পথবাতির স্তম্ভে মরচে, অন্ধকারেই ছুটছে গাড়ি

কোথাও পথবাতির লোহার স্তম্ভে মরচে ধরেছে, কোথাও বা আলোর কোনও ব্যবস্থাই করা হয়নি। আর তার জেরে সন্ধ্যে নামলেই দুর্গাপুর শহরের ৪৩টি ওয়ার্ডের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাই কার্যত অন্ধকার হয়ে যায় বলে জানালেন বাসিন্দারা। পুরসভায় বারবার দরবার করেও সমস্যা সমাধানে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০১৫ ০১:১৪
Share:

কলাবাগান থেকে জহরলাল নেহরু রোড যাওয়ার পথে। —নিজস্ব চিত্র।

কোথাও পথবাতির লোহার স্তম্ভে মরচে ধরেছে, কোথাও বা আলোর কোনও ব্যবস্থাই করা হয়নি। আর তার জেরে সন্ধ্যে নামলেই দুর্গাপুর শহরের ৪৩টি ওয়ার্ডের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাই কার্যত অন্ধকার হয়ে যায় বলে জানালেন বাসিন্দারা। পুরসভায় বারবার দরবার করেও সমস্যা সমাধানে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ।

Advertisement

পুরসভার ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত সঞ্জীব সরণি নামে একটি রাস্তা জেসপ কারখানার পাশ দিয়ে দুর্গাপুর বাজার মোড় পর্যন্ত চলে গিয়েছে। সন্ধ্যেবেলায় ওই রাস্তাতে গিয়ে দেখা গেল কোনও আলোর ব্যবস্থা না থাকায় চারদিকে অন্ধকার। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে রাস্তার পাশে বাতিস্তম্ভের গা বেয়ে আগাছা গজিয়ে উঠেছে। অথচ ওই রাস্তার উপরেই রয়েছে একাধিক ছোটবড় কারাখানা। ওই রাস্তা দিয়ে দিনভর গাড়ির চাপও ভাল থাকে। এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, জেসপ কারখানা চালু থাকার সময়ে রাস্তার পাশে বেশকিছু পথবাতি লাগানো হলেও কারখানা বন্ধ হওয়ার পর সেগুলি আর রক্ষণাবেক্ষণ করা হয় না। বাল্বগুলিও চুরি গিয়েছে অনেকদিন। কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ওই এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগও কেটে দেওয়া হয়েছে। রাস্তায় আলো না থাকায় বিভিন্ন সময় দুর্ঘটনাও ঘটছে বলে দাবি বাসিন্দাদের। এলাকার বাসিন্দা সমীর মণ্ডল বলেন, ‘‘রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় সামনের গাড়ির আলোয় প্রায় কিছুই দেখা যায় না।’’ আরও এক বাসিন্দা জয়দীপ চক্রবর্তী জানান, বন্ধ জেসপ কারখানার চারপাশে আগাছার জঙ্গল তৈরি হয়েছে। এর জেরে গরম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে সাপের উপদ্রব। জয়দীপবাবুর আশঙ্কা, ‘‘রাস্তায় আলো না থাকায় যে কোনও সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।’’ একই অবস্থা ডিভিসি মোড় থেকে নবীনপল্লি যাওয়ার রাস্তাটিরও। ওই রাস্তাতেও বেশ কয়েকটি বাতিস্তম্ভ থাকলেও আলো জ্বলে না।

শহরের মধ্যে এমনও অনেক রাস্তা রয়েছে যেখানে আলোর কোনও ব্যবস্থাই করা হয়নি। ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের কলাবাগান বস্তির পাশ দিয়েই সিটি সেন্টার থেকে একটি রাস্তা গিয়ে চলে গিয়েছে জওহরলাল নেহরু অ্যাভিনিউয়ে। অম্বুজার পিছনে অবস্থিত ওই রাস্তাটি ধরে প্রায় সারারাতই প্রচুর গাড়ি যাতায়াত করে। রাস্তার দু’পাশেই রয়েছে ঘন জন বসতি। স্থানীয় বাসিন্দারা জানালেন, আলোর ব্যবস্থা না থাকায় রাস্তা পারাপার করতেও সমস্যা হয়। এলাকার বাসিন্দা সুনীল বাউড়ি, চন্দন বাগদীরা বলেন, ‘‘সাইকেল বা মোটরবাইক আরোহীর পক্ষে রাতে রাস্তা বোঝাও সম্ভব হয় না। এর জেরে প্রায়শই দুর্ঘটনা ঘটছে।’’ স্থানীয় বাসিন্দা স্বদেশ সাহা জানালেন, ‘‘ওই রাস্তা দিয়ে ফেরার সময় আচমকা উল্টোদিকের গাড়ির আলোয় কিছু দেখতে না পেয়ে পড়ে যায়। সামান্য চোটও পেয়েছিলাম।’’ একই সমস্যা রাতুড়িয়া-অঙ্গদপুর শিল্পতালুকের ভিতরের রাস্তায়। সেখানেও কোনও পথবাতির ব্যবস্থা করা হয়নি। অন্ধাকারের মধ্যেই কারখানার শ্রমিকদের যাতায়াত করতে হয়। এমএএমসি এলাকার বিভিন্ন রাস্তাতেও প্রায়শই পথবাতি জ্বলে না বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। এর জেরে বিপাকে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দা থেকে পথচারীরা।

Advertisement

যদিও পুরসভার বিদ্যুৎ দফতরের মেয়র পারিষদ মধুসূদন মণ্ডলের আশ্বাস, ‘‘যেখানে আলোর সমস্যা রয়েছে সেখানে দ্রুত সমস্যা মিটিয়ে দেওয়া হবে। যে সব রাস্তায় আলো নেই সেখানেও দ্রুত পথবাতির ব্যবস্থা করা হবে।’’ মধুসূদনবাবু আরও জানান, এমএএএমসি এলাকার বিভিন্ন রাস্তায় আলোর সমস্যা মেটাতে ইতিমধ্যেই একটি বৈঠকও করা হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement