অভিনব পদ্ধতিতে নানা সামগ্রী হাসপাতাল থেকে পাচার করত তারা। ফাইল ছবি
রোগীদের জন্য বরাদ্দ ওষুধ-সহ অন্যান্য সামগ্রী হাসপাতাল থেকে সরানোর সময় পাচারকারীদের হাতেনাতে ধরল ওই হাসপাতালেরই এক কর্মী। জিজ্ঞাসাবাদে জানা গিয়েছে অভিনব পদ্ধতিতে নানা সামগ্রী হাসপাতাল থেকে পাচার করত তারা। এই ঘটনায় জড়িত মহিলা-সহ তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।
পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের কয়েকজন আয়া এবং সাফাইকর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে হাসপাতালের বর্জ্য ফেলার টানেলের মধ্যে দিয়ে অব্যবহৃত চাদর, কম্বল, অ্যাপ্রন, স্যালাইন এবং ওষুধ পাচার করার। শনিবার সকালে রোগী কল্যাণ সমিতির এক কর্মী ক্রেতা-সহ পাচারকারীকে বমাল আটক করে। পুলিশকে খবর দিলে তারা ক্রেতা-সহ তিনজনকে আটক করেছে। ধৃতদের কাছে থেকে দু’বস্তা স্যালাইন-সহ চার বস্তা হাসপাতালের অন্যান্য সামগ্রী আটক করেছে তারা।
বেশ কিছুদিন ধরে অভিযোগ উঠছিল, হাসপাতালের চাদর, কম্বল, অ্যাপ্রন, স্যালাইন ও ওষুধ রোগীরা ঠিকমত পাচ্ছেন না। কাটোয়া হাসপাতালে ভরতি হলে রোগীর ব্যবহারের জন্য পরিজনরা বাড়ি থেকে চাদর,কম্বল নিয়ে আসছিলেন।
রোগীকল্যাণ সমিতির কর্মীদের বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ হওয়ায় বিশেষভাবে নজরদারি শুরু করেন তাঁরা। সকালে চণ্ডীচরণ মুখোপাধ্যায় নামে হাসপাতালের এক কর্মী দেখতে পান হাসপাতালের বর্জ্য ফেলার ট্যানেলের ভিতর দিয়ে কিছু ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। পরে এক ব্যক্তি সামগ্রীগুলো তার মোটরবাইকে তুলছে। হাসপাতালের ক্যাম্পের পুলিশ ও সহকারী সুপারকে তৎক্ষনাৎ খবর দেওয়া হয়। পুলিশ ওই ক্রেতাকে সামগ্রী-সহ আটক করে। পরে আটক করা হয় পাচারকারীকেও।
এই পাচার হওয়া সামগ্রীর ক্রেতা নদিয়ার কালীগঞ্জ থানার বাসিন্দা কাওসার সেখ। জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায় সামগ্রীগুলো মহিলা ওয়ার্ড থেকে দু’জন আয়া রিনা, চন্দনা এবং শ্রীলক্ষী হাজরা নামে এক সাফাইকর্মী বিক্রির জন্য পাচার করেছে। পুলিশ তিনজকে আটক করলেও চন্দনাকে খুঁজে পায়নি।
কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের সুপার সেখ শৌভিক আলম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেন, ‘‘আমরা নজরদারির জন্য ট্যানেলের করিডরে সিসি ক্যামেরা বসাব। এছাড়াও হাসপাতালের অন্যান্য সামগ্রী কিছু গিয়েছে কিনা তার জন্য স্টোরের রেজিস্টার খতিয়ে দেখব। দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কাটোয়া থানায় লিখিতভাবে জানিয়েছি।’’