বন্ধ সিএলডব্লিউ। নিজস্ব চিত্র
করোনা মোকাবিলায় কিছু ক্ষেত্রে কড়া বিধি-নিষেধ জারি করেছে রাজ্য সরকার। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারের অনুমতি সাপেক্ষে কয়লা উত্তোলন জারি রাখতে চায় রাষ্ট্রায়ত্ত কয়লা উত্তোলক সংস্থা ইসিএল। সোমবার এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে বলে ইসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে। এ দিকে, চিত্তরঞ্জন লোকোমোটিভ ওয়ার্কস (সিএলডব্লিউ) কর্তৃপক্ষ কারখানা ও প্রশাসনিক কার্যালয় পুরোপুরি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিলেও কাজে যোগ দিতে ইচ্ছুক শ্রমিক-কর্মীদের নিয়ে উৎপাদন চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন ইস্কো কর্তৃপক্ষও।
কয়লাকে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য হিসেবে দাবি করে গত বারও লকডাউনের সময়ে উত্তোলন জারি রেখেছিল ইসিএল। সংস্থার আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, এ বারও সেই কাজ চালিয়ে যেতে জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে রাজ্য সরকারের অনুমতি চাওয়া হবে। ইসিএলের সিএমডির কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায় বলেন, ‘‘এ বারও যেন কয়লা উত্তোলন জারি থাকে তার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’’ নীলাদ্রিবাবু জানিয়েছেন, কয়লা একটি অত্যাবশ্যকীয় পণ্য। বিদ্যুৎ উৎপাদন সচল রাখতে হলে দেশের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিতে নিয়মিত কয়লা সরবরাহ করতে হবে। স্বভাবতই কয়লা উত্তোলন ব্যহত হওয়া চলবে না। এ ছাড়া ইস্পাত সংস্থাতেও কয়লা একটি জরুরি উপকরণ। সবদিক বিচার করে কয়লা উত্তোলন স্বাভাবিক রাখা অতি প্রয়োজনীয় বলে মনে করেন ইসিএল কর্তৃপক্ষ। গত বারও লকডাউনের সময়ে এই একই যুক্তিতে কয়লা উত্তোলোন জারি রাখার অনুমতি পাওয়া গিয়েছিল বলে ইসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে। রবিবার ছুটির দিন হওয়ায় প্রায় কোনও কয়লা খনিতেই কাজ হয়নি এ দিন। কর্তৃপক্ষের তরফে কোনও বিজ্ঞপ্তি জারি না হওয়ায় স্বাভাবিক নিয়মে আজ, সোমবার সকাল থেকেই বিভিন্ন খনিতে কাজে যোগ দেবেন শ্রমিক-কর্মীরা। এর পরেই কর্তৃপক্ষের তরফে পরবর্তী সিদ্ধান্ত ঘোষিত হবে বলে ইসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে।
একই ভাবে গত বারও লকডাউনের সময়ে ইচ্ছুক শ্রমিক-কর্মীদের কাজে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন ইস্কো কর্তৃপক্ষ। এ বারও সেই ব্যবস্থা জারি থাকবে। রাজ্য সরকারের কাছ থেকে সেই মর্মে অনুমতিও চাওয়া হয়েছে দাবি ইস্কোর। সংস্থার জনসংযোগ আধিকারিক অজিত সিংহ বলেন, ‘‘কারখানার উৎপাদন বন্ধ রাখার কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। প্রয়োজনীয় শ্রমিক-কর্মীদের নিয়েই উৎপাদন জারি থাকবে। ইচ্ছুক শ্রমিক-কর্মীদের কাজে যোগ দেওয়ার জন্য আপৎকালীন পাশ দেওয়া হবে। যাতায়াতের পথে তাঁদের কেউ আটকালে সেই পাশ দেখিয়েই তাঁরা কাজে যোগ দেবেন।’’ অন্য দিকে সিএলডব্লিউ কর্তৃপক্ষ ১৫ দিন কড়া বিধি-নিষেধের সময়ে কারখানার উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সংস্থার জনসংযোগ আধিকারিক চিত্রাসেন মণ্ডল বলেন, ‘‘কর্তৃপক্ষের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়েছে, ১৬ মে সকাল ছ’টা থেকে ৩০ মে সন্ধ্যা ছ’টা পর্যন্ত কারখানা ও প্রশাসনিক কার্যালয় বন্ধ থাকবে।’’ কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে শ্রমিক সংগঠনগুলি। সংস্থার শ্রমিক ইউনিয়নের সম্পাদক রাজীব গুপ্ত ও আইএনটিইউসির কার্যকরী সভাপতি নেপাল চক্রবর্তী জানান, চিত্তরঞ্জনে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এই অবস্থায় কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত যথাযথ।