শুক্রবার আসানসোলে। নিজস্ব চিত্র।
ফের সিএনজি-র আকাল দেখা দিয়েছে বলে অভিযোগ আসানসোলে। এর প্রতিবাদে শুক্রবার সকাল ১০টা নাগাদ অটোচালকদের একাংশ সেনর্যালে রোড লাগোয়া একটি পেট্রল পাম্পে বিক্ষোভ দেখান। এর জেরে কিছুক্ষণ যান চলাচলও ব্যাহত হয়। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। পরে জেলাশাসকের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। শুরু হয় গ্যাস সরবরাহ।
বারবার এ ভাবে গ্যাসের অভাব দেখা দেওয়ায় ক্ষুব্ধ চালকেরা এর স্থায়ী সমাধানের দাবি তুলেছেন। সোমবারের মধ্যে স্থায়ী সমাধানের ইঙ্গিত না মিললে লাগাতার আন্দোলনের পথে যাবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শহরের অটোচালকেরা। জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) পূর্ণেন্দু মাজি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন।
অটোচালকদের একাংশের অভিযোগ, এ দিন সকাল থেকে আসানসোল মহকুমা জুড়ে সিএনজি-র আকাল শুরু হয়। শহরের দু’টি সরবরাহ কেন্দ্র থেকেই গ্যাস মিলছে না। এর পরেই সেনর্যালে রোড লাগোয়া একটি পেট্রল পাম্পে বিক্ষোভ শুরু হয়। প্রায় পাঁচশো অটো রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকায় সাময়িক যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিক্ষোভের নেতৃত্বে থাকা ‘আসানসোল মোটর ট্রান্সপোর্ট ইউনিয়ন’-এর আহ্বায়ক রাজু অহলুওয়ালিয়া জানান, গ্যাসের অভাবে চালকেরা গাড়ি চালাতে পারছেন না। রোজগার বন্ধ হওয়ায় সংসার চালানো দায় হয়েছে। রাজুবাবু বলেন, ‘‘প্রায় দিনই এই অবস্থা হচ্ছে। সোমবারের মধ্যে স্থায়ী সমাধানের দাবি জানিয়েছি পুলিশ-প্রশাসনের কাছে।’’ এ দিন সকালে এই পাম্পে গ্যাস ভরতে আসেন বিনোদ রায় নামে এক অটোচালক। তিনি বলেন, ‘‘দু’দিন ধরে ঘুরেও গ্যাস পাচ্ছি না। এ দিনও গ্যাস না পেলে অনাহারে দিন কাটতে হবে।’’ প্রায় ২ ঘণ্টা এই অবস্থা চলার পরে পরিস্থিতি সামাল দিতে আসেন জেলাশাসক পূর্ণেন্দুবাবু। তাঁর দাবি, ‘‘কিছু সমস্যা ছিল। তা মিটে গিয়েছে। সরবরাহ স্বাভাবিক করার ব্যবস্থা হচ্ছে।’’
জেলা পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, আসানসোল মহকুমায় প্রায় সাড়ে চার হাজার সিএনজি চালিত অটো রয়েছে। দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার প্রায় ৪৫টি সিএনজি চালিত দূরপাল্লার বাস আসানসোল ডিপো থেকে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে যাতায়াত করে। এ ছাড়া, আরও কয়েক হাজার ব্যক্তিগত ছোটো গাড়িও সিএনজিতে চলাচল করে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই মহকুমায় তিনটি রাষ্ট্রায়ত্ত পেট্রল পাম্প থেকে সিএনজি সরবরাহ করা হয়। কিন্তু যাত্রী অটোচালকদের অভিযোগ, বেশকিছু দিন ধরে শুধুমাত্র সেনর্যালে রোড লাগোয়া পাম্প থেকেই গ্যাস মিলেছে। বাকি দু’টির মধ্যে আসানসোলের ঊষাগ্রাম ও কুলটির নিয়ামতপুরের কেন্দ্র দু’টি বন্ধ আছে। গাড়ি চালকদের অভিযোগ, গ্যাসের অভাবে রাস্তায় গাড়ি নামানো যাচ্ছে না। সাধারণ যাত্রীদের অভিযোগ, পর্যাপ্ত গ্যাসের অভাবে অটোর সংখ্যা কমে যাওয়ায় গন্তব্যে পৌঁছতে সমস্যা হচ্ছে। সকলেই এর স্থায়ী সমাধানের দাবি তুলেছেন।
প্রশাসনিক কর্তাদের কথায়, স্থায়ী সমাধানের জন্য বেশি সংখ্যায় গ্যাস সরবরাহ কেন্দ্র খুলতে হবে। জেলাশাসক পূর্ণেন্দুবাবু বলেন, ‘‘বরাকরে দু’টি নতুন কেন্দ্র খোলা হচ্ছে। আশা করি এই সমস্যা দ্রুত মিটে যাবে।’’