দুর্গাপুরে বুধবার। নিজস্ব চিত্র।
কর্মরত অবস্থায় মৃত শ্রমিকদের নিকটাত্মীয়দের চাকরিতে নিয়োগের জন্য নির্দিষ্ট সংখ্যা নির্ধারণ করেছে দুর্গাপুর প্রজেক্টস লিমিটেড (ডিপিএল) বোর্ড। বুধবার সংস্থা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করে এমনই দাবি করেছেন দুর্গাপুর পশ্চিমের বিধায়ক বিশ্বনাথ পাড়িয়াল। তবে বিধায়ক এবং প্রায় দেড় মাস ধরে আন্দোলনকারীদের দাবি, চাকরি দিতে হবে সমস্ত ‘দাবিদার’কেই।
প্রায় দেড় মাস ধরে চাকরির দাবিতে ডিপিএল-এর গেটের সামনে কর্মরত অবস্থায় মৃত কর্মীদের নিকটাত্মীয়েরা অবস্থান-বিক্ষোভ করছেন। বুধবার তাঁরা ডিপিএল-এর প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখান। সেখানেই পৌঁছন দুর্গাপুর পশ্চিমের বিধায়ক বিশ্বনাথ পাড়িয়াল। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, ‘‘আন্দোলনকারীদের দাবির সঙ্গে আমি সহমত। আমি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও নজরে এনেছি বিষয়টি।’’ এর পরেই তাঁর দাবি, ‘‘ডিপিএল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ডিপিএল বোর্ড কত জনকে চাকরি দেওয়া হবে, সে বিষয়ে একটা সংখ্যা নির্দিষ্ট করা হয়েছে। আমি সেই সংখ্যা বাড়ানোর আর্জি জানিয়েছি।’’ তবে সে সংখ্যা কত, তা ভেঙে বলেননি বিধায়ক।
ঘটনাচক্রে, চাকরির দাবিতে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি নিয়ে প্রায় দেড় মাস ধরে চলছে এই বিক্ষোভ। বিক্ষোভকারীদের দাবি, ২০১২-য় শেষ বার কর্মরত অবস্থায় মৃত কর্মীদের নিকটাত্মীয়দের চাকরি দেওয়া হয়েছিল ডিপিএল-এ। এখনও প্রায় দু’শো জন রয়েছেন, যাঁরা চাকরি পাননি। ২০১২ থেকেই চলছে আন্দোলন। সাম্প্রতিক অচলাবস্থা কাটাতে কিছু দিন আগে মহকুমাশাসক (দুর্গাপুর) অর্ঘ্যপ্রসূন কাজি বিক্ষোভকারী ও ডিপিএল কর্তৃপক্ষকে নিয়ে বৈঠক করেন। অবিলম্বে বিক্ষোভ বন্ধ করার জন্য ডিপিএল কর্তৃপক্ষ এবং বিক্ষোভকারীদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার আর্জি জানান। কিন্তু তাতেও
ফল হয়নি।
তবে এ ভাবে ‘সংখ্যা নির্ধারণ’ নিয়ে আপত্তির কথা জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘আমাদের সবাইকে চাকরি দিতে হবে। কয়েকজনকে দিয়ে বাকিদের পরে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি মানব না আমরা। নিশ্চিত সময় বলতে হবে। নির্বাচন ঘোষণার আগে তা জানাতে হবে।’’ বিধায়ক বিশ্বনাথবাবুরও দাবি, ‘‘অতীতে যখন হয়েছে তখন আমি চাই, কর্মরত অবস্থায় মৃত প্রায় দু’শো জন নিকট আত্মীয়কেই চাকরির ব্যবস্থা করে দেওয়া হোক।’’
ডিপিএল-এর জনসংযোগ আধিকারিক স্বাগতা মিত্রের প্রতিক্রিয়া, ‘‘সহানুভূতির সঙ্গে আন্দোলনকারীদের বিষয়টি দেখা হচ্ছে। ডিপিএল-এর তরফে যা করণীয় তা করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। নিশ্চিত সময় দেওয়ার বিষয়ে এখান থেকে কিছু বলা সম্ভব নয়। সেটা একমাত্র ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষই
বলতে পারবেন।’’