ফাইল চিত্র।
বাস চলাচল নিয়ে দুর্গাপুর ও বাঁকুড়ার বাস মালিকদের মধ্যে টানাপড়েনে অব্যাহত থাকল বুধবারেও। এই পরিস্থিতিতে ভোগান্তির মুখে পড়া যাত্রীদের একটি বড় অংশ এবং দুই জেলার বাস মালিকদের সংগঠন প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। মঙ্গলবার দু’-একটি বেসরকারি বাস তবুও পথে দেখা যায়। এ দিন তা-ও ছিল না।
এই পরিস্থিতিতে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মী বাঁকুড়ার বাসিন্দা দীপেন হালদারের ক্ষোভ, “দুই জেলার বাসিন্দাদের জন্যই বাঁকুড়া-দুর্গাপুর রুটটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ২৪ ঘণ্টা কেটে গেলেও প্রশাসন সমস্যা মেটাতে পারল না।’’
এ দিন বাঁকুড়ার গোবিন্দনগর বাসস্ট্যান্ডে বাসকর্মীরা অবস্থানে বসে দাবি করেন, দুর্গাপুরের বাস মালিক সত্যজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের নবদ্বীপ-বাঁকুড়া রুটের যে বাসটি নিয়ে বিতর্ক, সেটির সময়সূচি বদল করতে হবে এবং আপাতত সেটির চলাচল বন্ধ রাখতে হবে। যদিও সত্যজিৎবাবু বলেন, ‘‘স্টেট ট্রান্সপোর্ট অথরিটি কাছে এক মাসের সাময়িক অনুমোদন নিয়ে এবং পরিবহণ দফতরের নিয়ম মেনে বাস চলছে।’’
দুই জেলার বাস মালিক সংগঠনের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, জট কাটাতে চেষ্টা করছে বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন। কিন্তু বাঁকুড়ার পরিবহণ দফতর, পুলিশ বাস চলাচল স্বাভাবিক করার জন্য বাঁকুড়ার মালিকদের বললেও লাভ হয়নি। বাঁকুড়ার ‘বাসমালিক কল্যাণ সমিতি’র সহ-সভাপতি অঞ্জন মিত্রের অভিযোগ, “প্রশাসনের সদিচ্ছা থাকলে যে বাসটিকে ঘিরে বিতর্ক সেটির মালিককে ডেকে আমাদের সঙ্গে বৈঠক করতে পারত। দুর্গাপুরে আটকে রাখা আমাদের ১৩টি বাস ছাড়ানোর জন্য পদক্ষেপ করেনি প্রশাসন।’’
‘দুর্গাপুর বাসমালিক কল্যাণ অ্যাসোসিয়েশন’-এর সম্পাদক সুভাষ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য জানান, মঙ্গলবার রাতে জেলা পরিবহণ আধিকারিক (বাঁকুড়া) সঞ্জয় বিশ্বাস ফোনে জানান, বাঁকুড়ার বাস মালিকদের সঙ্গে কথাবার্তা হয়েছে। সঞ্জয়বাবু দুর্গাপুরে আটকে রাখা বাসগুলি ছেড়ে দিতে বলেন। তার পরে এ দিন সকালে বাঁকুড়ায় আটকে রাখা দুর্গাপুরের সাতটি বাসের কর্মীদের পাঠানো হয়, দাবি সুভাষবাবুর। সেই সঙ্গে তাঁর অভিযোগ, ‘‘আমরা বাঁকুড়ার বাসকর্মীদের বাস নিয়ে যেতে বললেও ওঁরা জানান, মালিকেরা নিষেধ করেছেন। বাঁকুড়া থেকে আমাদের কর্মীরাও জানান, বাস চালাতে দেওয়া হয়নি।’’ অ্যাসোসিয়েশনের দাবি, বিষয়টি বাঁকুড়ার পরিবহণ আধিকারিককে জানালে তিনি পদক্ষেপ করার আশ্বাস দেন। কিন্তু সুভাষবাবুদের দাবি, দুপুর দেড়টার পরে পরিবহণ আধিকারিকের সঙ্গে তাঁর আর কথা হয়নি। সঞ্জয়বাবুর অবশ্য বলেন, ‘‘মঙ্গলবার রাতেই দু’পক্ষকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য বলা হয়। গোটা বিষয়টির উপরে নজর রয়েছে।’’
সামগ্রিক ভাবে বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়ার জন্য যোগাযোগ করা হলে বিকেল পর্যন্ত জেলাশাসক (বাঁকুড়া) উমাশঙ্কর এস কোনও মন্তব্য করেননি। মহকুমাশাসক (দুর্গাপুর) অনির্বাণ কোলে অবশ্য বলেন, ‘‘বাঁকুড়া থেকে প্রশাসনিক ভাবে এবং কোনও বাস মালিক সমস্যার কথা আমাদের জানাননি। জানালে পদক্ষেপ করা হবে।’’