নানা মণ্ডপে যাচ্ছেন ঢাকিরা। কালনা স্টেশনে। ছবি: জাভেদ আরফিন মণ্ডল।
পুজো এলেই ওদের ডাক পরে ভিন্ রাজ্যে। পুজোর দিনগুলিতে ওদের কাজ থাকে ভিন্ রাজ্যে বসবাস করা বাঙালিদের ঢাক বাজিয়ে আনন্দ দেওয়া। ইচ্ছা থাকলেও এলাকার পুজোয় ওদের আনন্দ করা হয়ে ওঠে না। ওরা কালনা শহরে বারুইপাড়ার এক ঝাঁক শিল্পী।
মঙ্গলবার দুপুরে এক কাঁধে বড় বড় ঢাক, অন্য কাঁধে খাবার সহ নানা সরঞ্জামের পোঁটলা নিয়ে ওরা ২২ জন রওনা হলেন। কেউ যাবেন মহারাষ্ট্রের পুণের মণ্ডপে। আবার কেউ পৌঁছবেন কাদিবালি, কান্দারা, সান্তাকুজ, আন্ধেরির মতো এলাকায়। প্রায় পাঁচ দশক ধরে ঢাক বাজিয়ে আসছেন গোপাল দাস। যে কোনও কথাকে তিনি ঢাকের তালে বাজিয়ে দিতে পারেন। অম্বিকা কালনা স্টেশনে ট্রেন ধরার আগে গোপাল বলেন, ‘‘পুজোর মাস চারেক আগে থেকে ভিন্ রাজ্যের বিভিন্ন মণ্ডপ থেকে ঢাক বাজানোর ডাক আসে। অগ্রিম টাকাও পাঠিয়ে দেন উদ্যোক্তারা। তখন ট্রেনের টিকিটও কেটে নেওয়া হয়।’’ ছেলে প্রসেনজিৎ দাসও দীর্ঘ দিন ধরে ভিন্ রাজ্যে পুজোয় ঢাক বাজিয়ে আসছেন।
ভিন্ রাজ্যমুখী শিল্পীরা জানালেন, পুজোর আগে বাড়ি থেকে বেরোলে পরিবারের লোকজনের কষ্ট হয়ই। তবে মণ্ডপে পৌঁছে গিয়ে যখন ঢাকে কাঠি দেওয়া শুরু করেন, তখন আর অন্য কিছু মনে থাকে না। কার্তিক দাস নামে এক শিল্পী জানান, ‘‘নানা রাজ্যে ঢাক বাজিয়েছি। এখনও বাজিয়ে চলেছি। ভিন্ রাজ্যের বাঙালি পুজো মণ্ডপে নিষ্ঠা সহকারে পুজো হয়ে। ভাল বাজাতে পারলে বাড়তি বকশিসও মেলে।’’
ঢাকিদের অনেকেরই দাবি, দুর্গাপুজো শেষ হলে অনেকেই এলাহাবাদ, বিলাসপুরে ঢাক বাজাতে ছুটতে হবে। এই সময় অনেকেই পরিবারের লোকজনদের নতুন জামাকাপড় কিনে দিতে পারেন না। বাড়ি ফেরার পরে তবে সারেন কেনাকাটা।