চিকিৎসায় গাফিলতিতে শিশু মৃত্যুর অভিযোগে আশিস কোণার নামে এক চিকিৎসককে গ্রেফতার করল দুর্গাপুর থানার পুলিশ। শুক্রবার, বেনাচিতির কাইজার মোড়ের কাছের ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত শিশুর নাম ইয়াসিতা মিস্ত্রি (৫)। শনিবার আশিসবাবুর জামিনের আবেদন মঞ্জুর করে আদালত।
আকবর রোডের বাসিন্দা দীপক মিস্ত্রির মেয়ে ইয়াসিতা প্রতিদিনের মতো শুক্রবারও দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি স্কুলে পড়তে যায়। দীপকবাবু জানান, স্কুল থেকে ফোন আসে, মেয়ে বমি করছে। দীপকবাবু ও তাঁর স্ত্রী টুটুদেবী ইয়াসিতাকে স্কুল থেকে বাড়ি নিয়ে আসেন। মেয়ে খানিকটা সুস্থ হয় বলেও দাবি। এরপর ওই দিন বিকেল ৫টা নাগাদ মেয়েকে নিয়ে আশিস কোনারের ক্লিনিকে যান দীপকবাবু ও তাঁর স্ত্রী। পরিবারের দাবি, সেখানে আশিসবাবু ইয়াসিতাকে দেখে নেবুলাইজার দেওয়ার জন্য তাঁর সহকারী তমাল পাণ্ডের কাছে পাঠান। দীপকবাবুর অভিযোগ, ‘‘মুখে একটি ‘মাস্ক’ লাগিয়ে ওষুধ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই মেয়ে ছটফট করতে থাকে ও ‘মাস্ক’টি খোলার চেষ্টা করতে থাকে। চিকিৎসক ও তাঁর সহকারী তমালবাবু যদিও মাস্ক খোলেননি।’’ মিনিট খানেকের মধ্যেই ইয়াসিতা নেতিয়ে পড়ে। ইয়াসিতার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে আশিসবাবু জানান সে মৃত।
ঘটনার খবর চাউর হতেই অন্যান্য রোগীর আত্মীয় ও স্থানীয় বাসিন্দারা চিকিৎসককে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। পুলিশ এসে আশিসবাবুকে আটক করে। পরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। তবে সহকারী তমালবাবু যদিও পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে চম্পট দেয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। তার খোঁজে তল্লাশি চলছে। দুর্গাপুর থানার পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তমালবাবুর নেবুলাইজার দেওয়ার মতো প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ নেই। এ ভাবে কাজ করানো আইন বিরুদ্ধ বলেই পুলিশের দাবি।
দীপকবাবু ও টুটুদেবীর একমাত্র সন্তান ইয়াসিতা। টুটুদেবী এ দিন অভিযোগ করেন, ‘‘চিকিৎসক ও সহকারীর গাফিলতিতেই মেয়ে মারা গেল। উপযুক্ত শাস্তির দাবি করছি।’’ দীপকবাবুর আক্ষেপ, ‘‘মেয়েটা রাখি কিনতে চেয়েছিল। বলেছিলাম, ডাক্তারের কাছে দেখিয়ে এসে রাখি কিনে দেব। তা আর হল না।’’