ফাইল চিত্র।
রাজ্য সরকার জানিয়ে দিয়েছে, ভর্তির নথি যাচাইয়ের জন্য পড়ুয়াদের কলেজে হাজির থাকার কোনও প্রয়োজন নেই। তারপরেও বৃহস্পতিবার স্নাতক স্তরের পড়ুয়াদের নথি যাচাই চলল বর্ধমানের রাজ কলেজে।
অধ্যক্ষ নিরঞ্জন মণ্ডলের দাবি, “আমাদের কলেজে চার হাজার পড়ুয়াকে ভর্তি করতে হবে। ক্লাস শুরুর পরে নথি যাচাই করতে গেলে ১০ দিনের পড়া নষ্ট হবে। সে জন্য কাজটা এগিয়ে রাখছি।’’ নথি যাচাই বাধ্যতামূলক নয় বলেও তাঁর দাবি। তিনি জানান, ২০১৭ সাল থেকেই পুরো ভর্তি প্রক্রিয়া অনলাইনে করা হয়েছে। কোনও পড়ুয়া কলেজে না এলেও ভর্তি আটকাবে না বলেও গত বছর থেকেই তাঁরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এ দিন কলেজে গিয়ে দেখা যায়, কলেজের প্রেক্ষাগৃহে কয়েকজন শিক্ষাকর্মী ল্যাপটপ নিয়ে বসে রয়েছেন। বিভিন্ন বিষয়ে মেধা তালিকার ক্রমিক নম্বর ধরে পড়ুয়াদের ডাকা হচ্ছে। বাইরে বসে থাকা পড়ুয়ারা ভিতরে গেলে মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিকের মার্কশিট, ফর্ম পূরণ ও ব্যাঙ্ক চালানের কাগজপত্র দেখা হচ্ছে। এ দিন ভর্তি হতে যাওয়া সঙ্গীত বিভাগের এক ছাত্রী বলেন, “আমরা বেশ কয়েকজন বসে ছিলাম। মেধা তালিকার ক্রমিক নম্বর ধরে ডাকা হচ্ছিল। সমস্ত নথি দেখানোর পরে আমাকে ভর্তি করে নেওয়া হয়।’’ পাস কোর্সের ভর্তি হওয়া আর এক ছাত্র বলেন, “আমাকে কাউন্সেলিংয়ে ডাকা হয়েছিল। আমি যে সমস্ত বিষয়ে ভর্তি হতে ইচ্ছুক, তা নিয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়। তারপরে ভর্তি হওয়া যাবে বলে জানানো হয়।’’
তবে রাজ কলেজ নির্দেশ ‘অমান্য’ করলেও জেলার অন্য কলেজগুলি সেই সাহস দেখায়নি। ওই সব কলেজের ফর্ম পূরণ করা পড়ুয়াদের অনেকের মনেই বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে। তাঁদের প্রশ্ন, ভর্তি প্রক্রিয়া চলাকালীন আচমকা সিদ্ধান্তে রদবদলে সুষ্ঠু ভাবে ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ হবে তো। কিংবা বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় সব কলেজেই এ মাসের শেষ থেকে ক্লাস শুরুর যে নির্দেশিকা জারি করেছে, সেই নির্দেশিকাও মানা সম্ভব হবে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। বর্ধমানের বিবেকানন্দ কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, সরকারি নির্দেশিকা মেনে নথি যাচাই বা কাউন্সেলিংয়ের কোনও প্রক্রিয়া রাখা হচ্ছে না। কলেজের ওয়েবসাইটে বিস্তারিত জানিয়ে দেওয়া হবে। মেধা তালিকায় নাম থাকা পড়ুয়াদের ফর্মে থাকা মোবাইল নম্বরে মেসেজ করে বা ই-মেলে কী করতে হবে, সেটাও বলে দেওয়া হবে।
তবে জেলার প্রতিটি কলেজেই ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেলেও মেমারি কলেজে এখনও মেধা তালিকায় প্রকাশিত হয়নি। কলেজের অধ্যক্ষ দেবাশিস চক্রবর্তী বলেন, “সরকারি নিয়ম মেনে মেধা তালিকা প্রকাশ ও অন্যান্য নির্দেশ মানতে গিয়ে দেরি হয়ে গিয়েছে।’’ আজ, শুক্রবার ওই কলেজের ওয়েবসাইটে মেধা তালিকা প্রকাশ করা হবে বলেও জানান তিনি।
জামালপুর কলেজে এ বছর ৩৮০ জন ফর্ম পূরণ করেছিলেন। সরকারি নির্দেশিকা আসার আগেই কাউন্সেলিং ও নথি যাচাই করে ৩০০ জনের ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ হয়ে গিয়েছে। বাকিদের জন্য মেধা তালিকা টাঙিয়ে ভর্তি করা হবে বলে কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে। কলেজের এক কর্তার কথায়, “আমাদের তো এ রকম তালিকা না টাঙালেও হত, কিন্তু সরকারি সিদ্ধান্ত মানতে গিয়ে ভর্তি পিছিয়ে যাচ্ছে।’’