বাঁ দিকে, চর কোমলনগরে এই সেতু পেরিয়েই চলে যাতায়াত। ডান দিকে, ভাঙছে ভাগীরথীর পাড়। নিজস্ব চিত্র
ভাগীরথীর পাড়ের জলপ্রকল্প থেকে নদীর জলকে পরিস্রুত করে পাইপ লাইনের মাধ্যমে বিলি করা হয় দেড়শোর বেশি মৌজায়। আর্সেনিক কবলিত এলাকায় এই জলের উপর নির্ভর করেন বহু মানুষ। ভাঙনের মুখে পূর্বস্থলী ২ ব্লকের কোমলনগর গ্রামের ওই জলপ্রকল্পও। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, এখনই ব্যবস্থা না নিলে ক্ষতি বাড়বে। পাশের চর কোমলনগর এলাকাতেও ভাঙন দেখা দিয়েছে, দাবি তাঁদের। ব্লক প্রশানের দাবি, দুই জায়গায় পরিদর্শন করা হয়েছে।
পূর্বস্থলী ২ ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে রয়েছে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিক। ‘আর্সেনিকোসিস’ রোগে মারা গিয়েছেন ব্লকের বহু মানুষ। আক্রান্তও অনেকে। এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, বিশুদ্ধ পানীয় জল সরবরাহের জন্য বছর আটেক আগে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর কোমলনগর এলাকায় একটি প্রকল্প গড়ে। বর্তমানে প্রকল্পের দু’পাশে অন্তত দেড়শো ফুট এলাকা জুড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। বর্ষায় ভাগীরথীতে জল যত বাড়ছে তত ফাটল বাড়ছে, দাবি তাঁদের। দ্রুত ভাঙন রোখার ব্যবস্থা না হলে প্রকল্পটি নদীগর্ভে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও করেছেন তাঁরা।
দশমীর দিনে এলাকার ভাঙন পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন পূর্বস্থলী ২-এর বিডিও সৌমিক বাগচি, পূর্বস্থলী ২ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি তপন চট্টোপাধ্যায়, মাজিদা পঞ্চায়েতের প্রধান বাসন্তী সরকার মণ্ডল। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁদের জানান, পুজোর আগে থেকে নদীতে জল বাড়ায় চরগোয়ালপাড়ায় প্রায় ৪০০ মিটার লম্বা এলাকা জুড়ে দেখা দিয়েছে ভাঙন। নৌকায় তা দেখার পরে চর কোমলনগর গ্রামের একটি বাঁশের সেতুও পরিদর্শন করেন তাঁরা। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এলাকার কামাখ্যা খালের উপরে বাঁশের লম্বা সেতুটি রয়েছে। তবে খালে জল বাড়ায় সেতুটির বেশির ভাগ অংশই গিয়েছে ডুবে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, মেড়তলা পঞ্চায়েতের রায়পাড়া, মাঠপাড়ার ছাত্রছাত্রীরা বাঁশের সেতু পেরিয়ে চর কোমলনগর গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়তে আসে। তবে জল বাড়লে সেতুটি বিপজ্জনক চেহারা নেয়।
তপনবাবু জানান, বাঁশের সেতুটি কংক্রিটের করতে খরচ হবে ২৫ থেকে ২৭ লক্ষ টাকা। মাজিদা পঞ্চায়েত ‘এনআরইজিএস’ প্রকল্প থেকে গড়বে সেতুটি। কোমলনগর গ্রামের জলপ্রকল্প এবং চর কোমলনগর গ্রামের ভাঙন নিয়েও সেচ দফতরের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে, দাবি তাঁর। প্রশাসন সূত্রের দাবি, নদীতে জল বাড়ায় আপাতত চর কোমলনগর এলাকায় বালির বস্তা দিয়ে ভাঙন ঠেকানো হবে। পলি পড়লে পাথর ফেলে শক্ত করে পাড় বাঁধানোর কাজ হবে। পাশাপাশি জল প্রকল্পটি যাতে ক্ষতির মুখে না পড়ে সে জন্য সেচ দফতর পাথর দিয়ে সেখানেও পাড় বাঁধানোর কাজ করবে।