে বৃহস্পতিবার ২৪ ঘণ্টার শিল্প ও সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে। বংশগোপালবাবু জানান, জরুরি পরিষেবা ছাড়া সব কিছুকেই ধর্মঘটের আওতায় ধরছেন তাঁরা। বাস, ট্রেনও আটকানো হবে। আইএনটিইউসি জানিয়েছে, পরিবহণ ধর্মঘটে তাদের সমর্থন রয়েছে। তবে খনি ও ইস্পাত শিল্পে ধর্মঘটে সামিল হচ্ছে না তারা। পক্ষান্তরে, ধর্মঘটের বিরোধিতা করে আইএনটিটিইউসি নেতৃত্বের দাবি, খনি ও ইস্পাত শিল্পে জোর করে ধর্মঘট করতে চাইলে কড়া হাতে প্রতিহত করার চেষ্টা হবে।

দুর্গাপুরে ইতিমধ্যে শিল্প ও সাধারণ ধর্মঘটের সমর্থনে সভা শুরু করেছে সিটু। রবিবার সগড়ভাঙা, বিধাননগর পাম্প হাউস এলাকায় সভা হয়। এ দিন পরিবহণ কর্মীদের নিয়ে সভার আয়োজন হয়েছিল দক্ষিণবঙ্গ রাজ্য পরিবহন সংস্থায়। বুধবার ধর্মঘটের সমর্থনে শহরে মিছিল হবে বলে জানান সিটু নেতা পঙ্কজ রায়সরকার।

Advertisement

বংশোগোপালবাবু এ দিন জানান, পরিবহণ ধর্মঘটের সঙ্গে শ্রমিক স্বার্থের কথা ভেবে খনি ও ইস্পাত শিল্পেও ধর্মঘট হবে। আইএনটিইউসি এই ধর্মঘটে তাদের সঙ্গে থাকছে বলেও দাবি করেন তিনি। যদিও আইএনটিইউসি নেতৃত্বের পাল্টা দাবি, খনি ও ইস্পাত শিল্পের ধর্মঘটে তাঁরা থাকছেন না। তবে পরিবহণ ধর্মঘটে তাঁদের নৈতিক সমর্থন আছে। সংগঠনের খনি শ্রমিক সংগঠনের কেন্দ্রীয় সম্পাদক চণ্ডী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ইসিএল সদ্য ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে, লাভের মুখ দেখছে। তাই এখনই আর ধর্মঘটে যাওয়া সম্ভব নয়। তবে পরিবহণ ধর্মঘটে সমর্থন আছে।’’ ইস্পাত শিল্পে সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতা তথা ইস্কো স্টিল প্ল্যান্টের সম্পাদক হরজিৎ সিংহ বলেন, ‘‘ইস্কোয় বহু দিনের চেষ্টার পরে আধুনিকীকরণ হয়েছে। এখনও লাভের মুখ দেখেনি সংস্থা। আমরা এখানে ধর্মঘট সমর্থন করছি না।’’ আইএনটিইউসি-র এমন সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে পরে বংশগোপালবাবু বলেন, ‘‘ওদের এই সিদ্ধান্তের কথা আমরা আমাদের রাজ্য নেতৃত্বকে জানিয়েছি। আমরা সাধ্য মতো নিজেদের কর্মসূচি পালন করব।’’

ইসিএলের সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায় জানান, গত অর্থবর্ষে ইসিএল বিআইএফআর থেকে মুক্ত হয়েছে। লাভও করেছে অনেকটা। উৎপাদন ও কয়লা পরিবহণ হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার বেশি। সবই হয়েছে শ্রমিক-কর্মীদের চেষ্টায়। এই পরিস্থিতিতে গোটা একটা দিন উৎপাদন ও কয়লা পরিবহণ বন্ধ থাকা মানে যথেষ্ট ক্ষতি। তিনি বলেন, ‘‘এটা শুধু ইসিএলের নয়, এলাকার অর্থনীতির ক্ষতি। তাই এর হাত থেকে সংস্থাকে রক্ষা করতে হবে।’’ তিনি জানান, প্রতি বারের মতো কাজে যোগ দিতে ইচ্ছুক শ্রমিক-কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।

সিটুর জেলা সম্পাদক বংশোগোপালবাবু অবশ্য বলেন, ‘‘আমরাও চাই ইসিএল এবং ইস্কোর কোনও ক্ষতি না হোক। কারণ এই সাফল্যের পিছনে আমাদেরও দীর্ঘদিনের সংগ্রাম জড়িয়ে আছে। আমরা অবশ্যই এই দুই শিল্পের খেয়াল রাখব।’’ আইএনটিটিইউসি-র বর্ধমান জেলা সভাপতি প্রভাত চট্টোপাধ্যায় ও সংগঠনের খনি শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সম্পাদক হরেরাম সিংহ দাবি করেন, শিল্প ধর্মঘট সাধারণ শ্রমিক-কর্মীরা মেনে নেননি। রাজ্যের কোনও অর্থনৈতিক ক্ষতি যাতে না হয়, সে দিকে খেয়াল রেখে ধর্মঘটের বিরোধিতা করা হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement