বারাবনির আসনবনি গ্রামে তদন্তে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র
এক যুবকের দেহ উদ্ধার হয়েছে বারাবনির আসনবনি গ্রামে। মঙ্গলবার সকালের ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, রাম কোঁড়া (৩৫) নামে ওই যুবকের দেহের নানা অংশে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পরিবার খুনের মামলা দায়ের করেছে।
এ দিন সকাল সাড়ে ৭টায় বারাবনির নুনি পঞ্চায়েতের আসনবনি গ্রামে জঙ্গল ঘেরা জায়গায় দেহটি পড়ে থাকতে দেখেন বাসিন্দারা। পরিচিত হওয়ায় তাঁরাই রামের বাড়িতে খবর দেন। পরিবারের সদস্যেরা দেহ শনাক্ত করার পরে থানায় খবর পাঠানো হয়। আসানসোল উত্তর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেহটি উদ্ধার করে। এর পরেই গ্রামে চাঞ্চল্য ছড়ায়। নুনি পঞ্চায়েতের প্রাক্তন উপপ্রধান তথা এলাকায় সিপিএম নেতা বলে পরিচিত রামের দাদা বাসুদেব পুলিশকে জানিয়েছেন, সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ভাই বাড়ি থেকে বেরোন। রাতে বাড়ি ফেরেননি। পরিবারের সদস্যেরা রাতে খোঁজাখুঁজিও করেছিলেন।
তার পরে এ দিন বাড়ি থেকে প্রায় দু’শো মিটার দূরে একটি জঙ্গল ঘেরা জায়গায় দেহটি পড়ে থাকতে দেখা যায়। বাসুদেবের অভিযোগ, “গলায় কাটা দাগ ও শরীরের নানা অংশে আঘাত দেখে মনে হচ্ছে ভাইকে খুন করা হয়েছে। দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার করার আবেদন জানাচ্ছি।” একই দাবি করেছেন গ্রামবাসীরও। তাঁদের দাবি, এলাকায় রামের কোনও শত্রু রয়েছে, এমন কথা তাঁরা জানতেন না।
ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (সেন্ট্রাল) কুলদীপ সেনাওয়ানে-সহ অন্য পুলিশকর্তারা। ডিসি বলেন, “দেহে আঘাতের চিহ্ন দেখে প্রাথমিক ভাবে খুন বলে মনে হচ্ছে। সব দিক খোলা রেখেই পুলিশ তদন্ত করছে। দুষ্কৃতীরা দ্রুত ধরা পড়বে।” ঘটনাস্থলে পুলিশ-কুকুর দিয়েও তল্লাশি চালানো হয়।
দেহ উদ্ধারের পরে এলাকায় পৌঁছন জেলার সিপিএম নেতৃত্ব। দলের রাজ্য কমিটির সদস্য পার্থ মুখোপাধ্যায় জানান, পরিবারটি সিপিএম-মনস্ক। দলের মিছিল, সভায় তাঁরা নিয়মিত যোগ দিতেন। যে ব্যক্তি খুন হয়েছেন, তিনিও প্রতিটি ভোটে সিপিএমের পোলিং এজেন্ট হন। পার্থের দাবি, “খুনের নেপথ্যে রাজনৈতিক কারণ উড়িয়ে দেওয়া যায় না। বড় কথা হল, পঞ্চায়েত ভোটের আগে এলাকায় এক জন যুবক খুন হয়ে গেলেন। তা সন্ত্রাসেরই পরিবেশ তৈরি করছে।” স্থানীয় বিজেপি নেতা অরিজিৎ রায় বলেন, “খুনের ঘটনা খুব আতঙ্কের বিষয়। বিশেষ করে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে। যদি অভিযুক্তেরা ধরা না পড়ে, আমরাও আন্দোলনে নামব।” তাঁর আবার দাবি, রামের এক ভাই এলাকায় বিজেপির সক্রিয় কর্মী। এ দিকে, বারাবনির বিধায়ক তৃণমূল নেতা বিধান উপাধ্যায় জানান, যে কোনও মৃত্যুই মর্মান্তিক। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।