ফাঁকা বাসে বসে এক কর্মী। বর্ধমানে। নিজস্ব চিত্র।
তীব্র গরম। খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে পা দিচ্ছেন না কেউ। বেলা বাড়তে বাস থেকে উধাও হয়ে যাচ্ছেন যাত্রীরাও। কার্যত দু’এক জনকে নিয়েই বাস চালাতে হচ্ছে, দাবি বাসকর্মীদের। তাঁরা জানাচ্ছেন, গত ১৫ দিন ধরে কার্যত লোকসানেই বাস চলছে।
বর্ধমান শহরের দুই প্রান্তে দুই বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে দেখা যায়, বাসগুলি তেতে পুড়ে দাঁড়িয়ে থাকলেও যাত্রী নেই। বাসস্ট্যান্ডে ব্যস্ততার হাঁকডাকও নেই। এই দুটি বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রায় ৪০টি রুটের বাস যাতায়াত করে। বাসকর্মীদের দাবি, সমস্ত রুটের বাসই মার খাচ্ছে। নবাবহাট বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে দেখা যায়, বর্ধমান থেকে বরাকর, চিত্তরঞ্জন, আসানসোল, বহরমপুর, লালগোলা, কৃষ্ণনগর যাওয়ার বাসগুলিতে সকালে অফিসের সময়ে যাত্রী থাকছে। বাকি রুটে বিকেলের আগে হাতেগোনা যাত্রীদের দেখা মিলছে। বাস কর্মী জিয়ারুল হক, গোবিন্দ ঘোষ, শেখ আপেল বলেন, ‘‘দূরপাল্লার বাসগুলিতে মোটামুটি ৪২টি করে আসন থাকে। দুপুরের দিকে তার এক চতুর্থাংশও ভরছে না।’’ শেখ পিন্টু নামে এক বাস চালকের কথায়, ‘‘গত ১৫ দিন ধরে দুপুরের দিকে বাসে ১৫ জন করেও যাত্রী হয়নি। মাঝ রাস্তাতেও যাত্রীদের ওঠানামা হচ্ছে না।’’
আলিশা বাসস্ট্যান্ড থেকেও আরামবাগ, কামারপুকুর, তারকেশ্বর, ঘাটাল, ক্ষীরপাই, বাঁকুড়া, খড়গপুর, পুরুলিয়ার মতো একাধিক রুটের বাস যায়। সেখানে গিয়েও একই চিত্র দেখা যায়। কর্মী শেখ সঞ্জু বলেন, ‘‘একে রোজা, তার উপরে এই অসহ্য গরম। কেউ বেলার দিকে যাতায়াতের ঝুঁকি নিচ্ছেন না। সেই কারণেই বাস এবং স্ট্যান্ড ফাঁকা থাকছে।’’ খড়গপুর রুটের এক বাস চালকের কথায়, ‘‘৯৪ টাকা লিটার জ্বালানি। আর যাত্রী সংখ্যা মেরে কেটে ১ থেকে ১৫। এত বড় রুটে এই যাত্রী নিয়ে চললে কী ভাবে টাকা উঠবে?’’ যাত্রী না থাকায় বাসস্ট্যান্ডে থাকা মুটে মজদুরেরাও মার খাচ্ছেন। সুরজ দাস নামে দিনমজুরের কথায়, ‘‘বাসস্ট্যান্ডে যদি লোক না থাকে তাহলে আমাদের চলবে কি করে?’’ বাসকর্মীদের দাবি, সামনে ইদ। এখন লাভে কাঁটা হয়ে গেল আবহাওয়া। কবে গরম কমবে, কালবৈশাখী নামবে, সে দিকেই তাকিয়ে তাঁরা।