সিপিএমের দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর করে দখলের অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে। — নিজস্ব চিত্র।
সিপিএমের দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর করে দখলের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোলের জামুরিয়ায়। ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাতগ্রাম এলাকার নিমডাঙা প্রজেক্টের সিটু পার্টি অফিস ভাঙচুর এবং দখলের অভিযোগ উঠল শাসকদলের বিরুদ্ধে।
শুক্রবারই অন্ডালের কাজোড়ায় সিটু অনুমোদিত একটি সংগঠনের অফিসে গিয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী সংবর্ধনা জানিয়েছিলেন সিটুর জেলা সম্পাদক বংশগোপাল চৌধুরীকে। রাজনৈতিক সৌজন্যের সেই ছবি বাংলার রাজনীতিতে আপাত বিরল বার্তা পৌঁছে দিয়েছিল। তার পর ২৪ ঘণ্টাও কাটল না। সিপিএমের দু’টি কার্যালয় দখলের চেষ্টার অভিযোগ উঠল সেই তৃণমূলেরই বিরুদ্ধে। সিপিএমের দাবি, শনিবার রাতে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা দু’টি পার্টি অফিসের তালা ভেঙে ভাঙচুর চালায়। দু’টি পার্টি অফিসই দখল করতে চায় তৃণমূল। পার্টি অফিসের দেওয়ালে টিএমসি লিখে দরজায় তালা ঝুলিয়ে চলে যায়। সিপিএমের নেতা তাপস কবি বলেন, ‘‘শুক্রবার অন্ডালের কাজোড়ায় তৃণমূলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী সিটুর দলীয় কার্যালয় সিপিএমের হাতে তুলে দেন। ঠিক পরের দিনই পাশের সাতগ্রামে দু’টি দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর এবং দখল করার চেষ্টা হল।’’
জামুড়িয়ার বিধায়ক হরেরাম সিংহ অবশ্য দখলদারির অভিযোগ মানতে চাননি। তিনি জানান, সমস্ত অভিযোগই ভিত্তিহীন। তিনি বলছেন, ‘‘এই ধরনের কাজ তৃণমূল করে না। এটি কোলিয়ারির কোয়ার্টারের বিষয়। হয়তো ইসিএলের তরফ থেকে করা হয়েছে। এই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের কোনও যোগ নেই। সভাপতি নরেন্দ্রনাথ নিজে দাঁড়িয়ে থেকে সিপিএমের দলীয় কার্যালয় খুলিয়ে দিয়েছেন। অর্থাৎ তৃণমূল এই ধরনের কাজে বিশ্বাস করে না, তা এই ঘটনা থেকেই পরিষ্কার।’’
সিপিএমের পশ্চিম বর্ধমানের জেলা সম্পাদক গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘২০১১-য় রাজ্যে পালাবদলের পরে এই জেলায় সিপিএমের দলীয় এবং দলের প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠনের অন্তত দু’শোটি কার্যালয় বন্ধ হয়েছে। এর মধ্যে ৪০টিরও বেশি কার্যালয় দখল করে নিয়েছে তৃণমূল।’’ তৃণমূলের বিরুদ্ধে পার্টি অফিস দখলের অভিযোগ কংগ্রেসের। একই অভিযোগে সরব হয়েছেন বিজেপি নেতারাও। যদিও এর মধ্যেই প্রশ্ন উঠছে, বিরোধীরা সাংগঠনিক ভাবে কি এতটাই হীনবল যে, নিজেদের পার্টি অফিসও পুনরুদ্ধার করতে পারছে না?