ট্রেন আছে, তবুও ভরসা সেই বাস

দীর্ঘদিনের দাবিদাওয়ার পরে গত বছর ২৫ অগস্ট বলগোনা থেকে শ্রীখণ্ড পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার রেলপথে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। এরপরে চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি ব্রডগেজ ট্রেনটি বাকি সাত কিলোমিটার পথে কাটোয়া পর্যন্ত চালু হয়।

Advertisement

সুচন্দ্রা দে

কাটোয়া শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০১৮ ০১:২৯
Share:

কাটোয়া-বর্ধমান রুটে আরও বেশি সংখ্যায় ট্রেন বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন যাত্রীরা। ছবি: অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়

দীর্ঘদিনের অপেক্ষার পর কাটোয়া থেকে বর্ধমানে ব্রডগেজ লাইনে ট্রেন চালু হয়েছে। কিন্তু তার সংখ্যা দিনে একটিই। ফলে প্রতীক্ষার অবসানে প্রাপ্তি হল নামমাত্র, এমনটাই মনে করছেন কাটোয়া-বর্ধমান রুটের যাত্রীদের একটা বড় অংশ।

Advertisement

দীর্ঘদিনের দাবিদাওয়ার পরে গত বছর ২৫ অগস্ট বলগোনা থেকে শ্রীখণ্ড পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার রেলপথে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। এরপরে চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি ব্রডগেজ ট্রেনটি বাকি সাত কিলোমিটার পথে কাটোয়া পর্যন্ত চালু হয়। গত পাঁচ মাস ধরে বর্ধমান থেকে যে ট্রেনটি শ্রীখণ্ড পর্যন্ত আসছিল, সেই ট্রেনটিকেই কাটোয়া পর্যন্ত চালু করা হয়। আপাতত দিনে একটি ট্রেনই আপ-ডাউনে চলছে। রেল সূত্রে জানা যায়, বর্ধমান থেকে দুপুর দু’টোয় ছেড়ে সাড়ে তিনটের সময়ে কাটোয়া ঢোকে। ওই ট্রেনটিই বিকেল চারটে নাগাদ ছাড়ছে কাটোয়া থেকে।

কাটোয়ার যাত্রীদের ক্ষোভ, একটিমাত্র ট্রেন মিলছে, তা-ও বিকেলে। ফলে কার্যত কোনও কাজেই লাগছে না তা। কাটোয়া-হাওড়া সুবার্বান প্যাসেঞ্জার অ্যাসোসিয়েশনের কাটোয়া স্টেশন কমিটির সম্পাদক দেবাশিস বসু বলেন, ‘‘ট্রেন যেদিন চালু হল তার পরেই ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো ও সকালে ট্রেন চালুর বিষয়ে পূর্ব রেলের কাছে আর্জি জানানো হয়। কিন্তু এখনও লাভ হয়নি।’’ নিত্যযাত্রী পড়ুয়া কঙ্কন নাথ, পল্লব ঘোষালদের ক্ষোভ, ‘‘ট্রেন চালু হলেও তা বিকেলে হওয়ায় আগের মতোই বেশি ভাড়া দিয়ে বাসেই বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে হয়।’’ একই কথা বলেন ব্যবসায়ী বা অফিস যাত্রীরা। তাঁদের দবি, এই পরিস্থিতিতে ট্রেন নয়, ভরসা সেই বাসই। বর্ধমান থেকে কাটোয়া পৌঁছতে কেউ আবার বলগোনা পর্যন্ত ট্রেনে এসে ভিড়ে ঠাসা বাসে চেপে কাটোয়া ফেরেন।

Advertisement

পূর্ব রেল সূত্রে জানা যায়, ট্রেন চালুর ছ’মাস পরে ট্রেনের গতি কিছুটা বাড়ানো যায়। এ ক্ষেত্রে শ্রীখণ্ড পর্যন্ত ট্রেন চালুর সাত মাস পেরোলেও ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার গতিতেই ট্রেন চলছে বলে রেল সূত্রে জানা গিয়েছে। এর জেরে সময়ও বেশি লাগছে। যাত্রীদের একাংশের অভিযোগ, পূর্ব রেলের নিজস্ব অ্যাপে ‘ন্যাশনাল ট্রেন এনকোয়ারি সিস্টেম’ বর্ধমান-কাটোয়া শাখার ট্রেনের সময়সূচি, বর্তমান অবস্থা বা ট্রেন কতক্ষণ দেরিতে চলছে এ সব তথ্যগুলি দেখাচ্ছে না। নিত্যযাত্রী আশিস রায়ের অভিযোগ, ‘‘ওই অ্যাপে এই রুটের কোনও ট্রেনই নেই দেখায়।’’ তাঁর মতো অনেক যাত্রীরই আক্ষেপ, এই রুটে ‘এলইডি আলো’, ‘প্যাসেঞ্জার ইনফরমেশন সিস্টেম’, ‘জিপিএস’, মহিলা কামরায় সিসিটিভি, ‘স্টেনলেস স্টিলে’র অত্যাধুনিক বগির ট্রেন চালু হলেও তাতে সুবিধা কিছু হচ্ছে না। তাঁরা ভোরে ট্রেন চলাচলের দাবি জানিয়েছেন। দাবি উঠেছে ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানোরও। রেলের অবশ্য দাবি, ১১৬৮ যাত্রী বসার উপযুক্ত এই অত্যাধুনিক রেকের সংখ্যা কম ও কর্মীর অভাবেই ট্রেন বাড়ানো যাচ্ছে না। যাত্রীদের দাবি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আনারও আশ্বাস দিয়েছেন কাটোয়ার স্টেশন ম্যানেজার দিলীপ মণ্ডল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement