চলছে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র
বারবার অভিযান চালানোর পরেও গ্রাম থেকে চোলাইয়ের ভাটি উঠছে না কেন, অভিযোগ তুলে আবগারি দফতরের কর্মীদের দীর্ঘক্ষণ ঘেরাও করে রাখার অভিযোগ উঠেছে একাংশ গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে। শুক্রবার দুপুরে বর্ধমান ২ ব্লকের নবস্থা ২ পঞ্চায়েতের ভৈটা গ্রামের ঘটনা। খবর পেয়ে মেমারি থানার পুলিশ গিয়ে ওই দুই কর্মীকে উদ্ধার করে। পুলিশ চলে যাওয়ার পরে দাসপাড়া-সহ তিনটে পাড়ার ৭০-৮০ জন মহিলা পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়ি ঘেরাও করেন বলে অভিযোগ। ফের পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে।
জেলা আবগারি দফতরের সুপারিন্টেন্ডেন্ট (পূর্ব বর্ধমান) তপনকুমার মাইতি বলেন, “ওই গ্রামের কয়েকটি পাড়ায় তল্লাশিতে গিয়েছিলেন দফতরের কর্মীরা। কিছু জিনিস বাজেয়াপ্ত করে ফেরার সময়ে গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশ তাঁদের ঘেরাও করে রাখেন। ঘণ্টাখানেক পরে মেমারি থানার পুলিশ গিয়ে কর্মীদের উদ্ধার করে।’’ মেমারি থানার পুলিশের দাবি, গত সপ্তাহে ওই গ্রাম থেকে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁদের কাছ থেকে ৫০০ লিটারের মতো চোলাই নষ্ট করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এ দিন বেলা পৌনে ১২টা নাগাদ আবগারি দফতরের কর্মীদের ঘেরাও করে গ্রামবাসীরা দাবি করেন, আশপাশের গ্রামে চোলাই কারবার বন্ধ হয়ে গিয়েছে। অথচ, ভৈটা গ্রামে রমরম করে চলছে ব্যবসা। বারবার অভিযান চালিয়েও কারবার বন্ধ হচ্ছে না কেন, সে প্রশ্নও ওঠে। এর মাঝেই গ্রামের বাসিন্দারা জড়ো হয়ে আবগারি দফতরের গাড়ি ‘আটকে’ রাখেন এবং দু’জন কর্মীকে ঘেরাও করে রাখা হয় বলেও অভিযোগ।
গ্রামের বাসিন্দা মৃত্যুঞ্জয় ঘোষ, রবিন মালিকদের ক্ষোভ, “অভিযানের নামে আবগারি দফতর কী করে সবাই জানে। সে জন্যই চোলাইয়ের কারবার বন্ধ হয় না। চোলাইয়ের গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে দু’টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র এবং একটি স্কুলে পড়ুয়ারা যেতে চাইছে না।’’ ওই গ্রামে নিয়মিত ভাটি চালিয়ে চোলাই তৈরিতে কারা ‘যুক্ত’, সে তালিকাও আবগারি দফতরের হাতে তুলে দেন তাঁরা।
পুলিশ এসে সরকারি কর্মীদের উদ্ধার করে পরেও ক্ষোভ থামেনি। গ্রামের ৭০-৮০ জন মহিলা পঞ্চায়েত সদস্য ঝুমা ঘোষের বাড়ি ‘ঘেরাও’ করে রাখেন। পঞ্চায়েত সদস্যের পরিবারের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের দীর্ঘক্ষণ বাদানুবাদ হয়। ঝুমা ঘোষ বলেন, “মদ খেয়ে গ্রামের দু’জন যুবক জলে ডুবে মারা গিয়েছেন। আইসিডিএস কেন্দ্র উঠে যাওয়ার মুখে। চোলাই বন্ধ করার জন্য বলতেই হবে।’’