বরাকরের বাজারে জিনিসপত্রের দাম খতিয়ে দেখছে টাস্ক ফোর্স। নিজস্ব চিত্র
বাজারে-বাজারে টাস্ক ফোর্সের অভিযানই সার। কিছুতেই আলু এবং অন্য আনাজের দর কমছে না শিল্পাঞ্চলের নানা বাজারে, অভিজ্ঞতা এলাকাবাসীর একাংশের। এই পরিস্থিতিতে ‘সুফল বাংলা স্টল’ তৈরির দাবি জানাচ্ছেন তাঁরা। কৃষি বিপণন দফতর জানায়, আগামী ছ’মাসের মধ্যে জেলায় অন্তত চারটি এমন স্টল তৈরি করা হবে।
বুধবারও শিল্পাঞ্চলের একাধিক বাজারে অভিযান চালায় টাস্ক ফোর্স। দলের নেতৃত্বে ছিলেন কৃষি বিপণন দফতরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর দিলীপ মণ্ডল। সঙ্গে ছিলেন জেলা নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতির সচিব শুভ্রাংশু সিংহরায়, লিগ্যাল মেট্রোলজি বিভাগের অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়, ফুড সেফটি অফিসার কল্পনা যাদব ও মণিরাজ পতি। ওই দলটির সূত্রেই জানা গিয়েছে, এ দিন আসানসোল, বার্নপুর, বরাকর, রূপনারায়ণপুরের বিভিন্ন বাজারে জ্যোতি আলুর দর ছিল কেজি প্রতি ৩৪ টাকা। টোম্যাটো ৯০, পটল ৭০, ঢেঁড়শ ৬০ টাকা কেজি দরে, মাঝারি মাপের একটি ফুলকপি ৩৫-৪০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। চন্দ্রমুখী খুব একটা শিল্পাঞ্চলের বাজারে মেলে না। যদি কখনও মেলে, তবে তার দর জ্যোতি আলুর তুলনায় কেজিতে আরও পাঁচ টাকা বেশি হয়।
দিলীপবাবুর দাবি, পূর্ব বর্ধমান, বাঁকুড়া, পুরুলিয়ার হিমঘরগুলি থেকে কেজি প্রতি ২৮ টাকা দরে জ্যোতি আলু বিক্রি হচ্ছে। তাই পশ্চিম বর্ধমানে আলুর দর এমন। বিষয়টি দফতরের রাজ্য স্তরেও জানানো হয়েছে বলে জানান তিনি। অন্য আনাজের দরবৃদ্ধি প্রসঙ্গে টাস্ক-ফোর্সের সদস্যদের পর্যবেক্ষণ, টানা কয়েক দিন ঝড়-বৃষ্টির জন্য সাময়িক দর বেড়েছে।
তবে পূর্ব বর্ধমানের কালনার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক হিমঘর মালিকের দাবি, এ বার আলুর ফলন তুলনায় কম হয়েছিল। ফলে, জেলার হিমঘরগুলি পুরো ভর্তি হয়নি। তাঁর দাবি, ‘‘নতুন আলু জমি থেকে উঠতে এখনও চার মাস সময় লাগবে। অথচ, আমাদের কাছে যা আলু আছে, তাতে মাস দু’য়েক চলবে। তাই বাজারের চাহিদার সঙ্গে আলুর দরও বাড়ছে। যদিও এটা রাজ্য শুধু নয়, গোটার দেশেরই অবস্থা।’’
এই পরিস্থিতিতে অয়ন আচার্য-সহ কয়েকজন ক্রেতার দাবি, ‘‘শুনেছি, সরকার সুফল বাংলা স্টল থেকে ২৫ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করে। অন্য আনাজের দরও বাজারচলতি দরের থেকে কম। তাই জেলার নানা প্রান্তে এমন স্টল খোলা দরকার।’’
দিলীপবাবু জানান, জেলায় আগামী ছ’মাসের মধ্যে আসানসোল, অণ্ডাল, রানিগঞ্জ ও দুর্গাপুরে একটি করে স্টল খোলা হবে। এর মধ্যে আসানসোলের কোর্টবাজারে জায়গা চিহ্নিত হয়েছে। রানিগঞ্জে জেলা পরিষদের জমি নেওয়া হচ্ছে। অণ্ডালে আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ (এডিডিএ) জমি দিচ্ছে এবং দুর্গাপুরে জমি খোঁজার কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু শহরবাসীর একাংশের মতে, গোটা জেলায় চারটি মাত্র ‘সুফল বাংলার স্টল’ খুললে বিশেষ সুবিধা হবে না। তবে কৃষি বিপণন দফতরের আশ্বাস, পরে স্টলের সংখ্যা আরও বাড়ানো হতে পারে।