ধুলো-ধোঁয়ায় ঢেকেছে রাস্তা। দুর্গাপুরের রাতুড়িয়া-অঙ্গদপুর শিল্পতালুকে। ছবি: বিকাশ মশান
এত দিন শীতকাল ছিল। দরজা-জানলা বন্ধ থাকত। এ বার গরম পড়তে শুরু করেছে। এই আবহে দুর্গাপুরের দূষণ নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বাসিন্দাদের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, দূষণ নিয়ন্ত্রণে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। এ দিকে, দূষণ পরিস্থিতি নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। যদিও দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের দাবি, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
দুর্গাপুর শহরের রাতুড়িয়া-অঙ্গদপুর হোক বা সগড়ভাঙা হোক, সর্বত্র দূষণের জেরে চরম সমস্যায় ভুগতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরা জানান, দূষণের জেরে বাড়ির উঠোন থেকে বারান্দা, কালো আস্তরণ পড়ছে। গাছের সবুজ পাতা কালো হয়ে গিয়েছে। পুকুরের জলে দূষণের সর পড়ছে। শ্বাস নিতে সমস্যা হয়। বাসিন্দারা জানান, শীতে দরজা-জানলা বন্ধ থাকায় কিছুটা নিশ্চিন্তে রাতে ঘুমনো যেত। কিন্তু গরমে সে উপায় নেই। চিকিৎসকেরা জানান, দূষণের জেরে ফুসফুসের কর্মক্ষমতা কমতে থাকে। ফুসফুসে সংক্রমণ হয়। হাঁপানি বা শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা যায়। দীর্ঘদিন এমনটা চললে ‘ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ়’ (সিওপিডি) হতে পারে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের সমস্যা জটিলতর হয়ে যায়। এলাকাবাসী অভিজিৎ রায়, বিধান বসুরা বলেন, “দূষণ নিয়েই আমরা বহু বছর বেঁচে আছি। বাড়ি, ঘর ছাইয়ে ঢেকে যাচ্ছে। রাস্তায় বাইক নিয়ে চলতে পারি না। বিভিন্ন কারখানা লাগাতার দূষণ ছড়াচ্ছে। আমাদের ফল ভুগতে হচ্ছে। দূষণ নিয়ন্ত্রণে লাগাতার অভিযান জরুরি।” তাঁদের অভিযোগ, বিদ্যুৎ খরচ বাঁচাতে বেশ কিছু কারখানায় দূষণ নিয়ন্ত্রক যন্ত্র ব্যবহার করা হয় না। অভিযোগ মানতে চাননি পর্ষদের দুর্গাপুর কার্যালয়ের এক আধিকারিক। তিনি বলেন, “নিয়মিত অনলাইনে মনিটরিং করা হয়। নিয়মিত অভিযানও হয়।” পাশাপাশি, দুর্গাপুরের পুর-প্রশাসক অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “সংশ্লিষ্ট কারখানা কর্তৃপক্ষকে ডেকে পাঠিয়েছি। আলোচনা হবে।”
তবে বিজেপির দুর্গাপুর পশ্চিমের বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুই বলেন, “বর্তমান রাজ্য সরকার সিন্ডিকেট আর তোলাবাজির সরকার। কারখানা মালিকদের সঙ্গে যোগসাজশ রয়েছে শাসক দলের। তাই এই পরিস্থিতি।” অভিযোগ উড়িয়ে প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর দেবব্রত সাঁই বলেন, “দূষণ আগের থেকে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে। রাজ্যে সরকার বদলের পরে দূষণ নিয়ন্ত্রণে প্রতিনিয়ত নজরদারিচালানো হয়।”