—প্রতীকী চিত্র।
অর্থবর্ষ শেষ হতে বাকি আর মাত্র এক মাস। কিন্তু কয়লা উত্তোলনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে এখনও কয়েক ধাপ পিছিয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত কয়লা উত্তোলক সংস্থা ইসিএল। লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব হবে কি না, সে নিয়েও সংশয়ে ইসিএল কর্তৃপক্ষ। এই পরিস্থিতিতে, দৈনিক উৎপাদন যতটা বাড়ানোর উপরে জোর দেওয়া হয়েছে বলে জানান ইসিএলের সিএমডি সমীরণ দত্ত।
চলতি আর্থিক বছরে কয়লা উত্তোলনের ক্ষেত্রে ইসিএলকে ৫১০ লক্ষ টনের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছে কোল ইন্ডিয়া। কিন্তু এখনও পর্যন্ত ৩৯০ লক্ষ টন কয়লা তুলতে পেরেছে ইসিএল। ফেব্রুয়ারি প্রায় শেষের মুখে। ৩১ মার্চের মধ্যে বাকি ১২০ লক্ষ টন কয়লা উৎপাদন সম্ভব কি না, সে প্রশ্নে ইসিএলের সিএমডি বলেন, ‘‘বিষয়টি কঠিন হলেও আমাদের উদ্যোগ চলছে। আগামী এক মাসে বেশ কয়েক লক্ষ টন কয়লা উত্তোলন করা যাবে।’’ তিনি জানান, এখন সামগ্রিক ভাবে দৈনিক উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা দু’লক্ষ টন পর্যন্ত করা হয়েছে।
কিন্তু লক্ষ্যপূরণের এমন হাল হয়েছে কেন? সিএমডি জানান, এর নেপথ্যে মূল কারণ রাজমহল খনিতে আশানুরূপ উত্তোলন হয়নি। সামগ্রিক ভাবে ইসিএল যে কয়লা দৈনিক উত্তোলন করে, তার এক-তৃতীয়াংশ রাজমহল খনি থেকে তোলা হয়। সেখানে জমি অধিগ্রহণ ও পরিবেশ সংক্রান্ত অনুমতি পাওয়ার ক্ষেত্রে বেশ কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছিল। যার ফলে উৎপাদন কিছুটা কমেছে। সিএমডি বলেন, ‘‘ওই সমস্যা এখন নেই, তাই কয়লা উত্তোলনের গতি বেড়েছে।’’ তাঁর দাবি, এই মুহূর্তে রাজমহলের দৈনিক উত্তোলন ৭০ হাজার টন। তা বাড়িয়ে দৈনিক ৭৫ হাজার টন করার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।
তবে শুধু রাজমহল খনির উত্তোলন কমে যাওয়ায় লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি, তা নয়। এ রাজ্যের নানা খনিতে ঘন ঘন বিক্ষোভ ও প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণও বাধা হয়েছে বলে ইসিএল কর্তৃপক্ষ জানান। আধিকারিকেরা জানান, আঞ্চলিক দাবি-দাওয়া নিয়ে এলাকাবাসীর বিক্ষোভে কয়লা তোলা ও পরিবহণ থমকে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
সমস্যা মিটিয়ে কাজ শুরু করার ফাঁকে বেশ কিছু কর্মদিবস নষ্ট হয়েছে। ইসিএলের কিছু অলাভজনক খনি ‘রেভিনিউ শেয়ারিং’ ও ‘মাইন ডেভেলপমেন্ট অপারেটিং’ ব্যবস্থায় বেসরকারি ঠিকা সংস্থাকে দিয়ে উৎপাদনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কিন্তু এই প্রক্রিয়াতেও একাধিক শ্রমিক সংগঠন বাধা দিয়েছে। ফলে, উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। এ ছাড়া, বর্ষার সময়ে খোলামুখ খনিতে জল ঢুকে যাওয়া ও শীতে কুয়াশার কারণেও কাজ
ব্যাহত হয়েছে।
ইসিএলের সিএমডি জানান, আগামী আর্থিক বছরে ইসিএলের লক্ষ্যমাত্রা ৫৪০ লক্ষ টনে বেঁধে দিয়েছে কোল ইন্ডিয়া। প্রশ্ন উঠেছে, যেখানে ৫১০ লক্ষ টনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে হিমশিম অবস্থা, সেখানে বর্ধিত লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা যাবে কী ভাবে? সিএমডি জানান, রাজমহল খনির উৎপাদন বৃদ্ধির সঙ্গে ঝাড়খণ্ড ও পশ্চিমবঙ্গে আরও প্রায় তিনটি নতুন খনি সম্প্রসারণের উদ্যোগ হয়েছে।