এই ভবনটিই দখল করার অভিযোগ উঠেছে। নিজস্ব চিত্র।
শিশু শিক্ষাকেন্দ্র, প্রাথমিক স্কুল থাকলেও মাধ্যমিক স্তরে পড়াশোনার জন্য দূরের রানিগঞ্জ শহরের হাইস্কুলে যেতে হয় বল্লভপুর পঞ্চায়েতের নূপুর গ্রাম ও লাগোয়া বেলুনিয়া গ্রামের পড়ুয়াদের। ওই দুই গ্রামের বাসিন্দাদের দাবি, কাছাকাছি একটি হাইস্কুল চালু করা হোক। সিপিএমের অভিযোগ, নূপুর গ্রামে স্কুলভবন তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু এখন তা তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়। সেটি দখলমুক্ত করে, সেখানে উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল চালুর দাবিতে সই সংগ্রহ করা শুরু হয়েছে। যদিও অভিযোগ অস্বীকারকরেছে তৃণমূল।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দুই গ্রামের পড়ুয়াদের চতুর্থ শ্রেণি উত্তীর্ণ হওয়ার পরে রানিগঞ্জ শহরের তিনটি হাইস্কুলে পড়াশোনা করতে যেতে হয়। বেলুনিয়া ও নূপুর থেকে এই স্কুলগুলির দূরত্ব যথাক্রমে প্রায় দু’-তিন কিলোমিটার এবং প্রায় সাড়ে তিন-পাঁচ কিলোমিটার। স্থানীয় বাসিন্দা মনোজ বেজ, সূর্যকান্ত পালেরা জানান, চার বছরের বেশি সময় ধরে এই রুটে ছ’টি বাস চলাচল বন্ধ। দুর্গাপুরের বেনাচিতি থেকে নূপুর হয়ে রানিগঞ্জ যাতায়াত করে একটি মিনিবাস। তবে তা স্কুলে যাতায়াতের সময়ের সঙ্গে না মেলায় পড়ুয়াদের টোটোয় চড়ে বা হেঁটে রানিগঞ্জে যেতে হয়।
বেলুনিয়া প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুকান্ত দাস জানান, রাজ্য সরকারের নিয়ম অনুযায়ী, ৩০ জন পড়ুয়া হলেই একটি শ্রেণি চালু করা যায়। দু’টি প্রাথমিক ও একটি শিশু শিক্ষাকেন্দ্র থেকে প্রতি বছর ৬০ জনেরও বেশি পড়ুয়া চতুর্থ শ্রেণি উত্তীর্ণ হয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি হয়। সুকান্তবাবুর দাবি, ‘‘অনেক দূরে হাইস্কুল হওয়ায় স্কুলছুটের ঘটনাও বাড়ছে। তাই নূপুরে একটি হাইস্কুল চালু করা দরকার।’’ নূপুর প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক সত্যজিৎ দলুই জানান, নূপুর উপরপাড়ায় হাইস্কুলের জন্য জমি জোগাড় করে ভবন তৈরি করা হয়েছিল। এ প্রসঙ্গে, সিপিএম নেতা মলয়কান্তি মণ্ডল জানান, ১৯৮৭-১৯৮৮ শিক্ষাবর্ষে প্রয়াত সাংসদ হারাধন রায়ের উদ্যোগে জমির ব্যবস্থা করে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় স্কুল ভবন তৈরি করা হয়েছিল। সেখানে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পঠনপাঠনের জন্য চারটি কক্ষ তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু স্কুলের অনুমোদন না মেলায় ভবনটিতে সাক্ষরতাকেন্দ্র ও নৈশ বিদ্যালয় চালু করা হয়েছিল। প্রায় দেড় দশক সে সব চলার পরে বন্ধ হয়ে যায়। মলয়বাবুর অভিযোগ, “রাজ্যে পালাবদলের পরে ভবনটিতে তৃণমূলের কার্যালয় চালু হয়। ভবনটি ‘দখলমুক্ত’ করে সেখানে স্কুল চালু করার জন্য শিক্ষা দফতরের কাছে আবেদন জানানো হবে। এই দাবিতে ইতিমধ্যেই সই সংগ্রহ করা হচ্ছে।’’ তবে তৃণমূল নেতা দেবনায়ারণ দাসের দাবি, ‘‘এলাকাবাসীই ওখানে তৃণমূলের পতাকা টাঙিয়েছেন। ওটা তৃণমূলের কার্যালয়ই নয়।’’
পশ্চিম বর্ধমানের জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) অজয় পাল বলেন, ‘‘বিষয়টি লিখিত ভাবে জানালে জেলাশাসকের মাধ্যমে সেই আবেদন শিক্ষা দফতরে পাঠাব।’’