মন্তেশ্বরের ভাগরায়। নিজস্ব চিত্র
টাকা নয়ছয়ের অভিযোগে ডাকঘরের কর্মীদের ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখালেন পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বরের ভাগরা উপ-ডাকঘরের গ্রাহকেরা। সোমবার প্রায় ঘণ্টা দু’য়েক বিক্ষোভ চলে। পরে, পুলিশ গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে। অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন কালনা মহকুমা ডাকঘরের ইনস্পেক্টর সুমন কোনার।
কালনা সাব ডিভিশনের অন্তর্গত সাতগেছিয়া ডাকঘরের অধীনে রয়েছে ভাগরা উপ-ডাকঘরটি। কয়েক বছর ধরে সেখানকার দায়িত্বে ছিলেন হুগলির পান্ডুয়ার বাসিন্দা হিরণ্ময় মফাদ্দার। সম্প্রতি পদোন্নতি পেয়ে অন্যত্র বদলি হয়েছেন তিনি। দিন সাতেক আগে নতুন পোস্টমাস্টার হিসাবে দায়িত্ব নিয়েছেন সৌমেন ঘোষ। ভাগরা গ্রামের বাসিন্দা তথা ওই ডাকঘরের গ্রাহক মেহেরা খাতুন, মনিরুল মল্লিক, খাদিজা খাতুন, ওয়ালিউল্লাহ শেখদের অভিযোগ, তাঁরা গত কয়েক বছর ধরে সাপ্তাহিক, মাসিক কিস্তির মাধ্যমে সেভিংস অ্যাকাউন্টে যে টাকা জমা করেছেন তা আচমকা গায়েব হয়ে গিয়েছে। অনেকের ‘ফিক্সড ডিপোজিট’ও উধাও হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ।
মেহেরা খাতুনের দাবি, তাঁর সেভিংস অ্যাকাউন্টের পাসবইয়ে ১৯,৫২৭ টাকা ছিল। দিন কয়েক আগে টাকা তুলতে গিয়ে দেখেন, বেশির ভাগ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। খাদিজা খাতুনেরও অভিযোগ, তাঁর দু’টি পাসবই থেকে ছ’হাজার ও ১৮ হাজার টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। মনিরুল মল্লিক নামে আর এক গ্রাহক বলেন, ‘‘বিড়ি বেঁধে প্রতি সপ্তাহে কিছু কিছু করে টাকা রেখে ১৮ হাজার টাকা জমিয়েছিলাম। কিন্তু ডাকঘরে পাসবই নিয়ে গিয়ে জানতে পারি, কয়েকশো টাকা পড়ে রয়েছে।’’ আবার অনেক গ্রাহক অভিযোগ করেছেন, আগের পোস্টমাস্টার হিরণ্ময় গ্রামে এসে হিসাব করার অজুহাতে তাঁদের পাসবই নিয়ে গিয়েছেন।
নতুন পোস্টমাস্টার জানান, তিনি বিষয়টি নিয়ে কিছুই বলতে পারবেন না। পরিস্থিতি জেনে কালনা সাব ডিভিশন ডাকঘরের এক আধিকারিক সুমন কোনার ঘটনাস্থলে যান। গ্রাহকরা তাঁকে ঘিরেও বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের দাবি, অভিযুক্ত পোস্টমাস্টারকে হাজির করাতে হবে এবং জমানো টাকা ফেরত পাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। পুলিশ এসেও গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলেন। ডাকঘরের আধিকারিক বিষয়টি নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলে বিক্ষোভ শান্ত হয়।
অভিযুক্ত হিরণ্ময় মফাদ্দারের ফোন টানা বন্ধ থাকায় তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। মেসেজেরও জবাব দেননি তিনি।