প্রতীকী ছবি।
পরিযায়ী শ্রমিকদের বরাদ্দ ‘ফুড কুপন’ বিলি নিয়ে গোলমাল চলছেই পূর্ব বর্ধমানের মেমারিতে। মঙ্গলবার রাতে তৃণমূল নেতার বাড়ি ঘেরাও, রাস্তা অবরোধ করেন পরিযায়ী শ্রমিকদের একাংশ। মেমারি ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভানেত্রী মামনি মুর্মু ব্লক থেকে শ্রমিকদের জন্য পাঠানো ‘ফুড কুপন’ আটকে রাখার অভিযোগ করেন এক রেশন ডিলারের বিরুদ্ধে। পুলিশ রাতেই ঝিকরা গ্রামের ওই ডিলারকে গ্রেফতার করেছে। খাদ্য দফতরের উপ-অধিকর্তা (পূর্ব বর্ধমান) আবির বালি বলেন, ‘‘ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’
‘ওয়েস্ট বেঙ্গল এমআর ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর জেলা সম্পাদক পরেশনাথ হাজরার দাবি, ‘‘ওই রেশন ডিলার প্রশাসনের নির্দেশ মানেননি। অথচ, রাজনৈতিক নেতাদের কথা শুনে ‘ফুড কুপন’ বিলি করেননি। প্রশাসন ঠিক ব্যবস্থাই নিয়েছে। আমরা সাংগঠনিক ভাবে ওই ডিলারের পাশে নেই।’’ পরিযায়ী শ্রমিকদের একাংশের দাবি, গ্রামের ওই রেশন ডিলার বিজয়কুমার ঘোষ (নম্বর-৪৪) তাঁদের জানিয়েছিলেন, মেমারি ২ ব্লক সভাপতি, জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ মহম্মদ ইসমাইল ‘ফুড কুপন’ বিলি করতে নিষেধ করেছিলেন। এর পরেই শ্রমিকেরা প্রথমে ঝিকরা গ্রামের সামনের রাস্তা অবরোধ করেন। তার পরে ওই নেতার বাড়ি ঘেরাও করেন। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনে। বুধবারও গ্রামে পুলিশ পিকেট ছিল।
বিক্ষোভকারী পরিযায়ী শ্রমিকদের দাবি, কেন চাল পাননি, তা জানতে ব্লক অফিসে গেলে পঞ্চায়েতে যোগাযোগ করতে বলা হয়। পঞ্চায়েত থেকে ডিলারের কাছে পাঠানো হয়। তাঁদের অভিযোগ, সেখানে গেলে দাবি করা হয়, ইসমাইল কুপন দিতে বারণ করেছেন। ইসমাইলের পাল্টা অভিযোগ, ‘‘ওই ডিলার নিজের কাছে ‘ফুড কুপন’ আটকে রেখে পরিযায়ী শ্রমিকদের ভুল তথ্য দিয়েছেন। নিভৃতবাসে থাকার সময়ে শ্রমিকদের প্রতিদিন খাবার দিয়েছি আমরা। তাঁদের চাল আটকে রাখার কথা কেন বলব? ঘেরাও নয়, পরিযায়ী শ্রমিকেরা আমার কাছে প্রকৃত তথ্য জানতে এসেছিলেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলেছি।’’
পুলিশ জানায়, রাতেই রেশন ডিলারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। পরে পঞ্চায়েত সমিতির সভানেত্রী মামনি মুর্মু অভিযোগ করলে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। মামনিদেবীর অভিযোগ, ‘‘উনি শ’দেড়েক ফুড কুপন আটকে রেখেছেন, শ্রমিকদের দেননি।’’ অভিযোগ, এই ব্লকে রেশন ডিলারের কাছ থেকে শ্রমিকদের ‘কুপন’ দেওয়া হয় অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের। ঝিকরা গ্রামে তালিকা মিলিয়ে শ্রমিকদের ‘কুপন’ বিলির পরেও থেকে যায়। সেই ‘কুপন’ রেশন ডিলারকে তাঁরা ফেরত দেন। রেশন ডিলার সে সম্বন্ধে খাদ্য দফতর বা ব্লক অফিসকে জানাননি। বিডিও (মেমারি ২) অনিন্দিতা রায়চৌধুরীর বক্তব্য, ‘‘ওই ডিলারের বিরুদ্ধে আগেও খাদ্য দফতরে অভিযোগ করা হয়েছিল। রেশন ডিলারের ভুলে যাতে কোনও পরিযায়ী শ্রমিক ফুড কুপন থেকে বাদ না পড়েন, তা দেখা হচ্ছে।’’