Dugrapur Municipality

কারখানায় ‘চাঁদা’ বন্ধের নির্দেশ, নজরে পুরসভাও

দলের একটি সূত্রের অভিযোগ, শ্রমিক নেতাদের অনেকে আবার বিভিন্ন কারখানার সঙ্গে যোগসাজস করে আকরিক, কয়লার অসাধু কারবারে যুক্ত হয়ে পড়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০২৪ ০৮:৫২
Share:

দুর্গাপুর পৌর নিগম। —ফাইল চিত্র।

শ্রমিক সংগঠনের নাম করে তোলাবাজি বা কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ বার বারই উঠেছে দুর্গাপুর শহরে। বৃহস্পতিবার সে নিয়ে সরব হলেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও। এ সব বন্ধ করতে হবে বলে পুলিশকে নির্দেশ তাঁর। সেই সঙ্গেই, দুর্গাপুর পুরসভার বর্তমান কাজকর্ম নিয়ে তিনি যে অসন্তুষ্ট, তা কড়া ভাষায় জানালেন তিনি।

Advertisement

দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে তৃণমূলের ভাল ফল না করার পিছনে দলের শ্রমিক সংগঠনের ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করে রাজনৈতিক মহল। তৃণমূলের একাংশের মতে, শ্রমিক-স্বার্থে আন্দোলন করার সময়ে কার্যত খুঁজে পাওয়া যায় না আইএনটিটিইউসি নেতৃত্বকে। কিন্তু কারখানায় লোক নিয়োগের সময়ে আখের গোছাতে নেমে পড়ে একাধিক গোষ্ঠী। মাঝে মাঝেই প্রকাশ্যে আসে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। তা থামাতে পুলিশের লাঠি চালানোর ঘটনাও ঘটেছে।

দলের একটি সূত্রের অভিযোগ, শ্রমিক নেতাদের অনেকে আবার বিভিন্ন কারখানার সঙ্গে যোগসাজস করে আকরিক, কয়লার অসাধু কারবারে যুক্ত হয়ে পড়েছেন। ফলে, শ্রমিকেরা আইএনটিটিইউসি-র উপরে ভরসা হারাচ্ছেন। কাজ হারানোর ভয়ে তাঁরা শুধু পাশে থাকার ভান করেন। বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘দুর্গাপুরে কারখানায় চাঁদা তোলার জুলুম চলছে। যারা যারা চাঁদা
তুলছে, তাদের হাতগুলো একটু বন্ধ করো। স্থানীয় পুলিশকে কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে।’’

Advertisement

আইএনটিটিইউসি নেতৃত্বের একাংশ দাবি করেন, এখন কারখানায় দলের ছাত্র-যুব নেতৃত্বকেও মাঝে মাঝে দেখা যায়। কিন্তু সব দায় এসে পড়ে আইএনটিটিইউসি-র উপরে। যদিও সংগঠনের জেলা সভাপতি অভিজিৎ ঘটকের বক্তব্য, “সংগঠনের কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। মুখ্যমন্ত্রী পুলিশ-প্রশাসনকেও নির্দেশ দিয়েছেন ব্যবস্থা নিতে। তাতে আরও ভাল হবে।”

যে সব পুরসভায় নির্বাচিত বোর্ড নেই সে প্রসঙ্গে দুর্গাপুরের কথা তুলে এ দিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “দুর্গাপুরে ছ’জন আছে। অপদার্থ, এক জন ছাড়া। বদলাতে হবে। ভাল লোক খোঁজো।’’ পুলিশ অনেক সময়ে নেতাদের কথায় উল্টোপাল্টা তথ্য দেয় জানিয়ে তাঁর নির্দেশ, ঠিক তথ্য চাই। মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যে শহরে চর্চা শুরু হয়েছে। পুরবোর্ডের মেয়াদ শেষের পরে গত প্রায় ১ বছর ১০ মাস ধরে পুরসভা সামলাচ্ছে ৫ সদস্যের প্রশাসকমণ্ডলী। মুখ্যমন্ত্রী এ দিন ছ’জনের কথা উল্লেখ করেছেন। অনেকের ধারণা, তিনি পাঁচের জায়গায় ছয় বলে ফেলেছেন। কিন্তু তাঁর মন্তব্যের পরে প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে কি বর্তমান প্রশাসকমণ্ডলী ভেঙে নতুন করে গড়া হবে?

যদিও বিরোধীদের দাবি, নির্বাচিত পুরবোর্ড না হলে, শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর না থাকলে কখনও স্বাভাবিক পরিষেবা দেওয়া সম্ভব নয়। বিজেপির দুর্গাপুর পশ্চিমের বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়ের দাবি, “হারের ভয়ে ভোট করাচ্ছে না পুরসভায়। মাঝে ভুগতে হচ্ছে শহরবাসীকে।’’ সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ক বিপ্রেন্দু চক্রবর্তীরও বক্তব্য, “শহরবাসী পরিষেবা থেকে বঞ্চিত। নির্বাচিত বোর্ড দরকার।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী বলেন, “বিরোধীদের ভিত্তিহীন কথাবার্তা নিয়ে কিছু বলতে চাই না। মুখ্যমন্ত্রী যেমন নির্দেশ দেবেন, সেই অনুযায়ী
আমরা এগোব।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement