পিক-আপ ভ্যান আটকে। বৃহস্পতিবার রাতে। নিজস্ব চিত্র
বিভিন্ন সামগ্রী বোঝাই একটি পিক-আপ ভ্যান আটক করলেন এলাকাবাসী। পরে ঘটনাস্থলে এসে সামগ্রী বোঝাই ভ্যানটি ফাঁড়িতে নিয়ে যায় পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ কুলটির সোদপুরের ঘটনা। এলাকাবাসী ও শ্রমিক সংগঠনগুলির একাংশের অভিযোগ, ইসিএলের বন্ধ মাউথডিহি কোলিয়ারি থেকে জিনিসপত্র পাচার করা হচ্ছিল।
বাসিন্দারা পুলিশকে জানান, তাঁরা দেখতে পান, কুলটির সোদপুর গ্রামের মাউথডিহি কোলিয়ারি থেকে ভ্যানটি বিভিন্ন সামগ্রী বোঝাই করে পাচার করার তোড়জোড় করা হচ্ছে। সেটি আটকে দেন এলাকাবাসী। তাঁরা জানান, ভ্যানে কোলিয়ারির মূল্যবান কিছু মোটর, তামার তার ও বহু যন্ত্রাংশ বোঝাই ছিল। গ্রামবাসীর পক্ষে জন বক্সীর প্রতিক্রিয়া, “আমাদের কাছে খবর আছে প্রায় দিনই রাতে কোলিয়ারির যন্ত্রাংশ পাচার করা হচ্ছে। আমরা এ দিন হাতেনাতে তা ধরে ফেলি।”
এলাকায় আসেন কোলিয়ারির দু’জন ম্যানেজার মহম্মদ একলাখ খান ও স্বপন ঘোষ। তাঁদের দেখে স্থানীয়েরা আরও উত্তেজিত হয়ে পড়েন। কয়েক জন শ্রমিক নেতাও সেখানে চলে আসেন। ইসিএলের দুই আধিকারিককে ঘিরে বিক্ষোভ শুরু হয়। মহম্মদ একলাখ খানের প্রতিক্রিয়া, “এগুলির প্রতিটিই মূল্যবান সামগ্রী। বন্ধ কোলিয়ারিতে এগুলি থাকার কথা নয়। তাই সেগুলি ট্রাকে করে সোদপুর এরিয়া কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কোলিয়ারির সম্পদ নিরাপদে রাখতেই এই পদক্ষেপ।” কিন্তু তা-ই যদি হয়, তবে তা রাতের অন্ধকারে কেন নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, এগুলি নিয়ে যাওয়ার চালান কোথায়, এলাকাবাসীর এমন প্রশ্নে ওই দুই আধিকারিক কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি বলে দাবি।
বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে শ্রমিক সংগঠনগুলি। সিএমএসআই-এর কেন্দ্রীয় সদস্য সুজিত ভট্টাচার্য বলেন, “অন্যায় ভাবে মাইথডিহি কোলিয়ারির উত্তোলন বন্ধ করা হয়েছে। ইসিএলের যৌথ উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে খনি খোলার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা চলছে। এই অবস্থায় রাতের অন্ধকারে কোলিয়ারির যন্ত্রাংশ পাচারের অর্থ, খনিটি ফের চালুর সম্ভাবনায় জল ঢেলে দেওয়া।” আইএনটিইউসি নেতা চণ্ডী চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “খনিটিতে এখনও প্রচুর কয়লা মজুত আছে। সেটি বেসরকারি হাতে দেওয়ার জন্যই রাতের অন্ধকারে যন্ত্রাংশ পাচার করা হচ্ছে।” এ দিকে, ইসিএল সূত্রে দাবি, ভূগর্ভস্থ এই খনিতে জল জমে আছে। শ্রমিক-নিরাপত্তার জন্য এটি বন্ধ করা হয়েছে। ইসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৯ থেকে মাউথডিহি কোলিয়ারির কয়লা উত্তোলন পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। এখানে কর্মরত শ্রমিকদের অন্যত্র বদলি করা হয়েছে। তবে ১৫ থেকে ২৬ ‘লেভেল’ পর্যন্ত প্রায় ৭২ হাজার এবং আশপাশে আরও প্রায় ৪০ হাজার টন কয়লা মজুত রয়েছে বলে খনি সূত্রে জানা গিয়েছে।