এই নলকূপের জলে আয়রনের পরিমাণ বেশি, অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র
পানীয় জলের সঙ্কট দেখা দিয়েছে এলাকায়। অথচ, পুরসভা কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এমনই অভিযোগ দুর্গাপুরের ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের কালীবীরতলার বাসিন্দাদের। তাঁরা জানান, রাস্তার ধারের একটি কল এক মাত্র ভরসা। বিষয়টি নিয়ে বেধেছে রাজনৈতিক তরজাও। বিজেপির অভিযোগ, এই এলাকায় তাদের ‘শক্তি’ বেশি, তাই তৃণমূল নেতৃত্ব জানিয়েছেন, এখানে জলের ব্যবস্থা করা হবে না। তৃণমূল অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথমে এই এলাকায় একটি-দু’টি করে বাড়ি তৈরি হতে থাকে। ধীরে-ধীরে বাড়তে থাকে ঘর-বাড়ির সংখ্যা। বর্তমানে প্রায় হাজার দু’য়েক মানুষের বসবাস সেখানে। রাস্তা হয়েছে। কিন্তু নিকাশি ব্যবস্থা বেহাল বলে অভিযোগ। তবে বাসিন্দাদের সব চেয়ে বড় অভিযোগ, পানীয় জল নিয়ে। বাসিন্দারা জানান, কাছেই দামোদর নদ।দামোদর থেকে জল নিয়ে তা পরিশ্রুত করে পুরো শহরে সরবরাহ করা হয়। কিন্তু তাঁদের এলাকায় পানীয় জলের সঙ্কট রয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, বেশ কয়েক বার দুর্গাপুর পুরসভার কাছে দরবার করেছেন তাঁরা। কিন্তু কাজ হয়নি। ভোটের আগে প্রতিশ্রুতি মেলে। কিন্তু ভোট পেরোলে কেউ খোঁজ নেন না বলেঅভিযোগ তাঁদের।
স্থানীয়েরা জানান, রাস্তার একটি মাত্র কল থেকে সবাই জল নেন। দিনে তিন বার ঘণ্টাখানেকের জন্য জল আসে। জল নিতে গিয়ে কার্যাত কাড়াকাড়ি শুরু হয়। অশান্তি লেগেই থাকে। পুরসভার তরফে এক বার সেখানে গভীর নলকূপ বসানোর তোড়জোড় হয়েছিল। কিন্তু ভূগর্ভস্থ জলে ‘আয়রন’ মাত্রাতিরিক্ত থাকে দাবি করে বাসিন্দারা নলকূপ বসাতে দেননি। তাঁরা পাইপলাইনের মাধ্যমে জলের সংযোগের দাবি করেন। কিন্তু তা আর শেষ পর্যন্ত হয়নি বলে দাবি এলাকাবাসীর। অন্য পাড়া থেকে জল আনতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হয় বলে দাবি করেনস্থানীয় মহিলারা।
এ দিকে, গত বিধানসভা নির্বাচনে এই এলাকায় তৃণমূলের তুলনায় বেশি ভোট পায় বিজেপি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক বাসিন্দার অভিযোগ, “বিজেপি বেশি ভোট পেয়েছে বলে, এখানে জলের ব্যবস্থা আর করা হবে না, এমনটাই জানিয়েছেন তৃণমূলের নেতারা।” তাঁদের দাবি, এলাকাবাসী নিজেরা টাকা দিয়ে একটি নলকূপ বসান। কিন্তু জলে অতিরিক্ত আয়রনের কারণে সেই জল তাঁরা পান করতে পারেন না। বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি তথা প্রাক্তন কাউন্সিলর চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “তৃণমূলের পুরবোর্ড শহরে জল সরবরাহের কোনও ‘মাস্টার প্ল্যান’ তৈরি করেনি। তাই বহু ওয়ার্ডেই পানীয় জলের সমস্যা রয়েছে। প্রতিহিংসার রাজনীতি করতে গিয়ে শহরের মানুষের ক্ষতি করছে তৃণমূল।”
তবে যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল। দলের নেতা তথা পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ভিত্তিহীন অভিযোগ। তৃণমূলের সরকার উন্নয়নের ক্ষেত্রে রাজনীতি করে না। এমন সঙ্কীর্ণ মানসিকতার অধিকারী বিরোধীরা।” বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।