বড়দিনে উপচে পড়া ভিড়। অভিযোগ, অনেকেই মাস্ক পরেননি। শনিবার দুর্গাপুরে সিটি সেন্টারের একটি চার্চে। ছবি: বিকাশ মশান
প্রত্যাশা মতোই আসানসোল, দুর্গাপুর-সহ পশ্চিম বর্ধমানের নানা প্রান্তের পর্যটনস্থলগুলিতে ভিড় দেখা গেল শনিবার। কার্যত শুক্রবার রাত থেকেই রাস্তায় দেখা যায় মানুষের ভিড়। কিছু ক্ষেত্রে মাস্ক ছাড়াই দেখা গিয়েছে জনতাকে। তবে জেলা জুড়েই যথেষ্ট পুলিশি ব্যবস্থা নজরে পড়েছে বলে মত নাগরিকদের একাংশের। পাশাপাশি, ডিজে-র তাণ্ডব থেকেও মিলেছে ‘মুক্তি’।
শুক্রবার থেকেই পশ্চিমবঙ্গ-ঝাড়খণ্ড সীমানায় ডুবুরডিহি, ডিসেরগড়, রূপনারায়ণপুরের বিহার রোড, বারাবনির রুনাকুড়া ঘাট লাগোয়া এলাকায় যানবাহন পরীক্ষা করতে দেখা যায় পুলিশকে। আসানসোলে মাইথন, চিত্তরঞ্জনের অজয় লাগোয়া এলাকা, বার্নপুরের নেহরু পার্ক, জামুড়িয়ার গুঞ্জন পার্কে সকাল থেকেই ভিড় দেখা যায়।
মাস্ক ছাড়া কাউকেই পার্কে ঢুকতে দেওয়া হয়নি, জানান নেহরু পার্কের ম্যানেজার বিজয় মণ্ডল। শনিবার এসিপি (পশ্চিম) সুকান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল মাইথনের বিস্তীর্ণ এলাকা ঘুরে প্রায় ২৫ জন মত্ত ব্যক্তিকে আটক করে। মোটরবাইক দাঁড় করিয়েও পুলিশের চেকিং দেখা গিয়েছে। ডিসিপি (পশ্চিম) অভিষেক মোদী বলেন, “ইংরেজি নববর্ষ পর্যন্ত শিল্পাঞ্চল জুড়ে সমস্ত রাস্তায় নাকা চেকিং চলবে। উদ্যান ও পর্যটনস্থলগুলিতেও পুলিশের বাড়তি নজর থাকবে।”
এ দিকে, দুর্গাপুর ব্যারাজ, হুচুকডাঙা, দেউল-সহ নানা এলাকাতেও অনেকে পিকনিক করতে এসেছিলেন। বিকেল থেকে দুর্গাপুরের সিটি সেন্টার এলাকার একটি পার্কে ভিড় বাড়তে শুরু করে। চার্চ, শপিং মলেও ভিড় দেখা যায়। তবে অনেকেই মাস্ক পরেননি বলে অভিযোগ। ব্যারাজে পিকনিক করতে আসা লোকজনকে বাধ্যতামূলক ভাবে শালপাতা ব্যবহার করতে হয়েছে। বীরভানপুর ঘাটে বিপর্যয় ব্যবস্থাপন দফতরের কর্মীদের মোতায়েন করা হয়েছিল।
তবে বড়দিনে বেশ কিছু প্রাপ্তি হয়েছে বলে জানাচ্ছেন নাগরিকেরা। দুর্গাপুর থেকে আসানসোলে পিকনিক করতে আসা মুনমুন ঘোষ, কল্পনা রাউতেরা বলেন, “ডিজে-র তাণ্ডব ছিল না। এর থেকে ভাল আর কিছুই হতে পারে না।” পাশাপাশি, লাইফ জ্যাকেট ছাড়া, কাউকেই ব্যারাজে নৌকাবিহার করতে দেননি পুলিশকর্মীরা। সেই সঙ্গে, ব্যারাজে পানাগড় থেকে এসেছিলেন শঙ্খ দে, শিখা দত্তরা। তাঁরা বলেন, “ব্যারাজে তেমন কোনও কোলাহল নেই। এটা খুবই ভাল লাগছে।” একই চিত্র ছিল হুচুকডাঙাতেও। ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর অরবিন্দ নন্দী বলেন, “এলাকা যাতে নোংরা না করা হয়, সে বিষয়ে প্রত্যেকের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে।”
জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) এস অরুণ প্রসাদ বলেন, “কারও কাছে মদের বোতল, ডিজে, প্লাস্টিকের গ্লাস, পাতা থাকলে, তা জমা নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি, যথাসাধ্য কোভিড-বিধিও মেনে চলা হয়েছে।” তবে রাজ্যের কোভিড মনিটরিং কমিটির পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমানের কো-অর্ডিনেটর সমরেন্দ্রকুমার বসু বলেন, “অনেকেই মাস্ক পরছেন না, এটা চিন্তার। প্রশাসনকে আরও কড়া হাতে বিষয়টি মোকাবিলা করতে হবে। কিন্তু সবার আগে জনতাকে সচেতন হতে হবে।”