Asansol Jilla Hospital

ভাঁড়ার শূন্য, রোগীকে রক্ত দিলেন চিকিৎসক

শ্রীরূপাদেবী জানান, বালিকার অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। পরীক্ষা করে দেখা যায়, তার রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা মাত্র তিন মিলিগ্রাম। দ্রুত রক্ত দেওয়া না হলে, যে কোনও সময়ে অঘটন ঘটার সম্ভাবনা ছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০২০ ০০:৩৬
Share:

রক্ত দিচ্ছেন শ্রীরূপা ভট্টাচার্য। নিজস্ব চিত্র।

ও-পজ়িটিভ রক্তের ভাঁড়ার শূন্য। এই অবস্থায় থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত এক বালিকাকে নিজেই রক্ত দিয়ে সুস্থ করে তুললেন আসানসোল জেলা হাসপাতালের শিশুবিশেষজ্ঞ শ্রীরূপা ভট্টাচার্য।

Advertisement

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সকালে জেলা হাসপাতালে শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে ভর্তি হয়েছিল রানিগঞ্জের সিহারসোলের বাসিন্দা বছর সাতেকের এক বালিকা। তাকে পরীক্ষা করতে এসে শিশুবিশেষজ্ঞ শ্রীরূপাদেবী বুঝতে পারেন, মেয়েটি থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত। দ্রুত রক্ত দেওয়া প্রয়োজন।

শ্রীরূপাদেবী জানান, বালিকার অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। পরীক্ষা করে দেখা যায়, তার রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা মাত্র তিন মিলিগ্রাম। দ্রুত রক্ত দেওয়া না হলে, যে কোনও সময়ে অঘটন ঘটার সম্ভাবনা ছিল। দ্রুত বালিকাটির বাবা বুধি মাঝিকে স্লিপ লিখে দিয়ে ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে রক্ত আনতে বলা হয়। ওই ডাক্তার বলেন, ‘ঘণ্টাখানেক কেটে যাওয়ার পরেও মেয়েটির বাবা রক্ত নিয়ে আসছেন না দেখে চিন্তায় পড়ে যাই। এ দিকে, মেয়েটির অবস্থা ক্রমশ খারাপের দিকে যাচ্ছিল। হঠাৎ দেখি, ওয়ার্ডের এক কোনায় দাঁড়িয়ে কাঁদছেন বালিকাটির বাবা। জিজ্ঞাসা করায় তিনি জানালেন, ব্লাড ব্যাঙ্কে ও-পজ়িটিভ গ্রুপের রক্ত নেই। আমারও ও-পজ়িটিভ গ্রুপের রক্ত। আর অপেক্ষা না করে নিজেই রক্ত দিয়ে মেয়েটি সুস্থ করে তুলি। ভাল লাগছে।’’

Advertisement

ওই চিকিৎসকের এই কাজকে কুর্নিশ জানিয়েছেন তাঁর সহকর্মী চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরাও। ১৯৯৩ সালে আসানসোলের একটি স্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ হয়ে শ্রীরূপাদেবী জয়েন্ট এন্ট্রান্স দিয়ে মেডিক্যালে সুযোগ পান। কলকাতা-সহ রাজ্য, জেলার বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরে, তিনি ২০১৬ সালে আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়োগ পান। মঙ্গলবার তাঁর এই কাজে খুশি হাসপাতাল সুপার নিখিলচন্দ্র দাস।

কিন্তু জেলা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের এমন অবস্থা কেন? সুপার নিখিলবাবু বলেন, ‘‘খবর পেয়েছি, ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্তের সঙ্কট চলছে। আরও বেশি করে শিবির করার আহ্বান জানানো হচ্ছে।’’ আসানসোলে রক্ত সঙ্কটের কথা মেনে নিয়েছেন ব্লাড ব্যাঙ্কের চিকিৎসক সঞ্জিত চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশুদের জন্য পর্যাপ্ত রক্তের জোগান রাখা হয়। তবে মঙ্গলবার ও-পজ়িটিভ গ্রুপের রক্ত একেবারেই ছিল না।’’ তিনি জানিয়েছেন, এ দিন প্রায় ২৫ জন থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশুকে রক্ত দেওয়া হয়েছে। এই মুহূর্তে এবি পজ়িটিভ, ও-পজ়িটিভ, এ-পজ়িটিভ গ্রুপের রক্তের আকাল চলছে। জেলার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলিকে শিবির করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement