অভিযুক্তদের ধরার দাবিতে সীতারামপুরে অবরোধ বাসিন্দাদের। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র
এক যুবকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের পরে উত্তপ্ত হয়ে উঠল সীতারামপুরের গাঁধীনগর এলাকা। স্ত্রীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে গন্ডগোলেই তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন বলে অভিযোগ ওই যুবকের পরিজন ও প্রতিবেশীদের অভিযোগ। বুধবার রাতে এই ঘটনার পর থেকে দফায়-দফায় বিক্ষোভ হয় এলাকায়। ভাঙচুর করা হয় মৃতের স্ত্রীর ‘প্রেমিকের’ দোকানে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বুধবার রাতে বাড়িতে নিজের ঘর থেকেই দীপক দে (৩৫) নামে ওই যুবকের দেহ মেলে। রাতেই দেহ উদ্ধার করে আসানসোল জেলা হাসপাতালে পাঠায় নিয়ামতপুর ফাঁড়়ির পুলিশ। এডিসিপি (পশ্চিম) অনমিত্র দাস জানান, আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে মৃতের স্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যে যুবকের সঙ্গে তাঁর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে বলে অভিযোগ, তাঁর খোঁজ চলছে।
দীপকের মা পারুল দে অভিযোগ করেন, প্রতিবেশী এক যুবকের সঙ্গে মেলামেশাকে কেন্দ্র করে পুত্রবধূর সঙ্গে বেশ কিছু দিন ধরেই ঝামেলা চলছিল ছেলের। বাড়ির লোকজন দু’জনকে বুঝিয়ে-সুজিয়ে সমাধানের চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু, বুধবার বিকেল থেকে ঝামেলা বড় আকার নেয়। পারুলদেবীর অভিযোগ, রাত ১০টা নাগাদ খাওয়াদাওয়ার পরে দীপক ঘরে ঘুমোতে চলে যান। দুই নাতনিকে নিয়ে অন্য ঘরে শুয়েছিলেন তিনি। রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ পুত্রবধূ ঘরে গিয়ে ছেলেকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে চিৎকার জুড়ে দেন। প্রতিবেশীরা জড়ো হন। খবর পেয়ে পুলিশও পৌঁছয়।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই সীতারামপুরের গাঁধীনগর এলাকা এই ঘটনা নিয়ে তেতে ওঠে। দীপকের স্ত্রী এবং তাঁর ‘প্রেমিক’কে গ্রেফতারের দাবি জানাতে থাকেন বাসিন্দারা। মুরগি ব্যবসায়ী ওই যুবকের দোকানেও ভাঙচুর চালান স্থানীয় বাসিন্দারা। সীতারামপুর স্টেশন রোড অবরোধ করা হয়। নিয়ামতপুর ফাঁড়ির পুলিশ ও স্থানীয় কাউন্সিলর অমিত তুলসিয়ান ঘটনাস্থলে গিয়ে বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। মৃতের স্ত্রীকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। ময়না-তদন্তের পরে জেলা হাসপাতাল থেকে দেহ আনার পরে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে নিয়ামতপুর ফাঁড়িতে ফের একপ্রস্ত বিক্ষোভ দেখান এলাকার বাসিন্দারা।
বিকেলে পুলিশ মৃতের স্ত্রীকে গ্রেফতার করে। তাঁর বাপের বাড়ির লোকজনের সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি।