ইসিএলের শ্রীপুর এরিয়া কার্যালয় থেকে উদ্ধার হয় ওই রক্ষীর দেহ। ঘটনার পরে এরিয়া কার্যালয়ে জটলা। ইনসেটে, নিরাপত্তারক্ষী মহেন্দ্র দাস। নিজস্ব চিত্র
কর্মজীবনের শেষ দিনে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় এক রক্ষীর দেহ উদ্ধার হয়েছে ইসিএলের শ্রীপুর এরিয়া কার্যালয় চত্বরে। পুলিশ জানায়, মহেন্দ্র দাস (৬০) নামে ওই রক্ষী নিঘা নিচু সেন্টার এলাকায় খনিকর্মী আবাসনের বাসিন্দা ছিলেন।
এরিয়া সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিনই অবসর নেওয়ার কথা ছিল মহেন্দ্রবাবুর। তিনি বৃহস্পতিবার রাত ১২টা নাগাদ এরিয়া কার্যালয়ে রাত-পালিতে কাজে যোগ দিয়েছিলেন। তাঁর সহকর্মী শ্যামল রজক জানান, মহেন্দ্রবাবু-সহ তাঁরা আট জন এরিয়া কার্যালয়ে লাঠি হাতে পাহারার কাজ করছিলেন। দু’জন করে গুদাম ঘরের সামনে ও সদর দরজায় ছিলেন। বাকি চার জন টহল দিচ্ছিলেন। শ্যামলবাবুর দাবি, ‘‘মহেন্দ্র ও আমি ঘণ্টাখানেক সদর দরজায় পাহারা দিয়েছি। পরে শৌচকর্ম করতে যাই। ফিরে আর ওকে দেখিনি। ভেবেছিলাম, কাছাকাছি কোথাও আছে। কিন্তু ভোর পর্যন্ত ওকে দেখতে না পেয়ে খোঁজ শুরু হয়। দেখা যায়, গ্যারাজের সামনে রক্তাক্ত অবস্থায় ওর দেহ পড়ে রয়েছে।’’
এরিয়া সূত্রে জানা যায়, সকাল ৭টা নাগাদ পুলিশ দেহ উদ্ধার করতে এলে সহকর্মীরা এবং মৃতের পরিবার দেহ প্রায় পাঁচ ঘণ্টা আটকে রেখে ‘নিহতের’ নিকটাত্মীয় হিসেবে ছোট ছেলের চাকরি ও ক্ষতিপূরণের দাবিতে বিক্ষোভ দেখান। ইসিএল সূত্রে জানা যায়, ছোট ছেলে বিক্রম দাসকে চাকরিতে নিয়োগ করা হলে বিক্ষোভ থামে। এই ঘটনায় নিচু সেন্টার খনিকর্মী আবাসনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সেখানে গিয়ে দেখা গেল পড়শিদের ভিড়। পড়শি রামনন্দন পাসোয়ান, রাজেন্দ্র পাসোয়ানেরা বলেন, ‘‘এলাকায় সমাজকর্মের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন মহেন্দ্রবাবু। তাঁর কোনও শত্রু ছিল না। কিন্তু তাঁকে খুনই করা হয়েছে বলে আমাদের অনুমান।’’
এরিয়ায় পার্সোনেল ম্যানেজার একে পাত্র জানান, জামুড়িয়া থানায় পুরো বিষয়টির তদন্ত করে উপযুক্ত পদক্ষেপ করার জন্য আর্জি জানানো হয়েছে। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এসিপি (সেন্ট্রাল) স্বপন দত্ত বলেন, ‘‘একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে। মাথার ডান দিকে গুলি বিঁধেছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল উদ্ধার করা হয়েছে। দেহটি ময়না-তদন্তের জন্য আসানসোল জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়না-তদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যু ঠিক কী কারণে, তা বোঝা যাবে। তদন্ত চলছে।’’