দুর্গাপুর প্রজেক্টস লিমিটেড (ডিপিএল)। ফাইল চিত্র
‘লকডাউন’-পর্বে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ‘রেকর্ড’ গড়েছে রাজ্য সরকারের বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী সংস্থা ‘দুর্গাপুর প্রজেক্টস লিমিটেড’ (ডিপিএল)। গত বৃহস্পতিবার ডিপিএল-এ সর্বোচ্চ ৫০৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে বলে দাবি কর্তৃপক্ষের। ডিপিএলের জনসংযোগ আধিকারিক স্বাগতা মিত্র বলেন, ‘‘দু’টি ইউনিট মিলিয়ে বৃহস্পতিবার সর্বোচ্চ ৫০৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে। উৎপাদনের নিরিখে এটি রেকর্ড।’’
দীর্ঘদিন টানা লোকসানে চলার পরে ২০১৭-র শেষ দিকে রাজ্য সরকার ডিপিএল-এর বিদ্যুৎ উৎপাদন, বণ্টন ও সংবহন বিভাগ অন্য বিদ্যুৎ সংস্থার সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। ২০১৯-এর ১ জানুয়ারি থেকে ডিপিএল-এর শুধু নামটাই রয়ে গিয়েছে। মালিকানা চলে গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের হাতে। ১৯৬০-এ তৈরি হওয়া ডিপিএল-এর আটটি ইউনিটের মধ্যে সপ্তম ও অষ্টম ইউনিটটি চালু রয়েছে। ৩০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন সপ্তম ইউনিট বাণিজ্যিক ভাবে উৎপাদন শুরু করে ২০০৮-এর ৩০ এপ্রিল। ২০১৪-র ১ অক্টোবর ২৫০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার অষ্টম ইউনিটটি চালু হয়।
ডিপিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, বিদ্যুৎ উৎপাদনের ওঠা-নামা এক সময়ে খুব বেশি ছিল। এমনকি, ২০১৩-র ডিসেম্বরের মাঝামাঝি ডিপিএলের উৎপাদন ক্ষমতা শূন্যে নেমে আসে। সেই সময়ে পঞ্চম, ষষ্ঠ ও সপ্তম ইউনিট চালু থাকলেও মূল ভরসা ছিল সপ্তম ইউনিটটি। পরের দিকে পঞ্চম ও ষষ্ঠ ইউনিট বাতিল ঘোষণা করে দেওয়া হয়। এর পরে তৈরি হয় অষ্টম ইউনিটটি। তার পর থেকে ধারাবাহিক বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয় ডিপিএল-এ। তবে গড়ে দিনে চারশো থেকে সাড়ে চারশো মেগাওয়াটের বেশি উৎপাদন হয়নি। বৃহস্পতিবার অবশ্য তা পাঁচশো মেগাওয়াট ছাড়িয়ে যায়।
লকডাউনের সময়ে এমনিতেই সব কর্মী আগের মতো হাজিরা দিতে পারছেন না। তা সত্ত্বেও কী ভাবে এই সাফল্য? কর্মীরা জানান, বিদ্যুৎ উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত অধিকাংশ কর্মীকে রাজ্যের অন্য বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিতে স্থানান্তরিত করার কথা রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে দুর্গাপুরে থেকে কাজ করার পরে অন্যত্র পাঠানো হলে সেখানে পরিবার নিয়ে থাকার ব্যবস্থা করা, ছেলে-মেয়ের পড়াশোনা-সহ নানা সমস্যায় পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতেও কর্মীরা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা না ভেবে নিজেদের দক্ষতা অনুযায়ী কাজ করে চলেছেন। তাতেই এই সাফল্য বলে দাবি। ডিপিএল-এর আইএনটিইউসি নেতা উমাপদ দাস বলেন, ‘‘কর্মীদের অন্যত্র স্থানান্তর করার দরকার নেই। এই সাফল্যই তার প্রমাণ।’’
জনসংযোগ আধিকারিক স্বাগতাদেবীও বলেন, ‘‘লকডাউন-পর্বে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে কর্মীরা যে ভাবে কাজ করে চলেছেন, তা প্রশংসনীয়।’’