প্রতীকী ছবি।
করোনার টিকার জোগান স্বাভাবিক হতেই সিরিঞ্জ না মেলার অভিযোগ উঠছিল। টিকাকরণ যাতে ব্যহত না হয়, সেই কারণে জেলা থেকে প্রতিটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রকে নির্দেশ দেওয়া হয়, দৈনন্দিন কাজে ব্যবহৃত সিরিঞ্জ দিয়ে টিকাকরণ করতে হবে। এর ফলে করোনার টিকার জন্য ব্যবহৃত সিরিঞ্জের সঙ্গে দৈনন্দিন কাজে ব্যবহৃত সিরিঞ্জেরও ঘাটতি দেখা দিচ্ছে বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি সামলাতে সিরিঞ্জ কেনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সমস্যার কথা মানছে রাজ্য পরিবার কল্যাণ দফতরও। সেখানকার এক কর্তা বলেন, ‘‘ডোজ়ের সম পরিমাণ সিরিঞ্জ পাঠানো শুরু হয়েছে। আশা করি, ঘাটতি মিটে যাবে।’’ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) প্রণব রায়ও বলেন, ‘‘প্রায় এক লক্ষ সিরিঞ্জ কিনে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।’’
জেলা স্বাস্থ্য দফতর ও প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, টিকাকরণের বিশেষ শিবির করতে গিয়েই সিরিঞ্জের অভাব সামনে আসে। নিয়ম অনুযায়ী, টিকার সঙ্গেই সম পরিমাণ সিরিঞ্জ পাঠানো হয়। কিন্তু দেখা যায়, ডোজ় অনুযায়ী সিরিঞ্জের পরিমাণ অর্ধেক। তবে শিবিরের দিন বদল না করার সিদ্ধান্ত হয়। বিভিন্ন হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে মজুত থাকা দৈনন্দিন কাজে ব্যবহৃত সিরিঞ্জ দিয়েই টিকা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। বর্তমানে সমস্ত সিরিঞ্জেরই আকাল দেখা দিয়েছে, দাবি স্বাস্থ্য দফতরের। জেলার অন্যতম সহকারী মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (কালনা) চিত্তরঞ্জন দাস বলেন, ‘‘এখনও সিরিঞ্জের ঘাটতি রয়েছে।’’ কাটোয়া পুরসভার নোডাল অফিসার (স্বাস্থ্য) অরিন্দম বিশ্বাসেরও দাবি, ‘‘স্থানীয় ভাবে সিরিঞ্জ কিনে ঘাটতি মেটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।’’ সমস্যার কথা জানিয়ে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, ৩৪,৭০৩টি করোনা টিকার ডোজ় মজুত রয়েছে। গত তিন দিন ধরে টিকার ডোজ়ের সঙ্গেই সম পরিমাণ সিরিঞ্জ পাঠানো হচ্ছে। কিন্তু চার দিনের বিশেষ শিবিরে যে দু’লক্ষ টিকা দেওয়া হয়েছিল, সেই ঘাটতি মেটেনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক বিএমওএইচের-র দাবি, ‘‘সেই সময় জেলা থেকে দৈনন্দিন সিরিঞ্জ ব্যবহারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এখন করোনার টিকা দেওয়ার ও দৈনন্দিন সিরিঞ্জের ঘাটতি দেখা দিচ্ছে। বিশেষ করে শিশুদের প্রতিষেধক দেওয়ার সিরিঞ্জে ঘাটতি দেখা দিচ্ছে।’’ এতে শিশুদের ডিপথেরিয়া, বিসিজি, হাম, হেপাটাইটিসের মতো বাঁধা প্রতিষেধক দেওয়ার ক্ষেত্রেও অসুবিধা হতে পারে বলে মনে করছেন তাঁরা। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, শিশুদের প্রতিষেধক দেওয়ার জন্য জেলায় প্রতি মাসে গড়ে এক লক্ষ ২৫ হাজার সিরিঞ্জের প্রয়োজন। সেখান সব রকম মিলিয়ে এক লক্ষের মতো সিরিঞ্জ রয়েছে।
ঘাটতি মিটবে কী ভাবে? জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ (জনস্বাস্থ্য) বাগবুল ইসলাম বলেন, ‘‘দরপত্র ডাকা হয়েছিল। ৭৬ হাজারের মতো সিরিঞ্জ কেনা হয়েছে।’’ বর্ধমান পুরপ্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান প্রণব চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সিরিঞ্জের ঘাটতি রয়েছে। বিভিন্ন সংস্থার কাছে সিরিঞ্জ চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। সাড়াও দিচ্ছেন অনেকে।’’