পথ অবরোধ বিধাননগরে। নিজস্ব চিত্র।
ব্যারাজের লকগেট মেরামত হয়ে গিয়েছে। শহরের বেশির ভাগ জায়গায় জলও এসেছে শনিবার। কিন্তু বিধাননগর হাউজ়িং কলোনিতে জল না আসায় বাসিন্দারা রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন। শনিবার সেখানেই বিতণ্ডায় জড়ালেন তৃণমূল কাউন্সিলর এবং এক বিজেপি নেতা। তবে পুরসভার দাবি, রাত পর্যন্ত ওই এলাকা-সহ পুর-এলাকার সর্বত্র জল সরবরাহ স্বাভাবিক হয়েছে।
বিধাননগর হাউজ়িং কলোনির বাসিন্দারা এ দিন জলের দাবিতে ইন্ডিয়ান রিজার্ভ ব্যাটালিয়নের ক্যাম্পের সামনের রাস্তায় অবরোধ শুরু করেন। শনিবার সকালে তাঁদের অভিযোগ, ব্যারাজ-কাণ্ডের জেরে এলাকায় জল সরবরাহ করা হল না গত পাঁচ দিন ধরে। মাত্র এক দিন দেখা মিলেছে পুরসভার ট্যাঙ্কারের। এই পরিস্থিতিতে বাসিন্দারা জানান, দ্রুত জলের ব্যবস্থা না হলে রাস্তা থেকে তাঁরা উঠবেন না।
ইতিমধ্যে ঘটনাস্থলে যান স্থানীয় ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর দীপেন মাজি। তিনি বিক্ষোভকারীদের পরিস্থিতির কথা বোঝাতে গেলে, তাঁকে ঘিরেই শুরু হয় বিক্ষোভ। ততক্ষণে বিক্ষোভে যোগ দেন বিজেপি নেতা দেবাশিস রায়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর দীপঙ্কর লাহা তাঁকে দেখে প্রশ্ন করেন, ‘‘আপনি তো হাউজ়িং কলোনির বাসিন্দা নন। তা হলে আপনি এখানে কেন?’’ দেবাশিসবাবু পাল্টা কিছু একটা বলতে গেলে তাঁকে থামিয়ে দীপঙ্করবাবু ফের বলেন, ‘‘ঘোলা জলে রাজনীতি করতে নামবেন না। এলাকা থেকে এখনই চলে যান।’’ অভিযোগ, এই সময়ে দেবাশিসবাবুকে দীপঙ্করবাবু ধাক্কাও মারেন। অবরোধ, বিক্ষোভের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় বিধাননগর ফাঁড়ির পুলিশ। পুলিশের হস্তক্ষেপে শেষ পর্যন্ত আধ ঘণ্টা পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
যদিও ধাক্কা মারার অভিযোগ অস্বীকার করেন দীপঙ্করবাবু। তাঁর অভিযোগ, ‘‘এই সময় বিজেপি নেতা বাইরে থেকে এসে রাজনীতি করে পরিস্থিতি জটিল করতে চাইছেন। তাই তাঁকে নিজের জায়গায় ফিরে যেতে বলি।’’ বিজেপির জেলা সম্পাদক অভিজিৎ দত্ত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘‘সঙ্কট মোকাবিলায় পুরসভা সম্পূর্ণ ব্যর্থ। অবরোধে আমাদের দলের সমর্থকেরাও ছিলেন। তাই দেবাশিসবাবু গিয়েছিলেন। আসলে ব্যর্থতা ঢাকতে এমন ঘটনা ঘটিয়েছে তৃণমূল।’’
এ দিন সকালে শহরের বেশির ভাগ এলাকায় জল পৌঁছয়নি। তবে বিকেল পর্যন্ত বিধাননগরের ওই এলাকা-সহ পুর-এলাকায় জল পৌঁছেছে বলে জানান মেয়র পারিষদ (জল সরবরাহ) পবিত্র চট্টোপাধ্যায়। তবে এলাকাবাসীর অভিযোগ, যা জল এসেছে, তা পর্যাপ্ত ছিল না। যদিও এমএএমসি টাউনশিপে একাংশে দিনভর জল আসেনি বলে খবর। সেখানে জল সরবরাহের দায়িত্বপ্রাপ্ত ডিপিএলের জনসংযোগ আধিকারিক স্বাগতা মিত্র জানান, জলাধারে জল পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর দেবব্রত সাঁই বলেন, ‘‘সব এলাকায় পাঠানোর মতো পর্যাপ্ত জল জালাধারে ছিল না। তাই দিনে জল দেওয়া যায়নি। তবে রাত থেকে জল দেওয়া শুরু হয়েছে।’’
পাশাপাশি, পুরসভা দাবি করেছে, রাত পর্যন্ত শিল্পক্ষেত্রেও জল সরবরাহ স্বাভাবিক হয়েছে। শনিবার সকাল থেকে ডিপিএলে উৎপাদন শুরু হয়েছে বলে জানান সংস্থার জনসংযোগ আধিকারিক স্বাগতাদেবী।