আনাজে ক্ষতি, আশঙ্কা জোগানে

পটল, উচ্ছে, ফুলকপি, বেগুন, ভেন্ডি, বিট, গাজর, ক্যাপসিকাম, কাঁচালঙ্কার চাষ করেন এই দুই ব্লকের কয়েকহাজার চাষি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কালনা শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০২০ ০৪:০৫
Share:

নুইয়ে পড়েছে পেঁপে গাছ, পূর্বস্থলীতে। নিজস্ব চিত্র

ঘূর্ণিঝড় আমপানের দাপটে ছারখার পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলীর দুই ব্লক। দু’ব্লকেই মাটিতে ভেঙে পড়েছে অজস্র আনাজের মাচা। জমে রয়েছে জল। বিভিন্ন পাইকারি বাজারগুলিতে আনাজের জোগানও কমতে শুরু করেছে, দাবি ব্যবসায়ীদের। চাষিদেরও দাবি, সপ্তাহখানেকের মধ্যে আনাজের অভাব দেখা দেবে।

Advertisement

পটল, উচ্ছে, ফুলকপি, বেগুন, ভেন্ডি, বিট, গাজর, ক্যাপসিকাম, কাঁচালঙ্কার চাষ করেন এই দুই ব্লকের কয়েকহাজার চাষি। কালেখাঁতলা, পারুলিয়া, সমুদ্রগড়, নিমতলা এলাকার পাইকারি বাজার থেকে প্রতিদিন একশোর বেশি ট্রাক আনাজ যায় ভিন্ রাজ্য এবং এ রাজ্যের বিভিন্ন বাজারে। ফলে, এই দুই এলাকায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে তার প্রভাব পড়ে রাজ্য জুড়েই।

শুক্রবার ডাঙাপাড়া, শ্রীরামপুর, বিদ্যানগর, পাটুলি, কালেখাঁতলা ১, কালেখাঁতলা ২, মেড়তলার মতো এলাকায় দেখা যায় বাঁশের তৈরি আনাজের মাচা ঝড়ে ভেঙে পড়েছে মাটিতে। বহু জমিতে জমে রয়েছে জল। লুটিয়ে পড়েছে ছোট গাছগুলিও। চাষিদের দাবি, মেঘলা আবহাওয়া কেটে রোদ উঠলেই শুরু হবে ছত্রাকজনিত গোড়াপচা রোগ। ফলে, এক ধাক্কায় কমে যাবে আনাজের জোগান।

Advertisement

আনাজ চাষি গোপাল ক্ষেত্রপাল বলেন, ‘‘আমার মতো চাষিরা জমির একটা ফসল তোলার সঙ্গে সঙ্গেই অন্য জমিতে চারা তৈরি করা শুরু করে দিই। আমপান পুরো আনাজ চক্রটা শেষ করে দিয়েছে। নতুন করে বীজ ফেলে চারা তৈরি করে ফসল পেতে অনেক সময় লেগে যাবে।’’ পূর্বস্থলী ২ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি তপন চট্টোপাধ্যায়েরও দাবি, ‘‘আনাজ চাষিদের দুর্দশা চোখে দেখা যাচ্ছে না। হাজার হাজার টাকা খরচ করে তৈরি করা খেত সব নষ্ট হয়ে গিয়েছে। কৃষি দফতরকে সমস্ত জানানো হয়েছে।’’

এ দিন কালনার পাইকারি বাজারে আনাজের দাম চড়ার আভাস পাওয়া যায়। বুধবার কেজি প্রতি পটলের পাইকারি দর ছিল ১০ টাকা। এ দিন তা বিকিয়েছে ২০ টাকায়। খুচরো বাজারে পটলের দাম ছিল ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজি। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে অন্য আনাজের দামও।

কৃষি-কর্তাদের পরামর্শ, জমিতে জল জমে থাকলে দ্রুত তা নালা কেটে বার করে দিতে হবে। ঝড়ের দাপটে ডালপালা ভেঙে গেলে জমি থেকে তা পরিষ্কার করতে হবে। ছড়াতে হবে ছত্রাকনাশক। এর সঙ্গেই দ্রুত কিছু নগদ অর্থ পেতে গেলে চাষিদের শাক জাতীয় ফসলের চাষ করার পরামর্শ দিয়েছেন কৃষি-কর্তারা। উঁচু জমিতে আনাজের বীজ ফেলা শুরু করার কথাও বলেছেন তাঁরা। জেলার অন্যতম সহ কৃষি অধিকর্তা পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘রোদ উঠলেই, গুমোট পরিস্থিতি তৈরি হবে। বহু আনাজের গাছ জমিতে মরে যাবে। পরিকল্পনা করে এগোতে হবে চাষিদের।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement