Bardhaman

Nursing home: মাইক বাজানোর প্রতিবাদ, নার্সিংহোমে ‘হামলা-মার’

নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের দাবি, দুপুর থেকে বেশ কয়েক বার মাইকের আওয়াজ কমাতে বলা হয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০২২ ০৬:৪০
Share:

ভাঙা কাচ। নিজস্ব চিত্র।

তারস্বরে মাইক বাজানোর প্রতিবাদ করায় একটি নার্সিংহোমে ভাঙচুর ও সেখানকার কর্মীদের মারধর করার অভিযোগে গ্রেফতার হলেন চার যুবক। বুধবার রাতে বর্ধমান শহরের ঘোরদৌড়চটির ঘটনা। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। আহতদের মধ্যে দুই মহিলা-সহ তিন জনকে বর্ধমান মেডিক্যালে ভর্তি করে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ চার জনকে গ্রেফতার করে।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতেরা হলেন ওই এলাকার বাসিন্দা সুজয় কোঁড়া, সঞ্জু কোঁড়া, সুশান্ত কোঁড়া। আর এক ধৃত চঞ্চল কোঁড়ার বাড়ি দেওয়ানদিঘিতে। বৃহস্পতিবার ধৃতদের বর্ধমান আদালতে তোলা হয়। নার্সিংহোমের মালিক হলফনামা দিয়ে ‘ভুল বোঝাবুঝি’ মিটে গিয়েছে বলে আদালতে এ দিন বিকেলে জানান। বিচারক ধৃত চার জনকে শর্তাধীন জামিন দেন।

পুলিশ জানিয়েছে, ওই ঘটনাকে ঘিরে দু’টি পৃথক অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। একটি অভিযোগ করেন নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ। অন্যটি করেন ওই নার্সিংহোমে ভর্তি থাকা এক রোগিণীর ছেলে সুকুমার পাল। সুকুমারের অভিযোগ, নার্সিংহোমের পিছনে বুধবার দুপুর আড়াইটে থেকে তারস্বরে মাইক বাজানো চলছিল। তাতে ভর্তি থাকা রোগীদের অসুবিধা হচ্ছিল। সে জন্য রাতে তিনি মাইকের শব্দ কমাতে বললে, তাঁকে উল্টে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।

Advertisement

নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের দাবি, দুপুর থেকে বেশ কয়েক বার মাইকের আওয়াজ কমাতে বলা হয়েছিল। কয়েক বার সে কথা মানা হলেও সন্ধ্যার পর থেকে মাইকের আওয়াজ ছিল লাগামছাড়া। অভিযোগ, হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত রোগীদের এক জন নার্সিংহোম ছেড়ে অন্যত্র ভর্তি হন। বাকিরাও সে পথ ধরতে শুরু করেছিলেন। সে সময় দলবেঁধে নার্সিংহোমের কর্মীরা গিয়ে মাইকের আওয়াজ বন্ধ করে বলেন।

নার্সিংহোমের কর্মকর্তা আজিজুল হক মোল্লার দাবি, “প্রতিবাদ করতেই ওই চার জন অভিযুক্তের নেতৃত্বে ৪০-৫০ জনের একটি দল নার্সিংহোমে ঢুকে ‘হামলা’ চালায়। ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে। লোহার রড, লাঠি নিয়ে ভিতরে ঢুকে চেয়ার, জানলার কাচ ভাঙচুর করে। নার্সিংহোমের তিন জন কর্মীকে মারধর করা হয়। তাঁদের বর্ধমান মেডিক্যালে ভর্তি করাতে হয়েছে।’’ পরে তিনি ওই হলফনামা দেওয়ার প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘জেল হেফাজতে যেতে হবে শুনে পাড়ার সবাই আমাদের কাছে এসে ক্ষমা চান। তাঁরা গরিব। কান্নাকাটি করছিলেন নার্সিংহোমের সামনে। সে জন্য আদালতকে হলফনামা দিয়ে ‘ভুল বোঝাবুঝি’ মিটে গিয়েছে বলে জানিয়েছি।’’

পুলিশ জানিয়েছে, আহতেরা হলেন নার্সিংহোমের ম্যানেজার মুস্তাক আলি, দুই মহিলা কর্মী সোনালি খাতুন ও সাবিরা মালিক। সোনালি দাবি করেন, “জোরে মাইক বাজানোর প্রতিবাদ করতে গেলে ছেলেগুলো বলে, ‘টাকা খরচ করে মাইক, সাউন্ডবক্স ভাড়া করেছি, আস্তে গান শোনার জন্য? বেশ করব, জোরে মাইক বাজাব’। এ দিকে রোগীরা অস্থির হচ্ছেন দেখে সবাই মিলে নিষেধ করতে গেলে, ওরা নার্সিংহোমে ‘হামলা’ চালিয়ে আমাদের কয়েক জনকে মারধর করে।’’

খবর পেয়ে রাস্তায় টহল দেওয়া পুলিশের গাড়ি নার্সিংহোমের সামনে পৌঁছে যায়। পুলিশ দেখে ‘হামলাকারীরা’ পালায়। তাড়া করে ওই চার জনকে ধরা হয়।

পুলিশের দাবি, প্রত্যেকেই নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ছিল। পুলিশের দাবি, ওই এলাকায় বেশ কয়েকটা বেআইনি মদের ঠেক রয়েছে। সেগুলিকে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ধৃতদের আইনজীবী দাবি করেছেন, তাঁর মক্কেলরা ওই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement