— নিজস্ব চিত্র।
বৃহস্পতিবারই শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ‘অনুরোধ’ করেন, যাঁদের অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য হিসাবে নিয়োগ করেছেন রাজ্যপাল, তাঁরা যেন সেই পদ প্রত্যাখ্যান করেন। তার পরেও, শুক্রবার আসানসোলের কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য হিসাবে কাজে যোগ দিলেন দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। দায়িত্ব নেওয়ার পরে তিনি অবশ্য জানিয়েছেন, সরকারের তরফে এই নিয়োগ প্রত্যাখ্যানের জন্য লিখিত নির্দেশ এলে, তৎক্ষণাৎ তিনি তা বিবেচনা করবেন। পাশাপাশি, রাজ্যপাল-শিক্ষামন্ত্রীর মধ্যে সংঘাতের আবহে তাঁদের কার্যত ‘স্নায়ুর চাপ’ বাড়ে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
ঘটনাচক্রে, দেবাশিসকে রেজিস্ট্রার চন্দন কোনার এবং একাধিক বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা স্বাগত জানাতে এলেও সেই অভ্যর্থনায় দেখা যায়নি তৃণমূল প্রভাবিত শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুপাকে। ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, শিক্ষামন্ত্রীর ‘অনুরোধের’ পরে কার্যত সেই পথেই হাঁটল শাসক দলের প্রভাবিত সংগঠন। এই ধারণাকেই ‘মান্যতা’ দিচ্ছেন সংগঠনের কলেজ ইউনিটের সভাপতি সজল ভট্টচার্য। তিনি বলছেন, “আমরা আগেই এক জন নতুন উপাচার্য চেয়েছিলাম। কিন্তু রাজ্যের উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী উপাচার্য নিয়োগের প্রক্রিয়ায় সন্তুষ্ট নন। তাই আনুষ্ঠানিক ভাবে আমরা উপাচার্যকে অভিনন্দন জানাতে যাইনি।” তবে তাঁর সংযোজন: “উনি আমার প্রাতিষ্ঠানিক প্রধান, তাই সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছি।”
তবে রাজ্যপাল এবং শিক্ষামন্ত্রীর পরস্পর-বিরোধী মন্তব্যে নবনিযুক্ত উপাচার্যের কাজে কোনও প্রভাব পড়বে কি না, তা নিয়ে গুঞ্জন রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে। উপাচার্য দেবাশিস বলছেন, “এটি অত্যন্ত অনভিপ্রেত। এতে আমাদের স্নায়ুর চাপ বাড়ে। আমরা না সরকার, না আচার্যের বিরোধিতা করব। রাজ্যপাল ও সরকারের মধ্যে যদি কোনও সংঘাত হয়, তা কী ভাবে মেটাতে হবে, সেটা তাঁরা ভালই জানেন।” তাঁর সংযোজন: “এই সংঘাতে আমরা যাতে বলি না হই!” তবে তাঁর আশা, এই ভুল বোঝাবুঝি মিটে যাবে। এ-ও আশা, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য এবং আচার্য সিভি আনন্দ বোসের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে তাঁদের কাজ করার মতো সুস্থ পরিবেশের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে।
এ দিকে, আড়াই মাস ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য সাধন চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগে আন্দোলন চালাচ্ছেন শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী ও আধিকারিকদের বড় অংশই। যদিও সাধন প্রথম থেকেই অভিযোগ মানেননি। এ বিষয়ে এ দিন দেবাশিস বলেন, “সবেমাত্র কাজে যোগ দিয়েছি। আগে কোন ঘটনাকে কেন্দ্র করে কী পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, তা নিয়ে খোঁজখবর করব। অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য হিসাবে আমার এক্তিয়ারের মধ্যে যতটা যা করার থাকবে, তা করব।”