এ ধরনের বাড়িগুলি নিয়েই চিন্তা রানিগঞ্জে। নিজস্ব চিত্র
সম্প্রতি জীর্ণ বাড়ির দেওয়াল ধসে অণ্ডালে মৃত্যু হয়েছে এক জনের। এই ঘটনার পরে রানিগঞ্জের জীর্ণ বাড়িগুলি নিয়ে কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শহরবাসীর একাংশ। আসানসোল পুরসভার হিসেবে, রানিগঞ্জে বেশ কয়েকটি জীর্ণ বাড়ি রয়েছে। সেগুলি ৬০ থেকে দেড়শো বছরের পুরনো। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জীর্ণ বাড়িগুলির বেশির ভাগ ঘরই খালি পড়ে। তিলক রোডে একটি বিরাট ভবনে রয়েছে মাত্র দু’টি পরিবার। কয়েকটি ঘরে রয়েছে গুদাম। এক শরিক রাজেশ গনেরিওয়াল জানান, ভবনটি তাঁদের পরিবারের দশ জন শরিকের। তাঁদের অনেকেই কলকাতা, মুম্বই-সহ দেশের নানা প্রান্তে থাকেন। তাঁরা নিয়মিত শহরে আসেনও না। এই পরিস্থিতিতে সব শরিক এক জায়গায় না হওয়ায়, পুরসভা ব্যবস্থা নেওয়ার বিজ্ঞপ্তি দিলেও সংস্কার কাজ করা যাচ্ছে না। মহাত্মা গাঁধী রোডে একটি জীর্ণ বড় বাড়ির শরিক আট জন। সাত জনই শহরে থাকেন না। এক শরিক জানান, আগে বাড়িতে একাধিক ভাড়াটিয়া ছিলেন। তাঁদের মধ্যে এক জন দোকান ছাড়তে না চেয়ে আদালতে মামলা করেছেন। মামলা মেটার পরেই তাঁরা সংস্কার নিয়ে পদক্ষেপ করতে পারবেন বলে জানান ওই শরিক।
আসানসোল পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁরা প্রত্যেকটি বাড়ির মালিকদের সংস্কার করার জন্য একাধিক বার বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়েছেন। কিন্তু এঁদের মধ্যে এগারো জন মালিক বাড়ির প্রায় ভেঙে পড়া অংশ সংস্কার করেছেন। অথচ, বছর পাঁচেকের মধ্যে রানিগঞ্জেই দু’টি বাড়ির একাংশ ভেঙে পড়েছিল। তখন পুরসভা মালিকপক্ষকে নির্দেশ দিয়ে ওই দু’টি বাড়ির বিপজ্জনক অংশ ভাঙিয়েছিলেন।এ দিকে, পুরসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ার ইন্দ্রজিৎ কোনার জানান, শরিকি বিবাদ, ঘর ছাড়লে তা ফেরত পাবেন না এবং যে ভাড়ায় আগে ছিল, বাড়ি সংস্কারের পরে সে ভাড়া থাকবে কি না, ভাড়াটিয়াদের এমন জোড়া আশঙ্কা— এই তিনটি কারণে সংস্কারের কাজে সমস্যা হচ্ছে। উল্টো দিকে, দিনে-দিনে আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠছে জীর্ণ বাড়িগুলি।বিষয়টি নিয়ে পুরসভার তরফে ভারপ্রাপ্ত আইনজীবী সায়ন্তন মুখোপাধ্যায় জানান, বারবার শুনানির আয়োজন করা হচ্ছে। কিন্তু অনেক সময়েই দেখা যাচ্ছে, বেশির ভাগ শরিক আসছেন না। ফলে, সমস্যার নিষ্পত্তি হচ্ছে না। সায়ন্তনবাবু বলেন, “পুরসভার হাতে বাড়ি ভাঙার ক্ষমতা নেই। তাই, প্রতিটি বাড়ির মালিককে জানানো হয়েছে, নাগরিকেরা দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হলে সে দায় মালিকদের নিতে হবে।’’রানিগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি সন্দীপ ভালেটিয়ার দাবি, বাড়ির মালিকদের বুঝিয়ে সংস্কারের কাজ করা দরকার।