বিধানসভা উপনির্বাচনের প্রার্থী বাছাইয়ে তৃণমূলের ভরসা নতুন মুখ হলেও সিপিএম রাজনীতিকে পোড় খাওয়া দলের কর্মীকেই প্রার্থী করেছে। মঙ্গলবার দলের তরফে জানানো হয়, রায়গ্রামের বাসিন্দা মহম্মদ ওসমান গনি সরকার এ বার দলের প্রার্থী। সেই সঙ্গে এই আসনে তিন দশক ধরে সংখ্যালঘু প্রার্থী দাঁড় করানোর রেওয়াজও বজায় রাখল সিপিএম।
বরাবরই বামেদের শক্তিশালী ঘাঁটি হিসাবে চিহ্নিত মন্তেশ্বর। চার দশক পর এ বারই সেই গড় হাতছাড়া হয় বামেদের। এলাকার ১৩টি পঞ্চায়েতের মধ্যে বেশির ভাগ পঞ্চায়েতেই তৃণমূলের সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়। ৭০৬ ভোটে জিয়ে যান তৃণমূল প্রার্থী সজল পাঁজা। পরে অবশ্য মন্তেশ্বরের প্রায় সমস্ত পঞ্চায়েতেরই দখল নেয় তৃণমূল। তবে মাসখানেক আগে দিঘায় কাজে গিয়ে আকস্মিক ভাবে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান সজলবাবু। সোমবার নির্বাচন কমিশন ভোটের দিন (১৯ নভেম্বর) ঘোষণা করার পরেই এই আসনে সজলবাবুর বড় ছেলে ২৬ বছর বয়সী সৈকত পাঁজাকে টিকিট দেয় তৃণমূল। তৃণমূলের দাবি, কলেজ রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে ছিলেন সৈকত। বাবার ছেড়ে যাওয়া ময়দানে তিনি ভালই লড়তে পারবেন বলেও তৃণমূল নেতারা দাবি করেন। পরের দিনই সিপিএম প্রার্থী ঘোষণা করে।
গত তিনটি বিধানসভা ভোটেই এই আসনে সিপিএমের প্রার্থী ছিলেন চৌধুরী মহম্মদ হেদায়তুল্লাহ। দু’বারের বিধায়কও তিনি। ফলে এ বারও তিনি দাঁড়াতে পারেন বলে আশা ছিল দলের একাংশ কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে। কিন্তু সিপিএম সূত্রের খবর, প্রাক্তন বিধায়ক শারীরিক অসুস্থতার কারণে নিজেই দাঁড়াতে চাননি। এরপরেই দল টিকিট দেয় কুলুট প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওসমান গনি সরকারকে।
সিপিএম সূত্রেও জানা গিয়েছে, ৬৯ বছর বয়সী মহম্মদ হেদায়তুল্লাহ দীর্ঘদিন ধরেই আর্থারাইটিসে ভুগছেন। আরও নানা শারীরিক সমস্যাও রয়েছে। এ বার আগেই তিনি দলকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছিলেন এই পরিস্থিতিতে প্রার্থী হতে পারবেন না তিনি। তবে দলের অন্য দায়িত্ব পালন করবেন বলেও জানিয়ে দেন। এর ফলে নতুন প্রার্থী বেছে নেয় দল। বেছে নেওয়া হয় ওসমান গনি সরকারকে। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন বাম রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত এই নেতা মন্তেশ্বর পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য হিসাবে এক বার নির্বাচিত হয়েছিলেন। বর্তমানে তিনি দলের মেমারি ২ জোনাল কমিটির সদস্য। এলাকার এক সিপিএম নেতার কথায়, ‘‘বুক চিতিয়ে লড়াই করার ব্যাপারে আমাদের প্রার্থীর সুনাম রয়েছে। তা ছাড়া মন্তেশ্বর বিধানসভা কেন্দ্রে প্রায় ৪০ শতাংশ সংখ্যালঘু ভোটার রয়েছেন। সবদিক বিবেচনা করেই ওই শিক্ষক নেতাকে বাছা হয়েছে।’’