—নিজস্ব চিত্র
কাজ শুরু হওয়ার পরে কেটে গিয়েছে প্রায় দু’বছর। কিন্তু দুর্গাপুরে এখনও ‘ওয়াটার এটিএম’ চালু করতে পারল না পুরসভা। এই পরিস্থিতিতে শহরবাসীর একাংশ ক্ষুব্ধ। তাঁদের দাবি, এটিএমগুলি চালু হলে পথচারীদের সুবিধা হত। তাঁদের অভিযোগ, এর জন্য বিভিন্ন দফতরের সমন্বয়ের অভাবই দায়ী।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, গত পুরবোর্ড দুর্গাপুর শহরে মোট আটটি ‘ওয়াটার এটিএম’ বসানোর পরিকল্পনা নিয়েছিল। ঠিক হয়, এটিএম-এ এক টাকার কয়েনের বিনিময়ে ‘ভেন্ডিং মেশিনে’র মাধ্যমে এক লিটার জলের ‘পাউচ’ মিলবে। অনেকেই আর্থিক কারণে দোকান থেকে বোতলের জল কিনে খেতে পারেন না। সেখানে পুরসভার এটিএম-এ স্বল্প মূল্যে জলের ব্যবস্থা করার পরিকল্পনাটিকে স্বাগত জানিয়েছিলেন শহরবাসী। পাশাপাশি, প্রয়োজনে বোতলে জল ভরে নেওয়ার ব্যবস্থাও ছিল। কিন্তু ওই পুর-বোর্ডের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় এটিএম তৈরির কাজ শুরু হয়নি।
নতুন পুরবোর্ড দায়িত্ব নিয়ে ‘গ্রিন সিটি মিশন’ প্রকল্পে শহরে মোট ১৬টি ওয়াটার এটিএম বসানোর সিদ্ধান্ত নেয়। শেষমেশ ২০১৮-র গোড়া থেকে দুর্গাপুর স্টেশন, সিটি সেন্টার বাসস্ট্যান্ড, মহকুমা হাসপাতাল, ইএসআই হাসপাতাল, ডিএসপি হাসপাতাল, ভিড়িঙ্গি মোড়-সহ নানা জায়গায় এটিএম তৈরির কাজ শুরু করা হয়। পূর্ত দফতর এটিএম-এর জন্য ঘর তৈরির কাজ করে।
এক ঝলকে
• যতগুলি এটিএম: ১৬টি।
• কাজ শুরু: ২০১৮-য়।
• যে যে জায়গায়: দুর্গাপুর স্টেশন, সিটি সেন্টার বাসস্ট্যান্ড, মহকুমা হাসপাতাল, ইএসআই হাসপাতাল, ডিএসপি হাসপাতাল, ভিড়িঙ্গি মোড় প্রভৃতি এলাকায়।
• যা মিলবে: এক টাকা দিলেই এক লিটার জলের পাউচ।
তা হলে দেরি কেন? শহরবাসীর অভিযোগ, বিভিন্ন দফতরের মধ্যে সমন্বয় না থাকার জন্যই চালু করা যাচ্ছে না এটিএম। পুরসভা সূত্রেই জানা যায়, পূর্ত দফতর ঘর তৈরির পরে সেগুলি এটিএম-এর জন্য উপযোগী নয় জানায় সংশ্লিষ্ট ঠিকা সংস্থা। তারা জানায়, ঘরের ভিতরে রাখা ভেন্ডিং মেশিন যাতে ঠান্ডা থাকে সে জন্য ঘরে অবশ্যই ঘুলঘুলি থাকতে হবে। ফের নতুন করে ঘুলঘুলি তৈরি করা হয়। আবার, কয়েকটি এটিএম ঘরের কাছে জলের পাইপলাইন না থাকায় জলের সংযোগের ক্ষেত্রেও সমস্যা দেখা দেয়। এই সব সমস্যা মেটানোর পরেও বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে দেরি হয়। সব মিলিয়ে একটি এটিএমও এ পর্যন্ত চালু করা যায়নি।
এই পরিস্থিতিতে পথে বেরিয়ে শহরবাসী কম দামে বিশুদ্ধ পানীয় জল পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। যদিও দুর্গাপুর পুরসভার মেয়র পারিষদ (জল সরবরাহ) পবিত্র চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সিটি সেন্টার বাসস্ট্যান্ড, মহকুমা হাসপাতাল, ভিড়িঙ্গি মোড়-সহ মোট ১১টি জায়গায় এটিএম-এর কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। ডিএসপি হাসপাতাল-সহ বাকি পাঁচটি জায়গায় এটিএম তৈরির কাজ সামান্য বাকি। কয়েক দিনের মধ্যেই সব এটিএম চালু করা হবে।’’ মেয়র পারিষদের আশ্বাস, গ্রীষ্মের আগেই এটিএম চালু হওয়ায় সুবিধা পাবেন পথচারীরা।