প্রতীকী ছবি
চূড়ান্ত রিপোর্টের পরে, ঘূর্ণিঝড় আমপানে পূর্ব বর্ধমানে চাষের ক্ষতি পরিমাণ দাঁড়াল প্রায় ৪২০ কোটি টাকার। আজ, মঙ্গলবার এই রিপোর্ট নিয়ে কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিশদে আলোচনা করার কথা জেলার কৃষি কর্তাদের। জেলার সার্কিট হাউসের ওই বৈঠকে পূর্ব বর্ধমান ছাড়াও, পশ্চিম বর্ধমান, বাঁকুড়া ও বীরভূমের কৃষি আধিকারিকেরা সামগ্রিক ক্ষতির রিপোর্ট জমা দেবেন। কৃষিমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার, কৃষি সচিব সুনীল গুপ্তও হাজির থাকবেন বলে জানা গিয়েছে। কৃষিমন্ত্রী জানান, কাল, বুধবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ওই রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে।
জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা যায়, পূর্ব বর্ধমানে আমপানের জেরে প্রাথমিক হিসেবে ৫৭০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ধরা হয়েছিল। শুক্রবার রাতে চূড়ান্ত হিসেব করে কৃষি ও উদ্যানপালন দফতর যৌথ ভাবে জানিয়েছে, সামগ্রিক ভাবে চাষে ৪১৯ কোটি ৫৫ লক্ষ ৮০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে বোরোয় ৩৩ হাজার হেক্টর জমির ধান নষ্টের আশঙ্কা করা হয়েছিল। যার ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৩৬০ কোটি টাকা। চূড়ান্ত রিপোর্টের পরে দেখা যাচ্ছে, রাজ্যের ধানের ভাণ্ডারে ৩৩,৮১২ হেক্টর জমির ধান নষ্ট হলেও, ক্ষতির পরিমাণ কমে দাঁড়িয়েছে ২৮৬ কোটি ৬৭ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকায়।
ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, তিল চাষে ১৪,১৮৮ হেক্টর জমিতে ক্ষতি হয়েছে। টাকায় তার পরিমাণ ৪২ কোটি ৯৪ লক্ষ টাকা। গ্রীষ্মকালীন আনাজ ক্ষতি হয়েছে ৩,৮৩৭ হেক্টর জমিতে। যার আর্থিক পরিমাণ ৫৪ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা। সব রকমের ফল মিলিয়ে জেলায় ৩৯৯ হেক্টর জমিতে আমপানের প্রভাব পড়েছে। টাকার অঙ্কে ক্ষতি সাড়ে চার কোটি টাকা। এ ছাড়া, বাদাম, ভুট্টা, মুগ ও কলাই ডাল, পাট চাষেও ক্ষতি হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে ক্ষতিপূরণের দাবি তুলেছেন চাষিরা। গলাসির সাইফুল শেখ, ভাতারের সুশান্ত কোঁয়ারদের মতো অনেক চাষিরই দাবি, “বোরোয় ব্যক্তিগত বিমা করানো হয়েছে। তার পরেও বিমা সংস্থাগুলি নানা রকম ফন্দিফিকির করে বিমা দিতে চায় না। আবার বিমার টাকা পেতে বছর গড়িয়ে যায়। সে জন্য আমরা তাৎক্ষণিক ক্ষতিপূরণের দাবি করছি। না হলে চাষিদের মাঠেই মারা পড়তে হবে।’’ সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য, কৃষক সভার নেতা বিনোদ ঘোষ বলেন, “ক্ষতিপূরণের দাবি আমরা প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে জানিয়েছি।’’ কৃষি-কর্তারা জানান, এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত মুখ্যমন্ত্রীই নেবেন।